পঞ্চগড়ে শিশু কুপিয়ে হত্যা, বাবা পলাতক

প্রকাশ | ০১ এপ্রিল ২০১৯, ২২:২২

পঞ্চগড় প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

পঞ্চগড়ের জয়ধরভাঙ্গা এলাকায় স্ত্রীসহ তিন কন্যা সন্তানকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে রত্না নামে ছয় মাসের এক কন্যা শিশু নিহত হয়। ঘটনার পর পালিয়ে যায় শিশুটির পিতা নাজিমুল ইসলাম। আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্ত্রীসহ দুই কন্যাকে রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সোমবার সকালে সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের জয়ধরভাঙ্গা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- নাজিমুলের স্ত্রী রশিদা খাতুন, তার বড় মেয়ে নাজিরা খাতুন (৮) এবং মেজ মেয়ে রিয়া মনি (৫)।

পুলিশ ও গৃহবধূর পরিবারের সদস্যরা জানায়, ‘প্রায় ১০ বছর আগে ওই এলাকার নাজিমুল ইসলাম ও রশিদা বেগমের বিয়ে হয়। দীর্ঘদিন ধরে এদের মধ্যে কলহ চলছিল। এর মধ্যে তাদের সংসারে জন্ম হয় তিনটি কন্যা সন্তান। ভোরে ঘুম থেকে উঠেই রশিদা বেগমের সাথে ঝগড়া শুরু হয় পাথরশ্রমিক নাজিমুল ইসলামের। এক পর্যায়ে প্রথমে ছোট মেয়ে রত্না আক্তারকে মাটিতে ছুড়ে মারে বাবা নাজিমুল। এতে ঘটনাস্থলে শিশুটি মারা যায়। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার স্ত্রী রশিদা এবং অপর দুই মেয়েকে কুপিয়ে জখম করে। তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে পালিয়ে যায় নাজিমুল ইসলাম।’

আহত গৃহবদূর পিতার দাবি, ‘পারিবারিক কলহের জেরে নাজিমুল ইসলাম এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনার পর গ্রহবধূর স্বামী নাজিমুল ইসলামসহ তার পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছে।’

আহত গৃহবধূর বাবা রশিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে নানা অজুহাতে নাজিমুল ইসলাম আমার মেয়েকে নির্যাতনসহ মারধর করত। এ নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে পক্ষে বিপক্ষে একাধিক মামলাও হয়েছে। পারিবারিক কলহের জের ধরে হত্যার উদ্দেশ্যে নাজিমুল ইসলাম আমার মেয়ে এবং নাতনিদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।’

সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘পারিবারিক কলহের জের ধরেই ঘটনাটি ঘটেছে, তবে এই ঘটনাটি মর্মান্তিক। গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষণিক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মনছুর আলম বলেন, ‘মৃত অবস্থায় ছয় মাসের শিশুটিকে হাসপাতালে আনা হয়। অন্য দুই মেয়ে গুরুতর জখম হয়েছে। তারা বমি করছিল। মাসহ গুরুতর আহত দুই মেয়েকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেয়া হয়।’

সদর থানা পুলিশের ওসি আবু আককাছ আহমেদ বলেন, ‘পারিবারিক কলহের জের ধরে ঘটনাটি ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনায় অভিযুক্ত নাজিমুল ইসলামসহ তার পরিবারের অন্য সদস্যরাও পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। এছাড়া শিশুটির মরদেহ তার নানার পরিবারের কাছে হস্তারের প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় নিহত শিশুর নানার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।’

(ঢাকাটাইমস/১এপ্রিল/এলএ)