কবিতায় ‘গোলাপ ফুল মার্কায়’ ভোট চাইলেন ইসি মাহবুব!

প্রকাশ | ১৪ এপ্রিল ২০১৯, ১৯:৩৪ | আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৯, ১৯:৪১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মাহবুব তালুকদারের আরেক পরিচয় তিনি একজন লেখক। বাংলা নববর্ষ উদযাপনে ইসি আয়োজিত অনুষ্ঠানে নিজের লেখা দীর্ঘকবিতা পড়ে শুনিয়েছেন তিনি। ৩০ ডিসেম্বরের ভোটের আগে নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে আলোচনায় আসা মাহবুবের কবিতায় রাজনৈতিক নানা অনুষঙ্গ উঠে এসেছে। এছাড়া কবিতায় তিনি কবিদের নিয়ে একটি দল গঠনের আবাহন জানিয়েছেন। চেয়েছেন গোলাপ ফুল মার্কায় ভোটও।

বাংলা নববর্ষ ১৪২৬ উদযাপনে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে আয়োজন করা হয় সাংস্কুতিক অনুষ্ঠানের। আর সেখানেই নিজের কবিতাটি পাঠ করে শোনান মাহবুব তালুকদার। এসময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম, শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদসহ নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকাটাইমস পাঠকদের জন্য মাহবুব তালুকদার কবিতাটির কিছু চুম্বক অংশ তুলে দেওয়া হলো-

আমার এখানে যে কবিতাটি পড়ার কথা তার নাম ঠিক করা হয়নি।/নাম ঠিক করা হয়নি কারণ, কবিতাটি আমি এখনও লিখিনি।/কবিতাটি লিখিনি কারণ আমার কলমে এক ফোঁটা কালি ছিল না।/কলমে কালি ছিল না কারণ কালি কেনার মত পয়সার বড় অভাব।

পয়সার বড় অভাব কারণ আমার কোনও লাইসেন্স পারমিট নেই।/লাইসেন্স পারমিট নেই কারণ কবিকে কেউ ব্যবসা দিতে চায় না।/কেউ ব্যবসা দিতে চায় না বলে কবিতা লেখা হলো না।/যে কবিতা লেখা হলো না তার নাম ঠিক করে কী লাভ বলো?/যে ছেলে ভূমিষ্ঠ হয়নি এখন তার আকিকা দিব কী ভাবে?

ভাইসব, এবার আসুন আমরা কবিদের একটা রাজনৈতিক পার্টি বানিয়ে ফেলি।/আসুন একজন কবিকে নেতা বানিয়ে তাকে দিয়ে পার্টির উদ্বোধন করাই।/আমাদের পার্টির নাম হবে কবিতাবাদী দল; কবিতা লীগ বা জাতীয় কবিতা পার্টি।.....

জনসভায় বক্তৃতার বদলে এবার থেকে কবিতা চালু হয়ে যাবে।/ছাত্রদের পাঠ্যপুস্তকে এখন থেকে শুধু কবিতা এবং একমাত্র কবিতাই বহাল থাকবে।/যারা গল্প পড়ে বা প্রবন্ধ লেখে তাদের ধরে ধরে আমরা জেলখানায় পাঠাবো।/কেউ কবিতার বিরুদ্ধাচারন করলে জনগনের আদালতে তার বিচার হবে।/আমাদের চেয়ারম্যান মহাকবির কাছ থেকে সবাইকে কাব্য প্রেমের দীক্ষা নিতে হবে।/ভাইসব আগামী ইলেকশনে কবিদের গোলাপফুল মার্কা বাক্সে ভোট দিবেন।/আমরা সারা দেশে এমন কবিতার চাষ করব যাতে বিদেশ থেকে আর খাদ্য আনতে হবে না।/আমরা মিডলইস্টে কবিতা সাপ্লাই করে তার বদলে তেল আনবো।/আমরা কয়ার কিংবা সনেট থেকে কবিতার অ্যাটম বোম তৈরি করবো।/কারও সঙ্গে যুদ্ধ বাঁধলে এমন সব কবিতা পড়ে শোনাবো, যাতে শত্রুপক্ষের সৈন্যদল যুদ্ধক্ষেত্র থেকে প্রাণ ভয়ে পালিয়ে যায়।/আমাদের অভ্যন্তরীন নীতি হবে কবিতার সার্ভভৌমত্বের প্রতি অবিচল আস্থা।.....

ভাইসব আমার কবিতা না পড়ার জন্য আপনারা যারা দুঃখিত হয়েছেন/তাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি আপনারা আর মাত্র কিছুদিন ধৈর‌্য ধরে অপেক্ষা করুন।/আমরা খুব শিগগিরই আপনাদের জন্য মহামূল্যবান কবিতা লিখবো।/আমাদের কবি পার্টি ইলেকশনে জিতে গেলে দেখেবো আমাদের কে ব্যবসা না দেয়।/ব্যবসা পেলেই আমার মতো কবিদের আর পয়সার অভাব হবে না।/পয়সার অভাব না থকলে ঘরে ঘরে প্রচুর কবিতার চাষ হবে।/কবিতার ফষল দিয়ে এবার আমরা সারা দেশে বিপ্লব ঘটিয়ে দিব।/ভাইসব আপনারা যারা যারা আমার কবিতা শুনতে চান/আগামী ইলেকশনে গোলাপফুল মার্কা বাক্সে ভোট নিয়ে আমাকে জয়যুক্ত করবেন।

ঢাকাটাইমস/১৪এপ্রিল/জেআর/ডিএম