শিক্ষক পদোন্নতি স্থগিতের আবেদন নিষ্পত্তিতে ভিসিকে নির্দেশ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের দুই শিক্ষককে অধ্যাপক পদে দেওয়া পদোন্নতি স্থগিত চেয়ে করা আবেদন ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের প্রতি নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার এক আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর দুই শিক্ষকের নিয়োগে ‘জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘিত হয়েছে’ দাবি করে হাইকোর্টে আবেদন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. নাজমুল হাসান তালুকদার ও ড. রেজাউল করিম তালুকদার।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনিরুজ্জামান রানা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।
২০১৯ সালের ১৮ই জানুয়ারি ৩০৪ তম সিন্ডিকেট সভায় ড. ফারহানা আখতার ও ড. হিমেল বরকতকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। ৩০৪ তম সিন্ডিকেট সভায় সিন্ডিকেট সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে ১৮ই জানুয়ারি অপরাহ্ন থেকে পদোন্নতি কার্যকর হবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কিন্তু ২৪ জানুয়ারি প্রকাশিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত ৩০৪ তম সিন্ডিকেট সভার আলোচ্যসূচি নং-৯- এর কার্যবিবরণীতে (পত্রসংখ্যা: জাবি/ রেজি/কা. শা-৮/২০১৯/৮৪(১৩) বলা হয়েছে, সহযোগী অধ্যাপক ড. ফারহানা আখতার ও ড. হিমেল বরকতের অধ্যাপক পদে পদোন্নতি ২০১৮ সালের ৪ জুন থেকে কার্যকর হবে।
সিন্ডিকেটের ওই সিদ্ধান্তের ফলে অধ্যাপক নিয়োগে জ্যেষ্ঠতার লঙ্ঘন ও আইনের ব্যত্যয় ঘটার ব্যাখ্যা চেয়ে গত ৩০ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও সিন্ডিকেট সচিব বরাবর আবেদন করেন ড. নাজমুল হাসান তালুকদার ও ড. রেজাউল করিম তালুকদার। তবে এ আবেদনের কোনো সাড়া না পেয়ে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সভাপতি ও উপাচার্য বরাবর গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আরেকটি আবেদন করেন তারা। দ্বিতীয় আবেদনেরও কোনো জবাব পাননি তারা। এ অবস্থায় জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘিত হয়েছে দাবি করে এই সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে অধ্যাপক ড. নাজমুল হাসান তালুকদার ও ড. রেজাউল করিম তালুকদার চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্ট রিট করেন।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারি করেন। রুলে সিন্ডিকেট সভায় ১৮ জানুয়ারি দু’জনকে দেওয়া পদোন্নতি ও পদোন্নতির ভূতাপেক্ষ কার্যকারিতার সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা), উপ-উপাচার্য (প্রশাসন), ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার, সিন্ডিকেট সভার সচিব, বাংলা বিভাগের সভাপতি, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানসহ ১১ বিবাদীকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
এই রুলের জবাব না পেয়ে মঙ্গলবার পুনরায় হাইকোর্টে আরেকটি আবেদন করেন। এ আবেদনের শুনানি শেষে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সভাপতি ও উপাচার্য বরাবর করা রিটকারীদের আবেদন ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
ঢাকাটাইমস/০৯এপ্রিল/ইএস