কক্সবাজারে ভিন্ন মাত্রার বিনোদন কেন্দ্র ‘কক্স কার্নিভাল’

প্রকাশ | ২৪ মার্চ ২০১৯, ১৮:১৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের নগরী কক্সবাজার। পর্যটনকে ঘিরে কক্সবাজারে তৈরি হয়েছে উন্নত মানের অসংখ্য হোটেল-মোটেল। কক্সবাজারে থাকার জায়গা আছে। তবে সমুদ্র সৈকতে গোসল ছাড়া আর কোন বিনোদনের ব্যবস্থা নেই- এই অভিযোগটি বেশ পুরোনো। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই সম্প্রতি যাত্রা শুরু করেছে ‘কক্স কার্নিভাল’ নামের একটি বিনোদন কেন্দ্র।

লাবনী পয়েন্টে অবস্থিত মোটেল প্রবালের পাশেই অবস্থান কক্স কার্নিভালের। মহান স্বাধীনতা দিবসকে সামনে রেখে ২৬ শে মার্চ কক্স কার্নিভালে আয়োজন করা হচ্ছে কনসার্ট, ড্যান্স প্রোগ্রাম এবং ফ্যাশান শো। কার্নিভালের মঞ্চ মাতাবেন এ সময়ের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী কনা ও তার দল। এছাড়া জনপ্রিয় অভিনয় শিল্পী তারিন এবং তার দল মঞ্চে পারফর্ম করবেন নানা ধরনের নাচের মাধ্যমে।

কোরিওগ্রাফার লুনা বাংলাদেশের র‌্যাম্প মডেলদের নিয়ে প্রদর্শন করবেন মনোমুগ্ধকর ফ্যাশন শো।

কক্স কার্নিভাল বাংলাদেশের এক মাত্র আন্তর্জাতিক মানের বিনোদন কেন্দ্র যাতে বিনোদন প্রেমীরা সারা বছর দেশি ও বিদেশি পারফর্মাদের ভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান উপভোগ ব্যবস্থা রয়েছে। আগত পর্যটকদের জন্য ভিন্ন মাত্রার বিনোদনের পাশাপাশি তাদের সামনে আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় সংস্কৃতির পরিচয় তুলে ধরবে কক্স কার্নিভাল।

একই সঙ্গে দুই হাজার দর্শক কক্স কার্নিভালের প্রতিটি শো উপভোগ করতে পারবেন। এই বিনোদন কেন্দ্রের গ্যালারির আকার ৯৬৫০ বর্গফুট। ২৫ ফুট ব্যাসাধ্যের এই প্রদর্শনী মঞ্চের আয়তন ২১০০ বর্গফুট। এছাড়া কার পার্কিংয়ের জন্য রয়েছে ৩ হাজার বর্গফুটের ওপেন স্পেস। কক্স কার্নিভালে রয়েছে উচ্চ প্রযুক্তির আধুনিক সাউন্ড ও লাইটিং সিস্টেম যা সম্পন্ন বিদেশি কারিগরি সহায়তায় তৈরি করা। পর্যটকরা যাতে সহজেই অনলাইন থেকে টিকেট সংগ্রহ করতে পারেন তার জন্য রয়েছে একটি ওয়েব সাইট www.coxcarnival.com

কক্স কার্নিভাল যাত্রা শুরু করে ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর। চীনের বেইজিং অ্যাক্রোব্যাট গ্রুপের প্রদর্শনীর মাধ্যমে এই বিনোদন কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। ইতোমধ্যে প্রথম সেশনে ১৫টি শো সফলভাবে সম্পন্ন করেছে বিনোদন কেন্দ্রটি।

স্থানীয় লোকজন ছাড়াও বিপুল সংখ্যক পর্যটক চাইনিজ শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর অ্যাক্রোবেট শোতে অংশ নিয়েছে যা নতুন মাত্রা যোগ করেছে পর্যটন শিল্পে।

বিপুল পরিমাণ দর্শক এর উপস্থিতি উৎসাহব্যাঞ্জক ও সত্যিই প্রশংসার দাবিদার বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

শারীরিক কসরত যে কত আনন্দদায়ক ও উপভোগ্য হতে পারে তা শৈল্পিকভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রমাণ করে দিয়েছেন চীনা অ্যাক্রোবেট দল। সদ্য শেষ হওয়া সেশনে প্রতি রাতে ৮ টায় শুরু হওয়া দেড় ঘণ্টার একটি শোতে অ্যাক্রোব্যাটিকস, স্ট্যান্ট এবং নৃত্য সম্বলিত প্রাণবন্ত মঞ্চ প্রদর্শনী দর্শকদের মন কেড়েছে অন্য মাত্রায়।

দর্শকরা আন্তর্জাতিক মানের উপস্থাপনায় অকোব্যাট, জগলার, স্টিল ওয়াকার্স, নাচ এবং আরো নানা ধরনের প্রদর্শনী দেখে রোমাঞ্চিত ও মুগ্ধ হন।

বিনোদন কেন্দ্রটির ভবিষ্যত লক্ষ্য ম্যাজিক শো, লাইভ কনসার্ট, বাদ্যযন্ত্র শো, ড্যান্স ও থিয়েটারসহ আরো আনন্দদায়ক আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয় প্রদর্শনীর আয়োজন করে পর্যটকদের ভিন্নধর্মী বিনোদনের ব্যবস্থা করা। এ লক্ষ্যেই বর্তমানে কাজ করে যাচ্ছে কক্স কার্নিভাল।

কক্সবাজারে ঘুরতে আসা পর্যটকরা জানান, আসলেই কক্সবাজারে বিনোদন বলতে সমুদ্র সৈকত ছাড়া আর কিছু নেই। পরিবারের সবাইকে নিয়ে যাওয়ার মতো কোনো বিনোদন কেন্দ্র নেই বললেই চলে। পর্যটনের এমন অবস্থায় কক্স কার্নিভালের ব্যাতিক্রমী এমন প্রদর্শনী কক্সবাজার পর্যটন শিল্পে অবশ্যই নতুন মাত্রা যোগ করবে মনে করেন তারা।

পারিবারিক বিনোদনের এই ব্যবস্থার যৌথ উদ্যোক্তা বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন এবং ইন্ডিগো ডটবিডি নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির সাথে সংশ্লিষ্টরা জানান, তারা পর্যটকদের সামনে দেশীয় সংস্কৃতিকে আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরতে চায়। একই সাথে পর্যটকদের বিনোদনের পাশাপাশি তাদের উদ্দেশ্য পযর্টন শিল্পকে বিকশিত করার মাধ্যমে জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা।

ঢাকাটাইমস/২৪মার্চ/ইএস