শিশু বয়সেই খ্যাতি পেয়েছিলেন শাহনাজ রহমতুল্লাহ

প্রকাশ | ২৪ মার্চ ২০১৯, ০৯:০৮

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

‘এক নদী রক্ত পেরিয়ে’, ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়ে’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বলরে‌ এবার বল’, ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’, ‘আমায় যদি প্রশ্ন করে’, ‘যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়’। এমন অসংখ্য জনপ্রিয় গানের শিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহ। যিনি খ্যাতি পেতে শুরু করেছিলেন ষাটের দশকে শিশু বয়সেই।

জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নায়ক জাফর ইকবাল ও বরেণ্য সুরকার আনোয়ার পারভেজের ছোট বোন আর মুক্তিযুদ্ধা শহীদ আলতাফ মাহমুদের পরিবারের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে শিশু বয়সেই গানের জগতে জায়গা করে নেন শিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহ। তার ডাক নাম শাহীন। তিনি গান শুরু করেছিলেন মা আছিয়া হকের অনুপ্রেরণায়।

তার পরিবারের ঘনিষ্ঠ দেশের আরেক বরেণ্য গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার বলছেন, ‘ষাটের দশকেই চলচ্চিত্র, টেলিভিশন এবং গ্রামোফোন রেকর্ডে সমানভাবে জায়গা করে নিয়েছিলেন কিছুটা ব্যতিক্রমী কণ্ঠের অধিকারী শাহনাজ রহমতুল্লাহ।’

১৯৫২ সালের ২ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করা এ শিল্পী দশ বছর বয়স থেকেই গান শুরু করেন। খেলাঘর থেকে শুরু করা এ শিল্পীর কণ্ঠ শিশুকাল থেকেই ছিল বেশ পরিণত। তিনি গান শিখেছিলেন গজল সম্রাট মেহেদী হাসানের কাছে।

কিন্তু শাহনাজ রহমতুল্লাহ খুব অল্প বয়সে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন কী করে? এ সম্পর্কে গাজী মাঝহারুল আনোয়ার বলেন, ‘সুরের সঙ্গে একটা শাস্ত্রীয় কাজ থাকত তার। গলার ঢং ছিল রেওয়াজি। এটিই তাকে জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছিল।’

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভের মূহুর্তে শাহনাজ রহমতুল্লাহর কণ্ঠেই ধ্বনিত হয়েছিল ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গানটি। এ গানটিসহ তার গাওয়া তিনটি গান ঠাঁই পেয়েছিল বিবিসির শ্রোতাদের ভোটে মনোনীত সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বিশটি বাংলা গানের তালিকাতে।

পুরনোদের পাশাপাশি শাহনাজ রহমতুল্লাহ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন পরবর্তীকালে উঠে আসা শিল্পীদের কাছেও। তাদেরই একজন কুমার বিশ্বজিৎ। তিনি বলছেন, ‘অপূর্ব কণ্ঠ ও গায়কী ঢং দিয়ে শাহনাজ আপা কয়েকটি প্রজন্মকে একই সূত্রে গেঁথেছেন। অসাধারণ মানবিক গুণাবলীর জন্যই পরবর্তীকালের শিল্পীদের কাছেও তিনি প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন।’

তবে কুমার বিশ্বজিৎ ও গাজী মাজহারুল আনোয়ার মনে করেন মেধা, পরিশ্রম ও কণ্ঠ দিয়ে তুমুল জনপ্রিয়তা পেলেও যথাযথ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না পাওয়ার অভিমানে শেষ দিকে গানের জগত থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন শাহনাজ রহমতুল্লাহ। যদিও ১৯৯২ সালে তাকে ‘একুশে পদক’ দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার।

ঢাকাটাইমস/২৪জানুয়ারি/এএইচ