সন্তানদের ছাড়াই সমাহিত শাহনাজ রহমতুল্লাহ

প্রকাশ | ২৪ মার্চ ২০১৯, ১৫:৫৪ | আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৯, ১৭:৫৩

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

দুই ছেলে-মেয়ে সায়েফ রহমতুল্লাহ ও নাহিদ রহমতুল্লাহকে ছাড়াই দাফন সম্পন্ন হয়ে গেল সদ্য প্রয়াত কণ্ঠশিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহর। জোহরের নামাজ পরে বারিধারার নয় নম্বর রোডের পার্ক মসজিদে জানাজা শেষে শিল্পীকে বনানীর সম্মিলিত সামরিক বাহিনীর কবরস্থানে দাফন করা হয়।  

সন্তানদের ছাড়া শাহনাজ রহমতুল্লাহর দাফনের সিদ্ধান্ত নেন তার স্বামী আবুল বাশার রহমতুল্লাহ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যে গেছে তাকে তো আর ফেরানো যাবে না। ছেলে কবে আসতে পারবে তার নিশ্চয়তা নেই। টিকিট পাওয়ার বিষয় আছে। সে এলে দোয়া অনুষ্ঠানে অংশ নেবে। আপনারা সবাই দোয়া করবেন।’

তবে মেয়ে নাহিদ রহমতুল্লাহ লন্ডন থেকে আসছেন কি না সে বিষয়েও তিনি স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি। প্রয়াত শাহনাজ রহমতুল্লাহর ছেলে সায়েফ রহমতুল্লাহ থাকেন কানাডায়।

শনিবার রাত ১১টার দিকে শ্বাসকষ্টজনিত কারণে বারিধারায় নিজ বাসায় মারা যান বাংলাদেশের কিংবদন্তি এই শিল্পী। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। এদিন রাতে হঠাৎ তার মারাত্মক শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে নেয়ার সুযোগ পাননি। তার আগেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

শিল্পীর মৃত্যুর খবর পেয়ে তাকে দেখতে বারিধারার বাসায় ছুটে যান কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ, শফিক তুহিন ও গীতিকার কবির বকুল ও গাজী মাঝহারুল আনোয়ারসহ অনেকে। তারা সবাই মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন ও তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন।

শাহনাজ রহমতুল্লাহর জন্ম হয়েছিল ১৯৫২ সালের ২ জানুয়ারি ঢাকায়। ছোটবেলায় তিনি গান শিখেছিলেন গজল সম্রাট মেহেদী হাসানের কাছে। ১৯৬৩ সালে মাত্র ১১ বছর বয়সে ‘নতুন সুর’ নামে চলচ্চিত্রে কণ্ঠ দেয়ার মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু হয়। তিনি গাজী মাজহারুল আনোয়ার, আলাউদ্দিন আলী ও খান আতাউর রহমানের মতো বিখ্যাত সুরকারদের সুরে গান গেয়েছেন। পাকিস্তানে থাকার সুবাদে করাচী টিভিসহ উর্দু ছবিতেও তিনি গান গেয়েছেন।

তিনি মূলত দেশাত্মবোধক গান গেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তার উল্লেখযোগ্য গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘এক নদী রক্ত পেরিয়ে’, ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়ে’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বলরে‌ এবার বল’, ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’, ‘আমায় যদি প্রশ্ন করে’, ‘যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়’। ইত্যাদি।
এর মধ্যে প্রথম তিনটি গান বিবিসির একটি জরিপে সর্বকালের সেরা বিশটি বাংলা গানের তালিকায় স্থান করে নেয়। শাহনাজ রহমতুল্লাহ ১৯৯০ সালে ‘ছুটির ফাঁদে’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া সংগীতে বিশেষ অবদান রাখায় ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে দেয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদক।