ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি বেড়েছে হুয়াওয়ের

প্রকাশ | ৩১ মার্চ ২০১৯, ১৪:২৩

বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

২০১৮ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে শীর্ষস্থানীয় আইসিটি সল্যুশন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮ সালে কোম্পানিটি শক্তিশালী ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছে। গত বছর কোম্পানিটির রাজস্বের পরিমান ছিল ৭২১.২ বিলিয়ন চাইনিজ ইয়েন। যা আগের বছরের তুলনায় ১৯.৫ শতাংশ বেশি। এছাড়া কোম্পানিটির নিট মুনাফার পরিমান দাঁড়িয়েছে ৫৯.৩ বিলিয়ন চাইনিজ ইয়েন। যা আগের বছরের তুলনায় ২৫.১ শতাংশ বেশি।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮ সালে হুয়াওয়ে গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে ১০১.৫ বিলিয়ন চাইনিজ ইয়েন (মোট রাজস্বের ১৪.১ শতাংশ) বিনিয়োগ করেছিল। ‘দ্য-২০১৮ ইইউ ইন্ডাস্ট্রিয়াল আরঅ্যান্ডডি ইনভেস্টমেন্ট স্কোরবোর্ড’জরিপ অনুযায়ী গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে হুয়াওয়ের বৈশ্বিক অবস্থান  পঞ্চম।
 
গত দশ বছরে গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে হুয়াওয়ের বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ৪৮০ বিলিয়ন ইউয়ান। ‘ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অরগানাইজেশন (ডব্লিউআইপিও)-এর তথ্য মতে, ২০১৮ সালে হুয়াওয়ে মোট ৫ হাজার ৪০৫টি পেটেন্ট আবেদন জমা দিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রথম স্থানে অবস্থান করছে।

প্রতিবেদন প্রকাশের পর হুয়াওয়ের রোটেটিং চেয়ারম্যান গুও পিং বলেন, ‘তথ্য-প্রযুক্তি প্রায় প্রতিটি শিল্পে দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। এছাড়া আমাদের ডিজিটাল অর্থনীতির উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি ডিজিটাল ও বুদ্ধিবৃত্তিক রূপান্তর প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করছে। ফাইভজি প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও গবেষণায় ধারাবাহিক বিনিয়োগের পাশাপাশি বড় পরিসরে বাণিজ্যিক সরঞ্জাম সরবরাহের মাধ্যমে হুয়াওয়ে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। 

ক্যারিয়ার বিজনেসে হুয়াওয়ে সর্বাধুনিক ফাইভজি এবং সফটকম এআই সল্যুশন চালু করেছে। এক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রক্রিয়াকে যতটা সম্ভব সহজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। ২০১৮ সালে ডোমেইনের নতুন নতুন উদ্ভাবন দেখা গেছে, বিশেষ করে প্রিমিয়াম হোম ব্রডব্যান্ড এবং ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি), যা ক্যারিয়ার ব্যবসার নতুন প্রবৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টিতে সহায়তা করছে। ২০১৮ সালে হুয়াওয়ে ক্যারিয়ার ব্যবসায় পরিমান দাঁড়িয়েছে ২৯৪ বিলিয়ন চীনা ইউয়ান, যা আগের বছরের প্রায় সমান।

এন্টারপ্রাইজ ব্যবসায় হুয়াওয়ে এখনও ক্লাউড, বিগ ডেটা, কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), আইওটি সল্যুশন সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে। পাশাপাশি ডেটা সেন্টার পণ্য, সব ধরনের ফ্ল্যাশ স্টোরেজ ও ওয়াইফাই সরবরাহ করছে। এসব প্রযুক্তি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সমন্বয় করে হুয়াওয়ে স্মার্ট সিটি, সেফ সিটি এবং স্মার্ট ক্যাম্পাস তৈরিতে সাহায্য করছে। একই সাথে গ্রাহকদের ফাইনান্স, পরিবহন ও জ্বালানি খাতের ডিজিটাল রূপান্তরে সহায়তা করছে। ২০১৮ সালে হুয়াওয়ে এন্টারপ্রাইজ ব্যবসার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৪.৪ বিলিয়ন চীনা ইউয়ান, যা আগের বছরের তুলনায় ২৩.৮ শতাংশ বেশি। 
 
ক্লাউড ব্যবসায় হুয়াওয়ে ১৬০টি ক্লাউড সার্ভিস এবং ১৪০টি সল্যুশন চালু করেছে। বিশ্বের ২৩টি অঞ্চলের ৪০টি জোনে হুয়াওয়ে তার অংশীদারদের মাধ্যমে গ্রাহকদের সেবা প্রদান করে আসছে। বর্তমানে হুয়াওয়ে ৬,০০০ এর বেশি ব্যবসায়িক অংশীদার ও ২০০ এর বেশি প্রকল্পে অন্তত ১০টি প্রধান শিল্প খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সেবার ব্যবহার নিয়ে কাজ করছে। 

এছাড়াও কনজ্যুমার ব্যবসার ক্ষেত্রেও এগিয়ে আছে হুয়াওয়ে। বৈশ্বিক স্মার্ট ফোনের বাজার বিস্তার এবং হাই-এন্ড-ডিভাইসের অবস্থানকেও শক্তিশালী করেছে প্রতিষ্ঠানটি। সব গ্রাহকদের দৃষ্টিকোণ থেকে একটি বৃদ্ধিবৃত্তিক ইকোসিস্টেম তৈরিতে হুয়াওয়ে বেশ এগিয়ে গেছে। ২০১৮ সালে হুয়াওয়ের কনজ্যুমার ব্যবসার পরিমান দাঁড়িয়েছে ৩৪৮.৯ বিলিয়ন চীনা ইউয়ান, যা আগের বছরের তুলনায় ৪৫.১ শতাংশ বেশি।

২০১৮ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে আর্থিক বিবৃতি অডিট করেছে বিশ্বের শীর্ষ চারটি অ্যাকাউন্ট ফার্মের মধ্যে অন্যতম কেপিএমজি। 

(ঢাকাটাইমস/৩১মার্চ/এজেড)