মিষ্টিমুখে বর্ষবরণ

সিরাজুম সালেকীন, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৪ এপ্রিল ২০১৯, ০৯:০৭

বাঙালির নববর্ষ উদযাপনে নানা অনুষঙ্গের সঙ্গে আছে বিশেষ ধরনের মিষ্টান্ন। স্বাদে যেমন অনন্য তেমনি তার রূপও মনোলোভা। কেনা যায় আবার অল্প পরিমাণে। ফলে রসনা বিলাসে বেশি টাকা খরচও করতে হয় না।

এসব খাবারের সিংহভাগ চিনির সিরা করে নানা মুন্সিয়ানায় তৈরি হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে চিনির সিরায় ডোবানো হয় অন্য উপকরণ। তবে মিষ্টি নয়, এমন কিছু উপাদানও রয়েছে।

নতুন বছরের মিষ্টান্নের মধ্যে আছে বাতাসা, কদমা, নাড়–, গুড় দিয়ে মাখানো খৈ, বালুসাই, বিভিন্ন প্রাণীর আদলে তৈরি খেলনা। আরো আছে বিন্নি ধানের খই। সারা বছরই টুকটাক বিক্রি হয়, তবে বৈশাখের শুরুতে চাহিদা বাড়ে প্রচুর।

এসব মিষ্টান্ন রাজধানীর আনাচে-কানাচে সব জায়গায় মেলে। জনসমাগম হয় এমন স্থানগুলোতে সারা বছরই বিক্রেতাদের আনাগোনা থাকে। তবে উৎসব-পার্বণে ভ্রাম্যমাণ আরো অনেক বিক্রেতার দেখা মেলে। আবার গত কয়েক বছর ধরে বৈশাখের উদযাপন ক্রমেই যখন বড় হচ্ছে, তখন এ সব মুখরোচক খাবারের চাহিদা তৈরি হয়েছে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে উপহার দেওয়ার চলের কারণে।

পুরান ঢাকার চকবাজারে পাইকারি দোকানগুলোতে বিক্রি হয় এসব পণ্য। যেখান থেকে খুচরা বিক্রেতা বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কিনে থাকে। এই মার্কেটের ব্যবসায়ী আহসান উল্লাহ বলেন, ‘সারা বছর এসব খাবারের চাহিদা না থাকলেও বৈশাখ ও পূজায় বেশ চাহিদা থাকে। বড় বড় অর্ডার আসে তার কাছে। আর সেগুলো বেশির ভাগ বিভিন্ন অফিস আদালত থেকে।’

‘খুচরা দামে এসব খাবার কিনে নিয়ে পরে ডালা বানিয়ে গিফট করে। তাছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বৈশাখী মেলা উপলক্ষে অনেক খুচরা ব্যবসায়ী আসেন এগুলো কিনতে। যারা ভ্যানে করে এসব খাবার রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ বিক্রি করেন তারাও এখান থেকে কিনেন।’

আহসান উল্লাহ বংশ পরম্পরায় এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। যখন ঢাকা শহরের ব্যবসায়িক জনপদ হিসেবে গড়ে ওঠে সদরঘাট তখন তার পূর্বপুরুষরাও এই এলাকায় এই ধরনের ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। মুড়ি, চিড়ার পাশাপাশি খৈ, বাতাসা ও কদমা বিক্রি করতেন তারাও। এখন আহসান উল্লাহর ছেলে ফারুকও এ ব্যবসায় যোগ দিয়েছেন।

চকবাজারের উর্দু রোডের সততা স্টোরের মালিক নিয়ামত আলী জানান, এখানে রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্রেতারাই বেশি আসেন। এ ছাড়া ভ্যানে করে যারা বিক্রি করেন, তারাও খাবারগুলো কিনে নিয়ে যান।

ঢাকা লাগোয়া জিনজিরায় কিন্তু বিক্রি আরো বেশি। সেখানকার দোকানগুলোতে বৈশাখ উপলক্ষে পসরা বসে এসব খাবারের। বিশেষ করে তিলা, কদমা, নকুল দানা, বাতাসা, মুরালি, নিমকি, চিড়ার মোয়া, খই, মুড়কি, নারিকেলের নাড়ু, গোল মিষ্টি ও নিমকি। আরো রয়েছে বাতাসার জীবজন্তু ও খেলনা। যেমনÑ হাতি, ঘোড়া, পাখি ইত্যাদি। মানভেদে এসব খাবারের দাম ভিন্ন ভিন্ন। এখানে ধানের খৈ প্রতিকেজি ৮০ টাকা থেকে ১২০ টাকা, গুড় মাখানো খৈ কেজিপ্রতি ১৪০ টাকা, বড় আকারের বাতাসা ১২০ টাকা কেজি, নকুল দানা ১২০ টাকা, তিলা ১৪০-১৬০ টাকা, কদমা ১২০ থেকে ১৫০ টাকা।

বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত তানভীর আহমেদ। তিনি কিনতে আসেন বাতাসা, নকুল দানা ও কদমা। তিনি জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে বেশ বড়সড় একটি অনুষ্ঠান প্রতি বছরই হয়। এবারও হবে, তাই এসব খাবার কিনতে আসা। খাবারগুলো সুন্দর করে সাজাতে নিয়েছে বাঁশের ডালা। বৈশাখের দিন আমন্ত্রিত শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে এসব খাবার ডালা গিফট করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/১৪এপ্রিল/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

ফিচার এর সর্বশেষ

কিডনি রোগ বাড়ছে শিশুদেরও! যেসব লক্ষণ দেখলেই সতর্কতা জরুরি

সস্তার পেয়ারার গুণে বশে থাকে ডায়াবেটিস-উচ্চ রক্তচাপসহ নানা জটিল রোগ

যে পাঁচ সমস্যায় আক্রান্তরা গুড় খাওয়ার আগে একবার ভাবুন, নইলে...

সাজেদুর রহমান শাফায়েতের স্বপ্ন পৃথিবী ঘুরে দেখা

খাওয়ার পরপরই চা পান উপকার না ক্ষতি? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা

জ্বরের মধ্যে যে পাঁচ খাবার খেলেই বিপদ! জানুন, সাবধান হোন

গরমে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে ডায়াবেটিস রোগীদের! সুস্থ থাকবেন যেভাবে

মুখে দুর্গন্ধের কারণে হা করতেও অস্বস্তি লাগে? সমাধান কী জানুন

লিভার ভালো রাখে লাউ! ওজন এবং উচ্চ রক্তচাপও থাকে নিয়ন্ত্রণে

কিডনি ভালো রাখে আমের পাতা! উচ্চ রক্তচাপও থাকে নিয়ন্ত্রণে

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :