ছাদ ধসে ছাত্রী নিহতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি

বরগুনা প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ এপ্রিল ২০১৯, ১৮:৫২
নিহত ছাত্রী মানসুরা

বরগুনার তালতলীতে শ্রেণিকক্ষের ছাদের একাংশ ধসে ছাত্রী নিহতের ঘটনায় পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে বরগুনা জেলা প্রশাসন। রবিবার বরগুনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাহবুব আলমকে প্রধান করে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

এদিকে ঘটনার একদিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ করেনি কেউ। পরিবারের অনুরোধে ময়না তদন্ত ছাড়াই নিহত ছাত্রীর মৃতদেহ দাফন করেছেন তার স্বজনরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারের স্কুল নির্মাণে নিম্নমান ও প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের উদাসীনতার কারণে শ্রেণিকক্ষেই নিভে গেছে একটি তরতাজা শিশুর প্রাণ।

এ ঘটনা তদন্ত করে দায়ীদের কঠিন শাস্তি নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। বরিবার সকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এই নির্দেশ দেয়ার কথা জানান। মন্ত্রী বলেন, ‘স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনগুলোর নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা। এলজিইডি ঠিকাদারদের মাধ্যমে স্কুল ভবনগুলো নির্মাণ করে থাকে।’

এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, ‘এই ধরনের দুর্ঘটনার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা, পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোকে চিহ্নিত করে দ্রত সেখানে নতুন ভবন নির্মাণের পদক্ষেপ নেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

এ ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারকে কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ, সারাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ সকল শিক্ষাঙ্গন চিহিৃতকরণ ও পরিত্যক্ত ঘোষণাসহ আহত শিক্ষর্থীদের চিকিৎসা ব্যয়সহ প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করেছেন সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী হাসান তারেক পলাশ। রবিবার সকালে এ রিট আবেদন করা হয়।

এ বিষয়ে রিট আবেদনকারী হাসান তারেক পলাশ বলেন, ‘আগামীকাল এ রিটের শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

রিটে শিক্ষা সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, বরগুনার জেলা প্রশাসক, তালতলী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, ছোটবগী পিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় ভবনটি নির্মাণকারী সেতু এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী কবির উদ্দিন সেতু ও ভবন নির্মাণকারী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বরগুনার এলজিইডি এর নির্বাহী প্রকৌশলী এ এস এম কবীর বলেন, ‘স্কুল ভবনটির গুণগত মান যাচাই করার জন্য এলজিইডি কাজ করছে। এছাড়াও এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটিতেও তিনি রয়েছেন। তদন্তে নির্মাণ কাজে অনিয়ম ও কারো দায়িত্বে অবহেলা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ বিষয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক কবির মাহমুদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘শ্রেণিকক্ষে ছাদের অংশ বিশেষ ধসে শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় বরগুনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাহবুব আলমকে প্রধান করে শিক্ষা, প্রকৌশল ও জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

গতকাল শনিবার দুপুরে বরগুনার তালতলীর ৫নং পি কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের ছাদের একাংশ ধসে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মানসুরা নিহত হয়। আহত হয় আরও চার শিক্ষার্থী। নিহত মানসুরার বাবার নাম নজির হোসেন তালুকদার। তিনি পেশায় একজন কৃষক। তার দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে মানসুরা ছোট। এ ঘটনায় আহতরা হলো- সাদিয়া আক্তার, রুমা, ইসমাইল, এবং শাহিন। তারা সবাই তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।

(ঢাকাটাইমস/০৭এপ্রিল/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :