জামাল বাহিনীর হাতুড়িপেটায় একজন নিহত

ঢাকাটাইমস ডেস্ক
 | প্রকাশিত : ০৭ এপ্রিল ২০১৯, ২১:৫৮

ফরিদপুরের নগরকান্দা-সালথা নির্বাচনী এলাকায় জামাল-কামাল বাহিনীর হাতুড়িপেটায় মারা গেছেন সোবহান মাতুব্বর নামে এক ব্যক্তি।

নিহত সোবহান নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের কোনাগ্রামের বাসিন্দা।

জামাল-কামাল বাহিনীর লোকেরা হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন সোবহানকে। ১২ দিন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হার মানতে হয় তাকে।

এ নিহতের ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সোবহান মাতুব্বর হত্যায় জড়িত জামাল-কামালের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয়রা। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কোনাগ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

২৫ মার্চ কোনাগ্রামের বাসিন্দা সাহাবুদ্দিন মেম্বারের সমর্থক হিসেবে পরিচিত সোবহান মাতুব্বর তালমা বাজারে তার নাতির জন্য রসগোল্লা কিনতে যান। তালমা বাজার থেকে ফেরার পথে জামাল-কামাল বাহিনীর সদস্যরা বাবুল মোল্লার বাড়ির সামনে সোবহানকে ঘিরে ধরে। এ সময় এই বাহিনীর ২৫-২৬ জন হাতুড়ি, লোহার রড, কাঠের বাটাম দিয়ে নৃশংসভাবে পিটিয়ে সোবহান মাতুব্বরকে গুরুতর জখম করে। সেই দিনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দুজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সোবহানের ওপর সন্ত্রাসীরা অমানুষিক নির্যাতন চালায়। একপর্যায়ে সোবহান সন্ত্রাসীদের পা ধরে প্রাণভিক্ষা চাইলেও তারা সেই অনুরোধ রাখেনি। সন্ত্রাসীরা বেদমভাবে হাতুড়িপেটা করে সোবহান মাতুব্বরের হাত-পাসহ দেহের বিভিন্ন অঙ্গ থেঁতলে দেয়। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা সোবহানকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে গেলে জামাল-কামাল বাহিনীর সদস্যরা অস্ত্র উঁচিয়ে তাদের ভয় দেখায়। এতে তারা সরে যেতে বাধ্য হয়। হামলায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকলে মৃত ভেবে সোবহানকে ফেলে চলে যায় সন্ত্রাসীরা।’

পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সোবহান মাতুব্বরকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে পাঠানো হয় ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে। সেখানে ১২ দিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শুক্রবার সোবহান মাতুব্বর মারা যান।

সাহাবুদ্দিন মেম্বার অভিযোগ করে বলেন, ‘জামাল-কামালের নির্দেশে এবং উপস্থিতিতে সোবহানের ওপর হামলা চালায় বাবুল মোল্লা, সাদি মোল্লা, লাবুন মোল্লা, জাফর, সুজাত, ইউনুস, হাকিম, মোসলেম, রেজওয়ান, আলী মোল্লা, আজিজুল মাতুব্বর, সিরাজ শেখ, শাহ আলম, শহিদুল ইসলাম, বেলায়েত, সৈয়দ আলী, সামাদ মাতুব্বর, শাহজাহান শেখ, আপান শেখসহ আরো কয়েকজন। জামালের নির্দেশেই সোবহানকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।’

সোবহান মাতুব্বর হত্যার ঘটনায় নগরকান্দা থানার পুলিশ বাবুল মোল্লা ও লাবুন মোল্লা নামের দুজনকে আটক করেছে।

নগরকান্দা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিরাজ হোসেন বলেন, ‘এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। অন্য অভিযুক্তদের আটক এবং মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, ‘নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের কোনাগ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে কোন্দল চলে আসছিল। স্থানীয় সাহাবুদ্দিন মেম্বার গ্রুপ ও বাবুল মোল্লা গ্রুপের দ্বন্দ্বে এলাকায় বেশ কয়েক দফা হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। সাহাবুদ্দিন মেম্বার সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সমর্থক। অন্যদিকে বাবুল মোল্লা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জামাল হোসেন মিয়া ও জেলা পরিষদের সদস্য কামাল হোসেন মিয়ার সমর্থক। জামাল-কামাল বাহিনী এলাকায় শক্তিশালী হওয়ায় তারা সাহাবুদ্দিন মেম্বারের সমর্থকদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালায়। গত তিন মাসে কয়েক দফা হামলা চালিয়ে জামাল-কামাল বাহিনীর সদস্যরা অর্ধশতাধিক বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে কয়েকজনকে।’

এ বাহিনীর কবল থেকে বাঁচতে নগরকান্দাবাসী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জোর দাবি জানায়।

(ঢাকাটাইমস/৭এপ্রিল/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :