চবি প্রাণিবিদ্যা বিভাগে প্রভাষক নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশ | ১৮ এপ্রিল ২০১৯, ১৫:৪৪ | আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৯, ১৫:৪৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগে প্রভাষক নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি ওই পদের জন্য নেওয়া মৌখিক পরীক্ষাও বাতিল করে আবার পরীক্ষা নিতে চাকরিপ্রত্যাশী মো. এমদাদুল হকের আবেদন দুই সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে উপাচার্যকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার এমদাদুল হকের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। এমদাদুল তার বিভাগে এযাবতকালের সের্বোচ্চ ফলাফলের জন্য প্রধানমন্ত্রীর স্বর্ণপদক প্রাপ্ত।

রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

এমদাদুলের অভিযোগ, গত ২৭ মার্চ প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক পদে নিয়োগের সাক্ষাৎকারে অংশ নিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যান এমদাদুল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে পৌঁছানোর পর সাতজন শিক্ষার্থী পথ আটকে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের এক কোণে নিয়ে যায় এবং টাকা দাবি করে।

ময়মনসিংহের গৌরিপুরের আজিজুল হকের ছেলে এমদাদুল হক ২০০৮-২০০৯ শিক্ষাবর্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগে ভর্তি হন। ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় তিনি ৩ দশমিক ৮৮ সিজিপিএ পেয়ে বিভাগে প্রথম হন। এরপর ২০১২-২০১৩ শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্স পরীক্ষায় তার সিজিপিএ হয় ৩ দশমিক ৯৬। ওই ফলাফলের জন্য তাকে প্রধানমন্ত্রীর স্বর্ণপদক দেওয়া হয়।

জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানান, টাকা না দেওয়ায় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের এমদাদুলকে এক দফা এবং পরে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার প্যাগোডায় নিয়ে আরেক দফা মারধর করা হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে নিয়ে আবারও মারধর করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে বলা হয় তিনি (এমদাদুল) শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।

পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, প্রক্টর ও উপাচার্যকে জানালেও তারা কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় পুলিশ এমদাদুলকে হাটহাজারী থানায় নিয়ে যায়।

সেদিন বিকালে ওসি এসে পুরা ঘটনা শুনে দুঃখ প্রকাশ করেন। পরে থানার ডিউটি অফিসার তাকে একটি শার্ট এনে দিলে তিনি গায়ের ছেঁড়া কাপড় বদলে নিতে পারেন। ছাড়া পেয়ে এক বন্ধুর বাসায় চলে যান এমদাদুল।

এরপর ৩০ মার্চ উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন এমদাদুল। সেখানে তাকে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তাতে কোনো সাড়া না পেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।

জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘শুনানি শেষে আদালত আদেশে বলেছে, গত ৩০ মার্চ এমদাদুল হক যে আবেদনটি করেছিলেন ভিসি মহোদয়ের কাছে, সেটি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। একইসঙ্গে প্রাণিবিদ্যা বিভাগে প্রভাষকের দুটো খালি পদে কোনোভাবেই যেন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা না হয়, সে বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।’

চবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগ প্রতিষ্ঠার পর এমদাদুলের মতো রেজাল্ট আর কোনো শিক্ষার্থী করতে পারেননি জানিয়ে তাকে নিয়োগ পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ না দেওয়া দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করেন এ আইনজীবী।

শুনানির এক পর্যায়ে আদালত দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চলমান ‘অবক্ষয়ের’ বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বলেও জানান জ্যোর্তিময় বড়ুয়া।

ঢাকাটাইমস/১৮এপ্রিল/ডিএম