কাতারে জসিমউদ্দিন নদবী স্মরণে আল-নূরের সভা

প্রকাশ | ১৩ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:১২

ঢাকাটাইমস ডেস্ক

কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মাওলানা হুসাইন মুহাম্মদ নাইমুল হক বলেছেন, ‘চট্টগ্রাম জামেয়া দারুল মা'আরিফ আল ইসলামিয়ার সহকারী পরিচালক ও আন্তর্জাতিক মুসলিম স্কলার্স ইউনিয়ন সদস্য ড. মাওলানা জসিমউদ্দিন নদবী ছিলেন পরিচ্ছন্ন অন্তরের একজন অনন্য ও উদ্যমী ইসলামি চিন্তাবিদ এবং সফল শিক্ষাবিদ। আল্লামা সুলতান যওকের হাতে গড়া এই শিষ্য আরবি ভাষার সুপণ্ডিতই ছিলেন না, বলতে গেলে তিনি ছিলেন আরবি ভাষার অনুরাগী প্রেমিক।  কোরআন সুন্নাহ ও রাসুলের ভাষার প্রতি অসাধারণ মমত্ববোধের কারণেই হয়তো আল্লাহ্ তাকে পুণ্যভূমি মক্কায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ ও তথায় সমাধিস্থ হওয়ার তাওফিক দিয়েছেন।’

কাতার আল নূর কালচারাল সেন্টার আয়োজিত ‘মাওলানা জসিমউদ্দিন নদবী রহ. জীবন ও কর্ম শীর্ষক’ আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

গত ১২ এপ্রিল শুক্রবার বাদ মাগরিব দোহার বিন যাইদ সেন্টারে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন আলনূর নির্বাহী পরিচালক মাওলানা ইউসুফ নূর। সালেহ নূরুন্নবী ও জিয়াউদ্দিন ফাহাদের যৌথ উপস্থাপনায় এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাতারস্থ চট্টগ্রাম সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুহাম্মদ হারুন, গোপালগঞ্জ সমিতির সভাপতি হাফেজ হাসিবুর রহমান, দোহা এরাবিয়ান এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপক নূরুল কবির চৌধুরী।

আলোচনায় অংশ নেন কাতার বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের ইমাম মাওলানা আবু তালেব ও আলনূর গবেষণা পরিচালক অধ্যাপক আমিনুল হক। স্বাগত বক্তব্য দেন আল নূর সমাজ কল্যাণ সহকারী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম।

মাওলানা হুসাইন মুহাম্মদ নাইমুল হক বলেন, ‘মাওলানা জসিমউদ্দিন নদবী তার ছাত্রদের অসম্ভব ভালোবাসতেন। আমার কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন ও গবেষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পেছনে তার অসামান্য অবদান ছিল। তারই প্রচেষ্টায় কওমি শিক্ষার্থীদের একাডেমিক উন্নয়নের জন্য দারুল মা'আরিফে প্রতিষ্ঠিত হয় আল্লামা ইউসুফ আল কারজাবি লাইব্রেরি। এই স্বাপ্নিক ও সদাতৎপর আলেমের মৃত্যুতে ইসলামি শিক্ষা ও চিন্তার জগতে সৃষ্ট শূন্যতা কাটিয়ে ওঠার তাওফিক আল্লাহ্ আমাদের দান করুন।’

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা ইউসুফ নূর বলেন, ‘মাওলানা জসিমউদ্দিন নদবী ছিলেন প্রাতিষ্ঠানিক সংকীর্ণতামুক্ত উদারমনা সমাজ হিতৈষী মহানুভব আলেমে দীন। আলনূর সেন্টারের উপদেষ্টা হিসেবে তার তার অনবদ্য ভূমিকা আমাদের প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।’

চট্টগ্রাম সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুহাম্মদ হারুন বলেন, ‘রত্নগর্ভা চট্টলার কৃতিমান আলেম মাওলানা জসিম নদবীর মৃত্যুতে ইসলামী দূনিয়া শোকে মুহ্যমান । তার মাগফেরাত কামনা ও স্মরণসভা আয়োজন করায় আলনূর সেন্টারের প্রতি চট্টগ্রামবাসীর পক্ষ থেকে রইল অশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।’

বিশেষ অতিথি হাফেজ হাসিবুর রহমান মাওলানা জসিমউদ্দিন নদবীকে ভালোমনের মানুষ হিসেবে উল্লেখ করে আবেগাপ্লুত কন্ঠে বলেন, ‘তার ন্যায় মহৎ চরিত্রের আলেম সমাজে বিরল।’

ব্যাংকার নূরুল কবির চৌধুরী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ইসলামিক ব্যক্তিত্ব মাওলানা জসিমউদ্দিন নদবীর জীবন যেমন কর্মময়, মৃত্যু এর চাইতে ও বেশি ঈর্ষণীয়।’

অধ্যাপক আমিনুল হক বলেন, ‘ড. জসিমউদ্দিন নদবীর ন্যায় আলোকিত মানুষগুলো আমাদের আলোর মিনার। ফিতনা ফাসাদ আক্রান্ত এই ঘোর দুর্দিনে তার অভাব প্রতিনিয়ত অনুভূত হবে এতে সন্দেহ নেই।’

মরহুমের স্মৃতিচারণ করে তার একান্ত ছাত্র মাওলানা আবু তালেব বলেন, ‘তার ন্যায় স্নেহবান আদর্শ শিক্ষকের সাহচর্য আমার জীবনের পরম পাওয়া। তিনি ছিলেন মানুষ গড়ার কারিগর।’

(ঢাকাটাইমস/১৩এপ্রিল/জেবি)