ফেলানী হত্যা

রিটের দ্রুত নিষ্পত্তি চান কিরীটি রায়

প্রকাশ | ২০ মার্চ ২০১৯, ২২:১২

কুড়িগ্রাম প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

কুড়িগ্রামের বহুল আলোচিত ফেলানী হত্যায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টে করা রিটের শুনানি দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে। ন্যায়বিচারের স্বার্থে এবং সীমান্ত হত্যা বন্ধে দিক-নির্দেশনা দিতে এই রিটের শুনানি এবং নিস্পত্তি দ্রুত হওয়া দরকার বলে দাবি করছেন রিটের আবেদনকারী ও ভারতের কোলকাতার বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) সম্পাদক কিরীটি রায়।     

বুধবার বিকালে কুড়িগ্রাম জেলা শহরের ব্যাপারিপাড়ার উত্তরবঙ্গ জাদুঘর চত্বরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ দাবি জানান তিনি। এ সময় রিটের অপর আবেদনকারী ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম ও রিটের হলফনামায় স্বাক্ষরকারী কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এসএম আব্রাহাম লিংকন উপস্থিত ছিলেন।

মাসুম সম্পাদক কিরীটি রায় বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রায় ৪ হাজার কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। সেখানে হিংসা, নিত্য খুন এবং মানুষের ওপর নির্যাতন চলছে, যেটি মূলত ভারতের বিএসএফ করে যাচ্ছে। দুদেশের কারাগারগুলোতে প্রচুর মানুষ সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও দীর্ঘদিন বিনা বিচারে আটক থাকছেন। এগুলো কিভাবে বন্ধ করা যায়, দুদেশের সুশীল সমাজ কিভাবে এগিয়ে আসতে পারেন, সেসব বিষয়ে আলোচনার জন্য গত ১৭ মার্চ তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় কুড়িগ্রামে এসেছেন। 

তিনি আরও বলেন, `সীমান্ত ঘটনার সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে ফেলানী খাতুন। যাকে নিরস্ত্র অবস্থায় হত্যা করা হয়েছে। যার ন্যায়বিচার চেয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে রিট আবেদন দাখিল করা হয়েছে। সেই মামলায় সব পক্ষ এফিডেভিটসহ তাদের জবাব দাখিল করেছেন। তারপরও রিটের পূর্ন শুনানি হচ্ছে না। আমরা শুধু অপেক্ষা করে যাচ্ছি। এছাড়া আর করার কিছুই নেই। আর ন্যায়বিচার যদি দ্রুত না হয়, তাহলে তা অবিচারের নামান্তর।`

কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এসএম আব্রাহাম লিংকন বলেন, `দ্রুত শুনানি শেষে রিটের নিস্পত্তি হলে তাতে যে নির্দেশনা থাকবে তাতে দুদেশের সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় মাইলফলক হবে বলে প্রত্যাশা করছি।‘ 

ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, মেয়ে হত্যার ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত বিচার চাইতে থাকবেন।

এর আগে বিএসএফের জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স কোর্টের বিচার এবং পুনর্বিচারে ফেলানী হত্যায় অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে নির্দোষ বলে খালাস দেওয়া হয়। ২০১৫ সালের আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচার চেয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে মাসুম সম্পাদক কিরিটি রায় এবং ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম যৌথভাবে রিট আবেদনটি করেছিলেন। এই আবেদনের হলফনামায় স্বাক্ষর করেছিলেন কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এসএম আব্রাহাম লিংকন।এই রিটের সব প্রক্রিয়া শেষ হলেও শুনানি এখন ঝুলে আছে।

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে ভারত থেকে দেশে ফেরার সময় ১৪ বছর বয়সী কিশোরী ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করেছিলেন বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ। তার লাশ কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলেছিল ৫ ঘণ্টা। ঘটনার ৩০ ঘণ্টা পর বিএসএফ মরদেহ ফেরত দিলে নাগেশ্বরী উপজেলার কলোনীটারী গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/২০মার্চ/প্রতিবেদক/এআর)