জিএসপি ফাইন্যান্স থেকে ঋণ নিয়ে স্ত্রী-পুত্রসহ লাপাত্তা আনসার সিনহা

প্রকাশ | ১৬ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:৩৩ | আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:৪৭

বোরহান উদ্দিন

ইন্টারনেট ব্যবসার কথা বলে জিএসপি ফাইন্যান্স থেকে পাঁচ কোটি টাকার ঋণ নেয় আনসার উদ্দিন সিনহার সিনহা ইন্টিগ্রেটেড বিজনেস সার্ভিসেস লিমিটেড (এসআইবিএসএল)। ঋণ পরিশোধের সময়সীমা কয়েক বছর আগে শেষ হলেও কোনো সাড়া নেই লাপাত্তা প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার আনসার উদ্দিন সিনহাসহ অন্য পরিচালকদের। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির  কোনো অস্তিত্ব নেই বলেও জানা গেছে। ফলে এদের ঋণ দিয়ে এখন বিপাকে পড়েছে জিএসপি ফাইন্যান্স।

জানা গেছে,  দেশের বৃহৎ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান একমির মালিক সিনহা পরিবার। এই পরিবারের সদস্য আনসার উদ্দিন সিনহার মালিকানাধীন সিনহা ইন্টিগ্রেটেড বিজনেস সার্ভিসেস লিমিটেডের (এসআইবিএসএল) নামে দুই দফায় পাঁচ  কোটি টাকার ঋণ  নেয়া হয় জিএসপি ফাইন্যান্স কোম্পানির কাছ থেকে। ২০১১ সালের ২৬ মে মাসে প্রথম দফায় তিন কোটি ও একই বছরের ৩১ অক্টোবর মাসে দুই কোটি টাকার ঋণ নেয় প্রতিষ্ঠানটি। ৬০ কিস্তিতে তিন  কোটি ও ১৮ কিস্তিতে ঋণ পরিশোধের শর্ত ছিল।

প্রথমে হাতেগোনা কয়েকটি কিস্তিতে পরিশোধ করার পর থেকেই ঋণ পরিশোধে গড়িমসি শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। পরে ২০১৩ সালের মার্চে ঋণ গুলো পুন:তফসিল করা হয়। তবে এরপরও কিস্তি পরিশোধে সাড়া  দেয়নি এসআইবিএসএল। এরপর ২০১৪ সালের ১৭ জুন তাদেরকে আইনি  নোটিশ পাঠায় জিএসপি ফাইন্যান্স।  সে নোটিশেরও জবাব  দেয়নি আনসার সিনহার প্রতিষ্ঠান। তবে এরমধ্যে ২০১৪ সালে  কেবল ৪৬ লাখ টাকা পরিশোধ করে প্রতিষ্ঠানটি।

জানা গেছে, বর্তমানে আসল  এবং সুদ মিলে প্রতিষ্ঠানটির কাছে জিএসপির এখন  মোট পাওনা দাঁড়িয়েছে নয়  কোটি টাকা।

এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির  চেয়ারম্যানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে  চেক প্রত্যাখানের তিনটি মামলা হয়েছে ঢাকার চীফ  মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। অর্থ ঋণ আদালতে একটি মামলা করেছে জিএসপি ফাইন্যান্স কর্তৃপক্ষ।

এদিকে ইতিমধ্যে  চেক প্রত্যাখানের একটি মামলায় আনসার সিনহাসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে রায়ও হয়েছে। তাদের ছয় মাসের  জেল ও  চেকের পরিমাণ অর্থ জরিমানা করা হয়েছে রায়ে। বাকি মামলাগুলো বিচারাধীন আছে। প্রায় একবছর আগে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।

মোহাম্মদপুর  জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) মৃত্যুঞ্জয়  দে সজল ঢাকা টাইমসকে বলেন, এই মামলার বিষয়টি জানা  নেই। তবে খোঁজ নিয়ে  দেখবো। যদি  গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় অবশ্যই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হবে।

পরে পরিচালক  সৈয়দ জিসান আনোয়ার ছাড়া বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এরইমধ্যে  গ্রেপ্তার হওয়া আসামিও জামিনে মুক্তি  পেয়েছেন বলে জানা গেছে।

ঢাকা টাইমসকে সৈয়দ জিসান আনোয়ার বলেন, আমি এখন আর এই প্রতিষ্ঠানে পরিচালক হিসেবে  নেই। তবে জিএসপি ফাইন্যান্স  থেকে ঋণ নেয়ার বিষয়টি আমার জানা আছে। এই ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার রায়ও হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির  চেয়ারম্যান আনসার উদ্দিন সিনহার সঙ্গে কথা বলতে একাধিকবার চেষ্টা করলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তার ব্যক্তিগত বাংলালিংক নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া গেছে। একটি সূত্রে জানা গেছে, দেশে ব্যবসা বাণিজ্য থাকলেও এরা  বেশির ভাগ বিদেশে থাকেন।