কুষ্টিয়ায় লালন স্মরণোৎসব শুরু

প্রকাশ | ২০ মার্চ ২০১৯, ২৩:১২

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ার লালন আখড়াবাড়িতে দোল পূর্ণিমার রাতে আনুষ্ঠানিভাবে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের মাজারে তিন দিনব্যাপী স্মরণোৎসবের উদ্বোধন করা হয়েছে।

বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে লালন মুক্ত মঞ্চে আনুষ্ঠানিকভাবে স্মরণোৎসবের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।

উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, ‘এই মার্চ মাসের ৭ তারিখে বঙ্গবন্ধু যে ডাক দিয়েছিলেন সেই ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ি। আমরা পাকিস্তানের কোন আদেশ মানিনি। বঙ্গবন্ধু ৩২ নম্বর থেকে যে আদেশ দিয়েছেন- সেটা মেনেছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘লালনের সাথে মানুষের একটা আত্মার সম্পর্ক রয়েছে। লালন শাহর মতো মানুষকে বিশ্বের কাছে উচুঁ করে পৃথিবীর মধ্যে আরেকটা উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারি। মানুষের প্রতি ভালোবাসা দেখাতে হবে, পশুপাখি, গাছপালা, প্রকৃতিকে আমাদের ভালোবাসতে হবে। তবেই আজকে লালনের এই স্মরণোৎসবে আসা স্বার্থক হবে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘বাউল সম্রাট লালন শাহ ছিলেন এক মহান সাধক। তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না। অথচ দেশ ও সমাজ নিয়ে দেয়া তার বাণী আমাকে মুগ্ধ করে। সমাজকে ভালোভাবে গড়ার জন্য কি করণীয় সে কথা বলেছেন তিনি। কিভাবে ভালো মানুষ হওয়া যায়, সে কথা বলেছেন। আজকে লালনের দর্শন মানুষের মনে ধারণ করলে সন্ত্রাস, মারামারি দূর হয়ে যেত। দেশ থেকে সন্ত্রাস, দুর্নীতি দূর করার জন্য লালনের দর্শন সবচেয়ে সময় উপযোগী।’

বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ, কুষ্টিয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য আ খ ম সরোয়ার জাহান বাদশা, কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত, জেলা পরিষদের সদস্য রবিউল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খাঁন, সাধারণ সম্পাদক আজগার আলী, কুষ্টিয়া কোর্টের জিপি আখতারুজ্জামান মাসুম, পিপি অনুপ কুমার নন্দী, কুমারখালী পৌর মেয়র শামছুজ্জামান অরুণ, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি তাইজাল আলী খান, কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব।

আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে আলোচনা করেন কুষ্টিয়ার ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-উর-রশিদ-আসকারী।

বাউল সম্রাট লালন শাহর জীবনের আলোকে আলোচনা করেন লালন মাজারের খাদেম মহাম্মদ আলী।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আজাদ জাহান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমির সভাপতি আসলাম হোসেন।

এবারের আয়োজনে মরমী সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইজির অমর বাণী ‘মনের গরল যাবে যখন, সুধাময় সব দেখবি তখন’ প্রতিপাদ্যে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন একাডেমির আয়োজনে তিন দিনব্যাপী এ লালন স্মরণোৎসবের আয়োজন করা হয়।

মূল মঞ্চে আলোচনা সভা শেষে শুরু হয় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহর আধ্যাত্মিক গানের আসর। যেখানে দেশ বরেণ্য লালন শিল্পী ও লালন একাডেমির শিল্পীরা লালন সংগীত পরিবেশন করেন।

শুক্রবার (২২ মার্চ) পর্যন্ত চলবে এ লালন স্মরণোৎসব। সেই সাথে প্রতিদিন গভীর রাতভর চলবে লালন মুক্তমঞ্চে লালন সংগীতের আসর এবং গ্রামীণ মেলা।

(ঢাকাটাইমস/২০মার্চ/এলএ)