একাত্তরের গণহত্যার `স্বীকৃতি’ আন্তর্জাতিক ফোরামে তুলবে জাতিসংঘ

প্রকাশ | ২৪ মার্চ ২০১৯, ১৬:৫৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর চালানো গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির বিষয়টি আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি ও গণহত্যা প্রতিরোধ বিষয়ক বিশেষ উপদেষ্টা অ্যাডামা ডিয়েং।

রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে এসে এ কথা জানান তিনি। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বিষয়টি নিয়ে ব্রিফ করেন।

প্রেস সচিব জানান, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কীভাবে এ দেশে গণহত্যা ‍শুরু হয়েছিল, এদেশের সাধারণ মানুষকে কীভাবে নির্বিচারে হত্যা করেছিল পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশি দোসরেরা, সে বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে তুলে ধরেন।

মুক্তিযুদ্ধে দুই লাখের বেশি নারী নির্যাতিত হয়েছিলেন এবং স্বাধীনতার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছিলেন। সে বিষয়গুলোও শেখ হাসিনা জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারির সামনে তুলে ধরেন।

জবাবে অ্যাডামা ডিয়েং বলেন, `আমরা একাত্তর সালে বাংলাদেশের জেনোসাইডের বিষয়টি রেইজ (তুলব) করব। যদিও তখন হয়তো কিছু দেশ এর বিরোধিতা করতে পারে।`

তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয়ভাবে ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস পালন করছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে একাত্তরে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এবং ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ।

ইহসানুল করিম জানান, নারীর ক্ষমতায়ন এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশের অগ্রগতি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নারীর ক্ষমতায়নের প্রতীক হিসেবে মন্তব্য করে অ্যাডামা ডিয়েং বলেন, `নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আপনি বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়নের প্রতীক।`

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, `ইসলামেও নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলা হয়েছে। আমি সারা দেশ ঘুরেছি। আমরা নারীর ক্ষমতায়নকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।`

নিউজিল্যান্ডে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে বলেন, ওই ঘটনার পর দেশটির সরকার ও জনগণ যেসব উদ্যোগ নিয়েছে, তা প্রশংসার দাবি রাখে। বাংলাদেশে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটলেও বর্তমান সরকার সেগুলো কঠোরভাবে দমন করেছে।

বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থানকে সমর্থনের বিষয়টিও তুলে ধরেন জাতিসংঘের গণহত্যাবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি অ্যাডামা ডিয়েং। তিনি বলেন, `বাংলাদেশ একা রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। রোহিঙ্গাদের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমারকে চাপ দিতে হবে। সে প্রচেষ্টা আমরা নিয়েছি। আমরা চাই ওই ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিচার হোক। রোহিঙ্গারা ফিরে যাক।`

`আমরা চাই, রোহিঙ্গারা সেখানে (রাখাইন) ফিরে যাক। সেখানে একটা শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়ে উঠুক।`

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, সামরিক সচিব মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/২৪ মার্চ/এনআই/এআর)