বাস থেকে ফেলে সিকৃবি ছাত্রকে হত্যা, সিলেটে বাস বন্ধ

প্রকাশ | ২৩ মার্চ ২০১৯, ২১:৫৩ | আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৯, ২৩:০৬

সিলেট ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

সিলেটের শেরপুরে ভাড়া নিয়ে কথা-কাটাকাটির জেরে বাসের সহকারী ধাক্কা মেরে বাস থেকে ফেলে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) এক শিক্ষার্থীকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পরে কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের পর সিলেট থেকে সারা দেশে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

আজ শনিবার বিকাল পাঁচার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়াকের শেরপুর এলাকায় ওই শিক্ষার্থীকে হত্যার ঘটনা ঘটে।

নিহত গোরি মোহাম্মদ ওয়াসিম (২১) সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার রৌদ্রগ্রামের গোরি মো. আবু জাহেদ মাহমুদের ছেলে।

ওয়াসিমের সহপাঠীদের বরাত দিয়ে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য  অধ্যাপক মতিয়ার রহমান হাওলাদার জানান, বিকেল পাঁচটার দিকে নবীগঞ্জের গোপলারবাজারে ময়মনসিংহ থেকে সিলেটগামী উদার পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন ওয়াসিম ও তার কয়েকজন সহপাঠী। সিট না পাওয়া ও বাস ভাড়া নিয়ে বাসের সহকারীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় তাদের। তারা শেরপুরে নামতে চাইলে ওয়াসিমকে ধাক্কা মেরে বাস থেকে ফেলে দেয় হেলপার।

গুরুতর অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় ওয়াসিমের।

ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যা হিসেবে উল্লেখ করে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।

বাসে ওয়াসিমের সঙ্গে তার সহপাঠী নয়ন রঞ্জন ঘোষ। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, তারা ১১ শিক্ষার্থী হবিগঞ্জের নবীনগরে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ময়মনসিংহ-সিলেট রুটের উদার পরিবহনের বাসে করে ফিরছিলেন। বাসে ওঠার সময়ই তারা চালক ও হেলপারকে ভাড়া কম আছে বলে জানিয়েছিলেন এবং সেই মতো ৬০০ টাকা ভাড়া পরিশোধ করেন। কিন্তু শেরপুরে নামার সময় হেলপার ও চালক তাদের উদ্দেশে কটূক্তি করলে ওয়াসিম ও রাকিব হোসেন এর প্রতিবাদ করেন। এরই মধ্যে অন্য নয়জন বাস থেকে নেমে গেছেন।

তর্কাতর্কির একপর্যায়ে ওয়াসিম ও রাকিবকে ধাক্কা দিয়ে হেলপার বাসের দরজা লাগিয়ে দেন আর চালক বাস চালানো শুরু করেন। এতে রাকিব সড়কে ছিটকে পড়েন এবং ওয়াসিমের পা দরজার সঙ্গে আটকে যায়। একপর্যায়ে তিনি বাসের পেছনের চাকায় পিষ্ট হন।

তাদের দুজনকে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওয়াসিমকে মৃত ঘোষণা করেন।

সহপাঠীর মৃত্যুর খবরে হাসপাতালে ছুটে যান কয়েক শ শিক্ষার্থী। এ সময় তারা সেখানে বিক্ষোভ করেন। পরে কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গিয়ে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর করেন তারা।

দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল জানান, শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাত পৌনে ৯টার দিকে কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিলাল এলাকায় ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। পুলিশ তাদের শান্ত করার চেষ্টা করছে।

এদিকে বাস টার্মিনালে ভাঙচুরের জেরে সিলেট থেকে সারা দেশে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

শেরপুর হাইওয়ে পুলিশের ফাঁড়ি ইনচার্জ কামরুল হাসান জানান, ঘটনার পর বাসটিকে সিলেটের বেগমপুর এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। তবে বাসচালক ও তার সহকারী পালিয়ে গেছে।

(ঢাকাটাইমস/২৩মার্চ/মোআ)