রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে আবার শ্রমিক ধর্মঘট

প্রকাশ | ১৫ এপ্রিল ২০১৯, ১৮:৪৪

খুলনা ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

বকেয়া মজুরি প্রদান ও মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ নয় দফা দাবিতে খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত নয়টি পাটকলে ৯৬ ঘণ্টার ধর্মঘট শুরু করেছেন শ্রমিকরা।

সোমবার সকাল ৬টায় পাটকলের উৎপাদন বন্ধ ও ৮টা থেকে রাজপথ-রেলপথে অবরোধ করে এ ধর্মঘট শুরু করেন শ্রমিকরা। ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিন একইভাবে কর্মসূচি পালন করা হবে।

রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ ও পাটকল  শ্রমিক লীগের উদ্যোগে এ ধর্মঘট শুরু হয়েছে। এর আগেও দু’দফা পাটকলের উৎপাদন বন্ধ এবং রেলপথে অবরোধ করে আন্দোলন করেছিলেন শ্রমিকরা।

বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) অধীনে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা জোনে মোট ২৬টি পাটকল রয়েছে। তার মধ্যে চট্টগ্রাম জোনে রয়েছে নয়টি বড় পাটকল।

শ্রমিকরা বলছেন, বিজেএমসির আওতাধীন জুট মিলগুলোতে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে শ্রমিকদের মজুরি বকেয়া আছে। এছাড়াও ২০১৫ সালে ঘোষিত মজুরি কমিশন এখনও চালু করা হয়নি।

রাষ্ট্রায়ত্ত ক্রিসেন্ট জুটমিলের সিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন বলেন, মজুরি ও মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ নয় দফা  দাবিতে শ্রমিকরা ৯৬ ঘণ্টার ধর্মঘট শুরু হয়েছেন। দাবি মানা না পর্যন্ত আমরা এ কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।

বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগের খুলনা-যশোর অঞ্চলের আহ্বায়ক মো. মুরাদ হোসেন বলেন, সোমবার থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৪ ঘণ্টা করে টানা ৯৬ ঘণ্টা পাটকল ধর্মঘট এবং সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করা হবে। এরপর বিরতি দিয়ে আগামী ২৫ এপ্রিল গেটসভা এবং ২৭, ২৮ ও ২৯ এপ্রিল ৭২ ঘণ্টার পাটকল ধর্মঘটসহ প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ৬ ঘণ্টা করে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।

এদিকে পাটকল শ্রমিকদের ধর্মঘট শুরু হওয়ায় ভোর ৬ টা থেকে  খুলনা রেলওয়ে স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি। একই সঙ্গে নগরীর দৌলতপুর নতুন  রাস্তা মোড়ে  শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করায় খুলনা-যশোর মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।
খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত খালিশপুর, দৌলতপুর, ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, স্টার, ইস্টার্ণ, আলীম, জেজেআই ও কার্পেটিং মোট ৯টি জুট মিলের প্রায় ৩৩ হাজার শ্রমিক রয়েছেন। তাদের ৬ থেকে ১০ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া রয়েছে। আর্থিক সংকটের কারণে তাদের নিয়মিত মজুরি প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে মিলগুলোতে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার উৎপাদিত পাটজাত পণ্য অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

বিজেএমসির কর্তৃপক্ষ জানায়, খুলনা অঞ্চলের ৯টি পাটকলের শ্রমিকদের ৪২ কোটি টাকার মজুরি এবং কর্মচারী-কর্মকর্তাদের আরো ১০ কোটি টাকার বেতন বকেয়া রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৫২ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে।