খালেদার প্যারোলের সঙ্গে শপথের সম্পর্ক নেই: হানিফ

প্রকাশ | ২০ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:২৫ | আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:২৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

‘বিএনপি থেকে নির্বাচিত সাংসদরা শপথ নিলে খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি দেয়া হবে’ এমন একটি গুঞ্জন ভেসে বেড়ালেও তা নাকচ করে দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। বলেছেন, খালেদা জিয়া দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, এর সঙ্গে নির্বাচিত সাংসদদের শপথ নেয়া কিংবা সংসদে যাওয়ার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

শনিবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতি রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হানিফ এসব কথা বলেন। 

হানিফ বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি, খালেদা জিয়া আদালতের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।  উনি কিন্ত রাজনৈতিক কারণে কারাগারে নন। আপনারা জানেন, ২০০৭ সালে ১/১১ এর  তত্ত্বাবধায়ক সরকার মামলা করেছিল দুর্নীতির অভিযোগে, সেই  সুনির্দিষ্ট  অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে দণ্ড দিয়েছে৷ তিনি দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদি হিসেবে কারাগারে আছেন।’

আওয়ামী লীগের এই মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি,  আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী একজন দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদির মুক্তির বিষয়টি আইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে। এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। দ্বিতীয় আরেক পন্থা আছে, সেটা হলো কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তার অপরাধ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন, সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করলে তিনি মুক্তি পেতে পারেন। এই দুটি পদ্ধতি ছাড়া আর কোনো পদ্ধতি আছে বলে আমাদের জানা নেই।’

প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি কারাবিধি অনুযায়ী হয়ে থাকে জানিয়ে হানিফ বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে বা বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে এখন অবধি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে কি না, আমাদের জানা নেই। তবে সাংবাদিকদের কথার পরিপেক্ষিতে আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যদি বেগম জিয়ার পক্ষ থেকে অথবা বিএনপির পক্ষ থেকে তার প্যারোলে মুক্তির জন্য আবেদন করা হয়, সেক্ষেত্রে ওনারা বিবেচনা করতে পারেন। এর সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।’

‘আর যারা জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হয়েছেন তাদের সংসদে যাওয়া না যাওয়ার সঙ্গে কোনো দণ্ডপ্রান্ত কয়েদির মুক্তি বা জামিনের বিষয়টি সম্পৃক্ত হতে পারে না।

জাতীয় সংসদে নির্বাচিত একজন সংসদ সদস্যের নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে তার সংসদে যাওয়া। যে ভোটাররা তাকে ভোট দিয়েছেন সেই ভোটারদের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে তার সংসদে যাওয়া উচিত। কারণ সেই ভোটারদের পক্ষে কথা বলা, ভোটারদের এলাকার উন্নয়নের জন্য কথা বলা, এলাকার সমস্যা দূরীকরণের জন্য কথা বলার জন্য এবং জাতীয় পর্যায়ে ভূমিকা রাখার জন্যই ভোটাররা তাকে ভোট দিয়েছেন। নিশ্চয়ই কোনো ভোটার কাউকে মুক্তির জন্য তাকে (এমপি) ভোট দেয়নি।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, ‘আমার মনে হয় প্যারোলে মুক্তির ব্যাপারে বিএনপি নেতারা যতখানি আগ্রহী, তার চেয়ে বেশি মনে হয় আমার সাংবাদিক বন্ধুরা আগ্রহী। তাদের কাছ থেকে বারবার এই প্রশ্নগুলো আসছে। বিএনপি নেতারা কখনো বলছেন না, তারা তার মুক্তির জন্য আবেদন করেছেন, আমাদের কাছেও এরকম কোনো তথ্য নেই।’

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান,  সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ,  বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য এসএম কামাল হোসেন, ইকবাল হোসেন অপু প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/২০এপ্রিল/জেবি)