মাগুরা আদর্শ ডিগ্রি কলেজ

৫৭ পরীক্ষার্থীর টাকা আত্মসাতে ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত

প্রকাশ | ০১ এপ্রিল ২০১৯, ১৭:২৮

মাগুরা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস


মাগুরা আদর্শ ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এইচএসসির ৫৭ জন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ফরম পূরণের টাকা নিয়ে তা আত্মসাৎ করার অভিযোগে কলেজ সাংগঠনিক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।  
গতকাল রবিবার রাতে জেলা ছাত্রলীগের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

ওই দুই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ থেকে জানা যায়, মাগুরা আদর্শ ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে ওই কলেজের ৫৭ পরীক্ষার্থী এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। তাদের কাছ থেকে পরীক্ষার ফরম পূরণ বাবদ প্রায় ৫ লাখ টাকা নিয়ে সটকে পড়েন ওই দুই নেতা।

পরীক্ষা দিতে না পারা মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী ইমন হোসেন শান্ত বলেন, ‘পরীক্ষার ফরম পূরণ করে দেয়ার কথা বলে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হুদা অমি ও সাধারণ সম্পাদক ইমন শেখ আমিন আমার কাছ থেকে দুই দফায় ৮ হাজার ৩০০ টাকা নিয়েছে। কিন্তু তারা আমার ফরম পূরণ না করে সব টাকা মেরে দিয়েছে।’

একই অভিযোগ করে রিয়াজ হোসেন বলেন, ‘আমাদের দুই বন্ধুর কাছ থেকে তারা ১৬ হাজার ৬০০ টাকা নিয়েছে। ফরম পূরণের সব কাগজপত্রও তারা নিয়েছে। কিন্তু আমাদের কোনো প্রবেশপত্র আসেনি। গত দুই দিন ধরে তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।’
এ বিষয়ে মাগুরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন মুক্তা জানান, মাগুরা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের ৫৭ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থীর ফরম পূরণের টাকা কৌশলে হস্তগত করে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হুদা অমি ও সাধারণ সম্পাদক ইমন শেখ আমিন। সংগৃহীত টাকা কলেজে জমা না দিয়ে তারা তা আত্মসাৎ করে। এমনকি পরীক্ষার ফরমগুলো কলেজে জমাও দেয়নি তারা। ওই ৫৭ শিক্ষার্থী গত ৩০ মার্চ প্রবেশপত্র নিতে কলেজে এসে সব জানতে পারে। তারা বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে কলেজের অধ্যক্ষ ও মাগুরা জেলা ছাত্রলীগকে জানায়। প্রাথমিক তদন্তে আদর্শ কলেজ ছাত্রলীগের ওই নেতাদের বিরুদ্ধে ফরম পূরণের অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ মেলায় কলেজ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মাগুরা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সূর্যকান্ত বিশ্বাস জানান, ছাত্রলীগের ওই দুই নেতা যে ৫৭ জন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ফরম পূরণের জন্য মাথাপিছু ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা সংগ্রহ করে, তাদের মধ্যে মাত্র ৭ জন নির্বাচনী পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়েছিল। তারা ৩০ মার্চ কলেজে এসে ঘটনা জানানোর পর স্থানীয় এমপি সাইফুজ্জামান শিখরের সহযোগিতায় দ্রুত যশোর বোর্ডে যোগাযোগ করে তাদের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্যরা অকৃতকার্য হওয়ায় তাদের পরীক্ষা দেওয়ানো যায়নি।

এভাবে অর্থ গ্রহণ বড় ধরনের অপরাধ বলে জানিয়ে অধ্যক্ষ বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব। পাশাপাশি তাদের সমুদয় অর্থ অভিযুক্তদের কাছ থেকে আদায় করে ফেরতের ব্যবস্থা নেব। এই ঘটনার সঙ্গে কলেজে কর্মরত কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে আদর্শ ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের অভিযুক্ত সভাপতি ও সম্পাদক গা ঢাকা দিয়েছে। তাদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

(ঢাকাটাইমস/১এপ্রিল/মোআ)