অগ্রণী ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ

দুই ব্যবসায়ী ও তিন ব্যাংকারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

প্রকাশ | ০৩ এপ্রিল ২০১৯, ১৮:১৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

অগ্রণী ব্যাংকের ২৫৮ কোটি ৫৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুই ব্যবসায়ী ও তিন ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ বুধবার চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানায় মামলাটি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক নেয়ামুল আহসান গাজী।

মামলার আসামিরা হলেন মাররিন ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির আহমেদ, অগ্রণী ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) ও আগ্রাবাদ শাখার সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক বেলায়েত হোসেন, সাবেক সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার রমিজ উদ্দিন এবং সাবেক সিনিয়র অফিসার ত্রিপদ চাকমা।

মামলার এজাহারে বলা হয়, অগ্রণী ব্যাংকের আগ্রাবাদ (জাহান ভবন) থেকে চট্টগ্রামের নূরজাহান গ্রুপের প্রতিষ্ঠান মাররিন ভেজিটেবল অয়েলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির আহমেদ ২০১১ সালের ১০ মার্চ ঋণের আবেদন করেন। আবেদনে মালয়েশিয়া অথবা ইন্দোনেশিয়া থেকে ৩৫ হাজার মেট্রিক টন ‘ক্রুড পামওলিন’ আমদানির জন্য ২০ শতাংশ মার্জিনে ১২০ দিন মেয়াদে প্রায় ৩২৭০ কোটি ৪ লাখ টাকার ঋণপত্র এবং মার্জিন অবশিষ্ট ২৬১ কোটি ৬৩ লাখ টাকার টিআর ঋণ মঞ্জুরের কথা বলা হয়।

ব্যাংকের ওই শাখার তৎকালীন সিনিয়র অফিসার ত্রিপদ চাকমা ও সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার রমিজ উদ্দিন এ–সংক্রান্ত ঋণ প্রস্তাব তৈরি করেন। ওই ঋণ প্রস্তাব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ক্রেডিট কমিটির সুপারিশ বা মতামতের আলোকে অনুমোদন দিলে অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে মঞ্জুরিপত্র দেওয়া হয়।

২০১১ সালের ১৩ অক্টোবর থেকে ২০১২ সালের ২৩ মার্চ পর্যন্ত মাররিন ভেজিটেবল অয়েলস লিমিটেডের অনুকূলে আটটি টিআর (ট্রাস্ট রিসিট) ও তিনটি পিএডি (পেমেন্ট অ্যাগেইনস্ট ডকুমেন্ট) ঋণ বাবদ মোট ২৮০ কোটি ৭২ লাখ ৩৮ হাজার ৩৭৩ টাকা বিতরণ করে অগ্রণী ব্যাংক।

ঋণপত্রের বিপরীতে সংশ্লিষ্ট শাখায় মোট ১১টি আমদানি দলিল গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠান আটটি আমদানি দলিলের প্রয়োজনীয় মার্জিন ব্যাংকের শাখায় জমা করে মূল দলিল দিয়ে আমদানি করা মালামাল খালাস করে। কিন্তু তিনটি আমদানি বিলের মূল দলিল ব্যাংকের শাখায় সংরক্ষিত থাকা অবস্থায় প্রতারণার মাধ্যমে জাল কাগজপত্র ব্যবহার করে ৯৮ কোটি ২৭ লাখ টাকার মালামাল চট্টগ্রাম কাস্টমস থেকে ছাড় করে। ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠান মার্জিন ও অন্যান্য খাতে মোট ২২ কোটি ১৬ লাখ ২২ হাজার টাকা জমা দেয়। বাকি ২৫৮ কোটি ৫৬ লাখ ১৬ হাজার ৩৭৩ টাকা আত্মসাৎ করে।

এজাহারে বলা হয়, ঋণের বিপরীতে ব্যাংকের কাছে কোনো সহায়ক জামানত না থাকা এবং ওই ঋণের টাকা আদায় করতে না পারায় সরকারের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকের কর্মকর্তারা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজে অথবা অন্যকে আর্থিকভাবে লাভবান করার অসৎ উদ্দেশ্যে কাজ করেছেন।

(ঢাকাটাইমস/৩এপ্রিল/মোআ)