পহেলা বৈশাখে বগুড়ার নিমাইদীঘিতে জামাইমেলা
পহেলা বৈশাখ মানেই আবহমান গ্রাম বাংলার চিরচেনা ঐতিহ্য। শহরের পাশাপাশি প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতেও ঘটা করে পালিত হয় দিনটি।
সকালে বগুড়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্যদিয়ে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান কর্মসূচি শুরু হয়।
পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে বগুড়া জেলার প্রায় প্রতিটি শহর ও গ্রামেই বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়। উৎসব চলে ঘরে ঘরে।
বগুড়া শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে নন্দীগ্রাম উপজেলার একটি গ্রামের নাম নিমাইদীঘি। প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে এই গ্রামের মানুষ আয়োজন করে ব্যতিক্রমধর্মী জামাই মেলা। হাজার হাজার দর্শনার্থী এই মেলায় এসে আনন্দ উপভোগ করে।
মেলাটির নাম যেহেতু জামাই মেলা, সেহেতু এই মেলার মূল আকর্ষণ ছিল বাহারি রকমের মিষ্টির। অন্যান্য দোকানগুলোর চেয়ে মিষ্টির দোকানে ক্রেতাদের ভিড় ছিল বেশি। এছাড়া ছোট ছেলে মেয়েদের জন্য নাগরদোলা, চড়কিসহ বড়দের আনন্দ উপভোগের জন্য মোটরসাইকেল খেলার আয়োজন করা হয়েছিল। এই মেলাকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরনের কাঠের আসবাবপত্র, তালপাখা, মেয়েদের কসমেটিকস বিভিন্ন ধরনের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছিল।
মেলায় ঘুরতে আসা মোস্তাফিজুর রহমান জানালেন, তার বাড়ি দুপচাঁচিয়া উপজেলায়। পহেলা বৈশাখ ও জামাই মেলা উপলক্ষ্যে তিনি শ্বশুরবাড়িতে দাওয়াত খেতে এসেছেন। ছয় বছর হলো তিনি বিয়ে করেছেন। এবার দিয়ে তিনবার তিনি এখানে এলেন। শ্বশুরবাড়ির লোকজন জামাই আদর করে তারপরেও জামাই হিসেবে তিনি সাত কেজি বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি কিনেছেন।
বিলকিস বেগম নামের আরেকজন জানান, পহেলা বৈশাখ এলে তার খুব ভালো লাগে। এইদিন মেলা হয় তাই ঈদের দিনের মতো বাবার বাড়িতে অনেকেই বেড়াতে আসে। ভাইবোন ও বান্ধবীদের সাথে দেখা হয়। খুব ভাল লাগে।
মেলার মিষ্টি ব্যবসায়ী তোজাম মিয়া জানান, আমি ১৫ মণ মিষ্টি নিয়ে এসেছিলাম। নয় মণের মতো বিক্রি করেছি। চাহিদা মতো দামে মিষ্টি বিক্রি করতে পেরে তিনি অনেক খুশি।
মেলা কমিটির সভাপতি মোজাম্মেল হক জানালেন, মেয়ে জামাইদের সম্মান প্রদর্শন করতেই শত বছর ধরে মেলাটির আয়োজন করা হয়। পহেলা বৈশাখের আনন্দ অনেক বাড়িয়ে দেয় এই মেলাটি। এই মেলা একদিনের জন্য হলেও এর আমেজ চলতে থাকে সপ্তাহব্যাপী। এই মেলার শেষের দিন উপস্থিত হয় শুধু নারীরা। মেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সার্বক্ষণিক তদারকি করছে।
(ঢাকাটাইমস/১৪এপ্রিল/এলএ)