বান্দরবানে বন উজাড় করে জ্বালানো হচ্ছে ইটভাটায়

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২২ মার্চ ২০১৯, ০০:২০ | প্রকাশিত : ২২ মার্চ ২০১৯, ০০:১৮
ফাইল ছবি।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে পুরো বান্দরবানে বৈধ ইটভাটা আছে একটি। বাস্তবে এ সংখ্যা অর্ধশতাধিক। অভিযোগ উঠেছে, এসব ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে স্থানীয় কৃষক ও বনবিভাগের লাগানো গাছ। মাটির জন্য কাটা হচ্ছে পাহাড়।

লামা, আলী কদম, বান্দরবান সদর ও নাইক্ষংছড়ি ঘুরে দেখা যায় দুর্গম এলাকায় জনপদের মধ্যেই রয়েছে ইটভাটা। জনবসতির স্কুলের পাশে বা বাজারের কাছেও রয়েছে ইট ভাটা। শুধুমাত্র ফাইতং ইউনিয়নে রয়েছে প্রায় ২৫ টি ইটভাটা। সাধারণত নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্য়ন্ত ইটভাটায় ইট উৎপাদন করা হয়। আর এ সময় উজাড় হতে থাকে পাহাড়ি বন।

মং বাচিং পাড়ার আদিবাসী কৃষক বুদ্ধ দাস চাকমা ঢাকাটাইমসকে বলেন, “এখানে শত বছরের বেশি বয়সী গাছ ছিল প্রচুর। সরকার রিজার্ভ ফরেস্ট করেছিল কিন্তু এখন তেমন কিছুই নেই। চোরাকারবারিরা গাছের বড় বড় গুড়ি নিয়ে যায় আর ইটভাটায় পোড়ানো হয়। কেউ কিছু বলার সাহস নেই। জীবনের নিরাপত্তা কে দিবে?’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বান্দরবান কলেজের একজন শিক্ষক বলেন, ‘হাজার বছর ধরে দেশের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের এসব জনপদে যে সব মানুষ বসবাস করেন তারা জানেন পাহাড়ের ধর্ম কি? তারা গাছকে জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসেন। এই গাছই তাদের জীবিকার অন্যতম ভরসা। বনভূমি সৃষ্টিতে তাদের অনেক অবদান। তাদের যত্নে গড়া বন কেটে নিয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালীরা। প্রতিবাদ করতে গেলে অনেক সমস্যা।’

বান্দরবানের কৃষকদের থেকে জানা যায় এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের জ্বালানির প্রধান উৎস গাছ। এই উৎস যেন শেষ না হয়ে যায় সে জন্য তারা বনভূমি রক্ষা করে থাকেন। সাধারণত তারা নিজেদের বাগানের গাছের ডালপালা দিয়ে রান্নার কাজ করে থাকেন। এছাড়া পাহাড়ের ঝিরি বা পাহাড়ি নদী দিয়ে বনভূমির যে সমস্ত শুকনো ডাল ভেসে আসে সেটা সংগ্রহ করা হয়।

আশঙ্কাজনকভাবে বনভূমির কাছে ইটভাটায় গাছ পোড়ানোয় এখন ঝিরি বা পাহাড়ি নদী দিয়ে গাছের ডাল কম পাওয়া যায়। তাই এখন কৃষকদের জ্বালানির মূল ভরসা নিজেদের বাগানের গাছের ডালপালা অথবা বাজার থেকে কিনতে হয়।

স্থানীয় কৃষকেরা জানান, এভাবে ইট ভাটায় কাঠ পুড়তে থাকলে খুব তাড়াতাড়ি পাহাড়ের সমস্ত গাছ বিলীন হয়ে যাবে। তাই তারা গাছ রক্ষার্থে প্রশাসনের সাহায্য কামনা করেন।

ঢাকাটাইমস/২২মার্চ/টিএ/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :