হস্তান্তরের আগেই স্কুলভবনে ফাটল!

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৭ এপ্রিল ২০১৯, ১০:৫৫

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পৌরসভার বাওয়ার কুমারজানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন দুতলা ভবনের সিঁড়ি ও সানসেটে ফাটল দেখা দিয়েছে। উঠে যাচ্ছে ফ্লোরের পলেস্তারাও। ভবনটির কাজ শেষ হলেও তা হস্তান্তরের আগে ফাটল ও সিঁড়ির পলেস্তারা খসে পড়ায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সোমবার সরেজমিন গিয়ে নির্মাণকাজের এই ত্রুটি দেখা গেছে। বিদ্যালয়ের তদারকির দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শামসুদ্দিন ভবনটি নির্মাণে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন।

উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্র জানান, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চাহিদাভিত্তিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মির্জাপুর পৌরসভার ২৬নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুতলা ভবন নির্মাণ কাজের বরাদ্দ দেয়া হয়। ভবনটি নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৩৩ লাখ ৬৬ হাজার ১৩৫ টাকা।

মির্জাপুরের মেসার্স হাজী ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভবনটি নির্মাণের কাজ পায়। গত বছর ২০ আগস্ট ঠিকাদার ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন। ভবন নির্মাণ কাজে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নজরদারি না থাকায় ঠিকাদার নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই ভবনটিতে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করেছেন বলে বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষিকা জানান। এছাড়া সন্ধ্যার পর ছাদ ঢালাইয়ের কাজ করেছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।

বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী ফিরোজ মিয়া বলেন, নির্মাণ কাজের শ্রমিক স্থানীয় না হওয়ায় ঠিকাদারের ইচ্ছেমত কাজ করেছেন। সামান্য পতাকা স্ট্যান্ড সঠিক জায়গায় স্থাপনের কথা বললেও শ্রমিকরা তা করেননি।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তানিয়া রহমান ও রোকসানা আক্তার বলেন, নবনির্মিত ভবনটি হস্তান্তরের আগেই পলেস্তারা ও সিঁড়িতে ফাটল ধরে খসে পড়ছে। তারা বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে ভবন ধসের ঘটনা ঘটায় নবনির্মিত দ্বিতল ভবনের নিচতলায় ক্লাস করাতে মনে ভয় কাজ করে।

মির্জাপুর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম বলেন, ৩১ মার্চ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট দিতে গিয়ে দেখি ভোটারদের জুতার সঙ্গে পলেস্তারা উঠে যাচ্ছে।

ঠিকাদার নিম্নমানের কাজ করেছেন জানিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ারা বেগম ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আব্দুর রউফ দুলাল বলেন, বিদ্যালয়ের নবনির্মিত সিঁড়ির রেলিংয়ের এক অংশ ভেঙে পড়েছে। দোতলার জানালা খসে পড়েছে। এছাড়া ছাদের পলেস্তারা উঠে যাচ্ছে। বিষয়টি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করা হয়েছে বলে তারা জানান।

মেসার্স হাজী ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার মনিরুজ্জামান বলেন, ভবনটি নির্মাণে অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হয়নি। সঠিকভাবেই কাজ সমাপ্ত হয়েছে। সিঁড়ি, দু’তলার ফ্লোর ও জানালায় কিছু ত্রুটি দেখা দিয়েছে। হস্তান্তরের আগেই সংস্কার করা হবে বলে তিনি জানান।

বিদ্যালয়ের তদারকির দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শামসুদ্দিন বলেন, ভবনটি নির্মাণে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি দেখা দিয়েছে। ঠিকাদারকে দ্রুত সংস্কার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে মির্জাপুর উপজেলা প্রকৗশলী মো. আরিফুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল মালেকের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, অনিয়মের বিষয়টি তার জানা নেই। তবে খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

ঢাকাটাইমস/১৭এপ্রিল/প্রতিনিধি/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :