বগুড়ায় ভুল চিকিৎসায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগ

প্রকাশ | ০৯ এপ্রিল ২০১৯, ১২:২০

বগুড়া প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বগুড়া শহরের মালেকা নার্সিং হোম নামের একটি ক্লিনিকে টনসিলের অপারেশন করতে এসে ভুল চিকিৎসায় হুমায়রা খাতুন নামের এক শিশুকন্যার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগে বলা হয়, অপারেশনের পর শিশুর মৃত্যু হলেও ডাক্তার অপারেশন সাকসেসফুল হয়েছে জানিয়ে ওটি থেকে বের হয়ে যান। পরে শিগগির জ্ঞান ফিরবে জানিয়ে নার্স শিশুকে বেডে দিয়ে যায়। পরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গেলেও শিশুর জ্ঞান আর ফিরে আসেনি। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার রাতে।

এ ঘটনায় নার্সিং হোমে ভাঙচুর করা হলে চিকিৎসক এবং কর্মচারীরা সেখান থেকে পালিয়ে যান। পরে রাত ১২টার দিকে পুলিশ সেখানে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

শিশু হুমায়রা সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার নলকা এলাকার হারুন-অর-রশিদের মেয়ে।

হুমায়রা খাতুনের মামা আলমগীর হোসেন জানান, টনসিলের প্রদাহ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই তারা শহরের মালেকা নার্সিং হোমে নাক-কান ও গলা চিকিৎসার সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. সাইদুজ্জামানের পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন শিশুটিকে। তার পরামর্শ মতো ১১ হাজার টাকায় মালেকা নার্সিং হোমে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সোমবার বিকালে ওই চিকিৎসকই হুমায়রার টনসিলে অস্ত্রোপচার করেন। অস্ত্রোপচার শেষে ডাক্তার অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হয়ে বলেন অপারেশন সাকসেসফুল। এরপর নার্স শিশুকে বেডে দিয়ে যাওয়ার সময় বলে যায় খুব শিগগির জ্ঞান ফিরবে। কিন্তু দুই ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও হুমায়রার জ্ঞান ফেরেনি। বিষয়টি ক্লিনিকে কর্তব্যরতদের জানানো হয়। সে সময় তারা কর্ণপাত করেননি। এক সময় হুমায়রার পালস ও নিঃশ্বাস চলছে কি না এটা আমরা নিজেরাই হাত দিয়ে পরীক্ষা করার চেষ্টা করি। বুঝতে না পেরে পুনরায় ক্লিনিকের কর্তব্যরতদের জানানো হয়। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর রাত ১০টার সেখান থেকে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। এর আগে অপারেশনের খরচ তাদের কাছ থেকে আদায় করা হয়।

শিশুকে সিরাজগঞ্জ নিয়ে যাবার আগে আমরা নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রথমে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল এবং পরে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানেই ডাক্তার হুমায়রাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর হুমায়রার আমরা হুমায়রাকে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে মালেকা নার্সিং হোমে ফিরে আসি। 

হুমায়রার মরদেহ মালেকা নার্সিং হোমে নিয়ে আসার পর ভুল চিকিৎসায় শিশুর মৃত্যুর ঘটনা জানাজানি সেখানে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায় বিক্ষুব্ধ জনতা কিছু ক্লিনিকে ভাঙচুর চালায়। এসময় চিকিৎসক-সেবিকাসহ ওই নার্সিং হোমের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও প্রতিষ্ঠান থেকে সটকে পড়েন।

খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। রাত ১টার দিকে পুলিশ শিশুর লাশ উদ্ধার করে। সে সময় বগুড়া সদর থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান জানান, শিশুর পরিবার মামলা দিলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বগুড়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহিম জানান, হুমায়রার মামা আলমগীর হোসেন থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। পুলিশ পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেবে।

(ঢাকাটাইমস/০৯এপ্রিল/জেবি)