ঘুষ না খেতে প্রতিশ্রুতি নিলেন অর্থমন্ত্রী

প্রকাশ | ২৫ মার্চ ২০১৯, ২১:৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন স্লোগান ‘আমরা আপনার সততায় বিশ্বাসী’- এই স্লোগান ধারণ করার আহ্বান জানিয়ে কর্মকর্তাদের ঘুষ না খেতে প্রতিশ্রুতি নিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

আজ সোমবার রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনে সোনালী ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ প্রতিশ্রুতি নেন মন্ত্রী।

সৎ মানুষের বড় অভাব- এমন মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একে অপরের সততায় বিশ্বাস করি না। তবে এখনো পৃথিবীতে সৎ মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। যদি তাই না হয়, আমরা ধ্বংস হয়ে যেতাম। আমি সততায় বিশ্বাস করি, আমার রক্তে কেউ ইন্জেকশন দিয়েও ঘুষ খাওয়াতে পারবে না।’

কর্মকর্তাদেরও ঘুষ না খাওয়ার পরামার্শ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি চাই আপনারা এই পথে চলবেন, আপনারাও সৎ থাকবেন। যে ঘুষ খায় এবং যে দেয় উভয়-ই সমান অপরাধী।’

অর্থমন্ত্রী তার বক্তব্যে সব ক্ষেত্রে দেশের অগ্রগতি এবং জিডিপির প্রবৃদ্ধির তথ্য তুলে ধরেন। মুস্তফা কামাল বলেন, চলতি অর্থবছরে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯০৯ ডলার। আগামী চার বছরের মধ্যে আমাদের প্রবৃদ্ধি ডাবল ডিজিটে উন্নীত হবে, অর্থাৎ ১০ শতাংশে দাঁড়াবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির সোনালী ব্যাংকের ঋণ পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন। বলেন, ‘সোনালী ব্যাংকের অনেক উন্নতি হয়েছে, তবে প্রভিশন ঘাটতি এখনো অনেক। অপলোপনকৃত ঋণ থেকে আদায় কম। খেলাপি ঋণেরও উন্নতি হয়নি। আবার খেলাপি ঋণের ৯০ শতাংশই কু-ঋণ। এটি আদায়ে জোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে। বিশেষ গোষ্ঠী বা অঞ্চলে ঋণ কেন্দ্রীভূত না করার তাগিদ দেন গভর্নর।

বিদেশে সব গ্রাহককে সমান গুরুত্ব দেয়ার তাগিদ দিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সেই চর্চা করতে হবে। তবেই ব্যাংকের প্রতি গ্রাহকের আস্থা বাড়বে।’

সভাপতির বক্তব্যে ব্যাংকের চেয়ারম্যান আশরাফুল মকবুল বলেন, ‘হলমার্কের ঘটনার পর ধুঁকছিল সোনালী ব্যাংক। এটি থেকে আমরা শিক্ষা নিয়েছি। বড় বড় ঋণ দেয়ার বিলাসিতা থেকে সরে এসেছি। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে নজর দিয়েছি।’

সোনালি ব্যাংক নামমাত্র সেবা মাসুল পাচ্ছে- এমন দুঃখ প্রকাশ করে চেয়ারম্যঅন বলেন, ‘সোনালী ব্যাংক ৫১টি সেবা দিয়ে আসছে। এর মধ্যে ১৬টি নামমাত্র মূল্যে। রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ৯৫ হাজার কোটি টাকার এলসি খুলেছি। এতে কমিশন পাওয়ার কথা ৫ হাজার কোটি টাকা। পেয়েছি মাত্র ২০ কোটি টাকা।’

আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে সোনালী ব্যাংককে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেন,  ‘আমি যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি তখন প্রভিশন, মূলধন ঘাটতি ও জনবল সংকট ছিল প্রকট। এখন সেটি অনেক অংশে কমে এসেছে। আমরা ২০১৯ সালে আমাদের অর্জন আরো সুসংহত করব।’

(ঢাকাটাইমস/২৫মার্চ/আরএ/মোআ)