ওয়াসার পানি ফোটাতেই গচ্ছা ৩৩২ কোটি টাকার গ্যাস

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০১৯, ২০:৫৬ | প্রকাশিত : ১৭ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:৩৭
ফাইল ছবি

ঢাকা ওয়াসার ৯১ শতাংশ গ্রাহকই পানি ফুটিয়ে পান করেন। আর এই পানি ফোটাতেই বছরে বাসাবাড়িতে ৩৬ কোটি ৫৭ লাখ ৩৭ হাজার ঘনমিটার গ্যাস পুড়ছে। অর্থাৎ জ্বালানি বাবদ ব্যয় হচ্ছে ৩৩২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

দুর্নীতি বিরোধী বেসরকারি সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। বুধবার ‘ঢাকা ওয়াসা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রতিবেদনটি উম্মুক্ত করা হয়।

ওয়াসার ১০টি জোনের ২ হাজার ৭৬৮ জন ওয়াসার সংযোগ গ্রহণকারী থেকে তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে টিআইবি। সেখানে ২০ দশমিক ৬ শতাংশ গ্রাহক বছরে সবসময় পানি সরবরাহে ঘাটতির কথা বলেছেন।

টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এশিয়ার কোনও দেশে পানি ফুটিয়ে পান করা হয় না। ঢাকা ওয়াসাকে এ বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা দরকার।’

টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়, চাহিদা অনুযায়ী পানি না পাওয়ার হার বস্তি এলাকায় সবচেয়ে বেশি। সেখানে ৭১ দশমিক ৯ শতাংশ চাহিদা অনুযায়ী পানি পান না।

এছাড়া আবাসিক এলাকায় ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ, বাণিজ্যিক এলাকায় ৩৪ দশমিক ৯ শতাংশ ও শিল্প এলাকায় ১৯ শতাংশ চাহিদা অনুযায়ী পানি পান না।

সার্বিক সেবাগ্রহীতাদের ৪৪ দশমিক ৮ শতাংশ চাহিদা অনুযায়ী পানি পান না বলে টিআইবির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ওয়াসার অনিয়ম ও দুর্নীতি সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, সেবাগ্রহীতাদের ৮৬ দশমিক ২ ভাগ ওয়াসার কর্মচারী এবং ১৫ দশমিক ৮ ভাগ দালালকে ঘুষ দিয়ে থাকেন। এর মধ্যে পানির সংযোগ গ্রহণে ২০০ থেকে ৩০ হাজার টাকা, পয়ঃলাইনের প্রতিবন্ধকতা অপসারণে ৩০০ থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকা, গাড়িতে করে জরুরি পানি সরবরাহ করার ক্ষেত্রে ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, মিটার ক্রয়/পরিবর্তন করতে ১০০০ থেকে ১৫ হাজার টাাকা, মিটার রিডিং ও বিল সংক্রান্ত বিষয়ে ৫০ থেকে ৩ হাজার টাকা এবং গভীর নলকূপ স্থাপনে এক লাখ থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হয়।

প্রতিবেদনে টিআইবি বলছে, ওয়াসার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে বিভিন্ন সময়ে মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ করা হয়ে থাকে। এছাড়া বিশেষ ক্ষেত্রে বোর্ডের সিদ্ধান্ত উপেক্ষিত হয়। নিয়মবহির্ভূতভাবে পদায়ন ও বদলিতে সংস্থাটির অনিয়ম রয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ক্ষেত্রেও রয়েছে অনিয়ম। এছাড়া প্রশাসনিক কাজে সিবিএ’র অযাচিত হস্তক্ষেপ রয়েছে বলে গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে গ্রাহক সেবায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করে টিআইবি জানিয়েছে, সেবাগ্রহীতাদের (জুলাই-২০১৭-জুন ২০১৮ সময়কালে) ২৬ দশমিক ৯ ভাগ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন সেবায় ঢাকায় ওয়াসার সঙ্গে সরাসরি করলেও ৬১ দশমিক ৯ ভাগ অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার।

টিআইবির সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ঢাকা ওয়াসার ভিশন ও মিশন অনুযায়ী, নিরবচ্ছিন্নভাবে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার পানির চাহিদা পূরণে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব পানির উৎপাদন ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ঢাকা ওয়াসার সক্ষমতা ও উদ্যোগের ঘাটতি রয়েছে। পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন সেবার নিম্নমান এবং সেবা সম্পর্কে প্রায় এক-তৃতীয়াংশের বেশি সেবাগ্রহীতা অসন্তুষ্ট।

ঢাকাটাইমস/১৭এপ্রিল/ডিএম

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

সামরিক মহড়ায় বাংলাদেশে আসছে চীন আর্মি, নজর রাখছে ভারত

বাংলাদেশে বৃষ্টির নামাজের খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে

ন্যাপ বাস্তবায়নে উন্নত দেশগুলোকে সহায়তার আহ্বান

রবিবার খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শনিবারও চলবে ক্লাস

উপজেলা নির্বাচনে মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনের নির্দেশ ইসির

‘পৃথিবীর কোনো দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি পারফেক্ট নয়’  

ফুডগ্রেডবিহীন ড্রামে ভোজ্যতেল ব্যবহার বন্ধ না হওয়ায় উদ্বেগ

কৃষির সব স্তরে উন্নত প্রযুক্তি আবশ্যক: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়: রাষ্ট্রদূত

চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :