বনানী ট্রাজেডি: নিহত মির্জাপুরের তুষারের শেষ আকুতি

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৯ মার্চ ২০১৯, ১৭:২১ | প্রকাশিত : ২৯ মার্চ ২০১৯, ১৬:৫৩

‘আমাদের ভবনে আগুন লেগেছে। এই মুহূর্তে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। এখান থেকে বেরুতে পারব কিনা জানি না। আমার জন্য সবাইকে দোয়া করতে এবং মাফ করে দিতে বল।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুনে আটকা পড়ার পর মির্জাপুরের নাহিদুল ইসলাম তুষার তার স্ত্রী মাহমুদা আক্তার নদীকে ফোনে এসব কথা বলেন।

নাহিদুল ইসলাম তুষার মির্জাপুর উপজেলা গোড়াই ইউনিয়নের ভানুয়াবহ গ্রামের ইছাক আলীর ছেলে। তিনি ওই টাওয়ারের দশ তলায় হ্যারিটেজ ট্রাভেলস এজেন্সিতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চার বছর আগে মাহমুদার আক্তার নদীর সঙ্গে তুষারের দাম্পত্যজীবন শুরু হলেও তাদের কোন সন্তান ছিল না।

বৃহস্পতিবার ভবনে আটকা পড়ার পর মোবাইল ফোনে তুষার তার বাবা এছাক আলী, মা নুরুন্নাহার, বড় ভাই তুহিন ছোট ভাই শিশিরের সঙ্গেও কথা বলেন। এ সময় তিনি তাকে বাঁচানোর জন্য তাদের কাছে সাহায্য চান। কিন্ত কেউ তার এই করুণ আর্তনাতে সাড়া দিতে পারেননি। এসব কথা বলার পর দুপুর দুইটার পর থেকে তার মোবাইলটি বন্ধ হয়ে যায়।

ভয়াবহ আগুনের লেলিহান শিখায় অন্যদের সাথে তুষারের জীবনপ্রদীপও মুহূর্তে কেড়ে নেয়।

শুক্রবার ভোরে তুষারের লাশ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে এক হৃদয় বিদায়ক দৃশ্যের অবতারণা হয়। ভাইয়ের লাশ সামনে রেখে নিশ্চিত মৃত্যু পথযাত্রী ভাইকে বাঁচাতে না পারায় ছোট ভাই তুহিনের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস বাড়ি হয়ে উঠে। উপস্থিত সবাই তখন অশ্রুসজল হয়ে উঠেন।

সকাল দশটায় গ্রামের বাড়িতে তার জানাজা শেষে সামাজিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। জানাজায় এলাকার শতশত মানুষ অংশ নেন।

এদিকে বনানীর এফআর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডে মির্জাপুরের ছেলে তুষার নিহত হওয়ার খবরে তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি একাব্বর হোসেন।

(ঢাকাটাইমস/২৯মার্চ/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :