উঠে দাঁড়াতে চান ইবি শিক্ষার্থী

রিমন রহমান, রাজশাহী
 | প্রকাশিত : ২৫ মার্চ ২০১৯, ১৭:০৩

শরীর চর্চা করতে গিয়ে মাথার বাম পাশে ব্যথা অনুভব করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী সেলিম হোসেন। কয়েকদিন পর ব্যথা নেমে আসে হাতে। হাত থেকে কোমর এবং পা। এখন তার দেহের বাম পাশ অবশ হয়ে গেছে। তবু উঠে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখেন মেধাবী এই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র।

তবে চিকিৎসক জানিয়েছেন, ‘সেলিমকে উঠে দাঁড়ানোর মতো সুস্থ করে তুলতে প্রয়োজন উন্নত চিকিৎসা। তার জন্য দরকার চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা। কিন্তু এতো টাকা জোগাড় করা তার দিনমজুর বাবার পক্ষে অসম্ভব। এ অবস্থায় সেলিমের অসহায় বাবা-মায়ের দিন কাটছে চরম অনিশ্চয়তায়।’

সেলিমের বাড়ি রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বারইপাড়া গ্রামে। তার বাবার নাম লুৎফর রহমান। গত ৮ মার্চ থেকে সেলিম রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। সেলিমের রোগ সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত নন চিকিৎসক। তবে তারা ধারণা করছেন, সেলিম দূরারোগ্য নিউরো মায়ালাইটিস অপটিকায় আক্রান্ত। এর চিকিৎসা ব্যয়বহুল।

সোমবার দুপুরে রামেক হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, সেলিমের সঙ্গে তার মা নূরনাহার বেগম রয়েছেন। কিছুক্ষণ পরপর ছেলেকে এপাশ-ওপাশ করে দিচ্ছেন তিনি। তবে সেলিমের শরীরের একপাশ অবশ হয়ে যাওয়ায় তিনি নড়াচড়া করতে পারছেন না।’

নূরনাহার বেগম বলেন, ‘কয়েক মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে শরীর চর্চা করতে গিয়ে সেলিম মাথায় ব্যথা অনুভব করে। তারপর ব্যথা ধীরে ধীরে নিচে নামতে থাকে। এখন শরীরের বাম পাশ পুরোপুরি অসাড়। প্রতিনিয়ত অবস্থার অবনতি ঘটছে।’

নূরনাহার বেগম বলেন, ‘চিকিৎসক তার ছেলেকে ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। বলেছেন, চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু এতো টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়।’

তিনি বলেন, ‘সেলিমের চিকিৎসায় ইতোমধ্যে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। তেমন কোনো সম্পদ নেই যে বিক্রি করে চিকিৎসা করাবেন। এ অবস্থায় সেলিমের সহপাঠীরা ২৫ হাজার টাকা দিয়ে সহায়তা করেছেন।’

কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি বলেন, ‘ছেলে তো উঠে দাঁড়াতে চায়। কিন্তু কিছু করতে পারছি না। কেউ আমার ছেলের চিকিৎসায় পাশে দাঁড়ালে উপকৃত হতাম। সারাজীবন সে কথা মনে রাখতাম।’

রামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. রাসেউল কবির জানান, ‘সেলিমের রোগ সম্পর্কে তারা এখনও নিশ্চিত নন। তবে তারা ধারণা করছেন, সেলিম নিউরো মায়ালাইটিস অপটিকায় আক্রান্ত। বিষয়টি নিশ্চিত হতে বিভিন্ন নমুনা পরীক্ষার জন্য ভারতে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট আসার কথা। তারপরই বিষয়টি নিশ্চিতভাবে বলা যাবে। তবে এই মুহূর্তে সেলিমের আরও উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।’

মেধাবী শিক্ষার্থী সেলিম হোসেন পুঠিয়ার পিএন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৩ সালে বিজ্ঞান বিভাগে মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন। প্রতিটি বিষয়েই অর্জন করেন জিপিএ-৫। ২০১৫ সালে পুঠিয়ার লস্করপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে জিপিএ-৪.৬৭ পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর ভর্তি হন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগে। এখন তিনি তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।

(ঢাকাটাইমস/২৫মার্চ/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :