বাপা+৪০ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ঢাকায় দক্ষিণের দেশগুলোর মন্ত্রীপর্যায়ের ফোরামের প্রস্তাব

প্রকাশ | ২১ মার্চ ২০১৯, ২২:২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

জাতিসংঘের দেওয়া এজেন্ডা ২০৩০ বাস্তবায়নে এশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর উন্নয়নে গঠিত দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতাকে বাংলাদেশ বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি  ঢাকায় দক্ষিণের দেশগুলোর জন্য একটি মন্ত্রী পর্যায়ের ফোরাম গঠনের প্রস্তাব করেছেন।

বৃহস্পতিবার আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আয়ার্সে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা বিষয়ক দ্বিতীয় উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে (বাপা+৪০) দেওয়া বক্তব্যে এ তথ্য জানান মন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৫ সালের মে মাসে রাজধানী ঢাকায় প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং দক্ষিণের উন্নয়নে বিনিয়োগ সংক্রান্ত সাউথ-সাউথ অ্যান্ড ট্রায়াঙ্গুলার কো-অপারেশনের উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই বাংলাদেশ এজেন্ডা ২০৩০ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দক্ষিণ- দক্ষিণ সহযোগিতার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেছিল।’

বাপা+৪০ এর লক্ষ্য হলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে কারিগরি সহযোগিতার বাস্তবায়ন এগিয়ে নেওয়া। এ লক্ষ্যে ২০ মার্চ শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনের আয়োজন করেছে আর্জেন্টিনা। বাংলাদেশ এ সম্মেলনের ভাইস-প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছে।

দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতাকে বাংলাদেশের উন্নয়ন পরিক্রমার একটি কার্যকর প্রপঞ্চ হিসেবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশকে রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে মধ্যম-আয়ের দেশে এবং রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা পরিণত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন।’

‘ইতোমধ্যে আমরা স্বল্পোন্নত দেশের ক্যাটেগরি থেকে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছি। উন্নয়ন অগ্রযাত্রার এসকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার পূর্ণ সুবিধা ব্যবহার করতে চাই।’

সম্মেলনে বাংলাদেশ ঢাকায় দক্ষিণের দেশগুলোর জন্য একটি মন্ত্রী পর্যায়ের ফোরাম এবং ‘দক্ষিণ-দক্ষিণ জ্ঞান ও উদ্ভাবনী কেন্দ্র’ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার ভাষণে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতাকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কিছু পরিকল্পনা ও দৃষ্টিভঙ্গির কথা তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা ও এর সম্ভাবনা উন্মোচনের পাশপাশি দক্ষিণে এসডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে সফলতা অর্জনের লক্ষ্যে উন্নয়ন, অর্থ, অর্থনীতি এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রী পর্যায়ের একটি ফোরাম গঠন করা।

দক্ষিণের দেশগুলোর বিপুল সংখ্যক নাগরিক প্রবাসে বসবাস করছেন উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রবাসী এই নাগরিকরা যাতে তাদের অর্জিত জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও সম্পদ ব্যবহার করে নিজ নিজ দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে সে লক্ষ্যে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার আওতায় একটি প্লাটফর্ম গঠন করা যেতে পারে।’

দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতাকে শক্তিশালী ও পুনরুজ্জ্বীবিত করার লক্ষ্যে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা বিষয়ক দ্বিতীয় উচ্চপর্যায়ের এই সম্মেলন আহ্বান করে। ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আয়ার্সে অনুষ্ঠিত ‘বুয়েনস আয়ার্স্ প্লান অব অ্যাকশান (বাপা)’ গৃহীত হবার চল্লিশ বছর পূর্তির কথা মাথায় রেখেই সাধারণ পরিষদ এবারের এই সম্মেলন আয়োজন করে।

সম্মেলনের আগে এটুআই ও জাতিসংঘের দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা বিষয়ক কার্যালয়ের যৌথ আয়োজনে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী বিষয়ক একটি সাইড ইভেন্টে যোগ দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ইভেন্টটিতে তিনি বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী খাতে বাংলাদেশ সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন।
 

(ঢাকাটাইমস/২১ মার্চ/এনআই/মোআ)