ক্ষমা ও সৌভাগ্যের রজনী

আরিফুর রহমান
| আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০১৯, ১০:২২ | প্রকাশিত : ২১ এপ্রিল ২০১৯, ০৯:২৫

পবিত্র শাবান মাসের ১৪ তারিখের দিবাগত রাত মুসলিমদের জন্য এক বিশেষ রজনী। অত্যন্ত বরকতময় ও মহিমান্বিত বলে ইসলাম ধর্মে বিবেচিত। এ রাতে ইমানদার বান্দারা মহান সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে ক্ষমার পাশাপাশি সৌভাগ্য লাভ করেন। এ জন্য একে সৌভাগ্যের রজনীও বলা হয়।

আরবি ‘লাইলাতুল বারাত’ ফারসিতে ‘শবে বরাত’ হিসেবে অভিহিত। আরবি ‘লাইলাতুন’ ও ফারসি ‘শব’ অর্থ রাত বা রজনী, আর ‘বারাত’ অর্থ মুক্তি, নাজাত। ‘লাইলাতুল বারাত’ ও ‘শবে বরাত’ মানে মুক্তির রাত বা নিষ্কৃতির রজনী।

এই রাতে মুমিন বান্দাদের প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ বর্ষিত হয়। আল্লাহ পাক মানবজাতির জন্য তার রহমতের দরজা খুলে দেন। বান্দার ভাগ্যলিপি লেখেন। তাদের ভালো-মন্দ আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয় এই রাতে। নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘শাবানের ১৪ তারিখের রাতে আল্লাহ তায়ালা দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন এবং মুশরিক ব্যক্তি ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন।’ (বায়হাকি)।

তাই মুসলমানরা ইবাদত-বন্দেগি ও কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শাবান মাসের এই রাতটি পার করেন। আল্লাহর কাছে মার্জনা ও পানাহ চান। তার দরবারে নিজের সারা জীবনের দোষ-ত্রুটি, পাপ ও অন্যায় কাজের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

এ রাতে ইবাদত-বন্দেগির মধ্যে নিমগ্ন থাকা প্রতিটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানের প্রধান কাজ। এ রাতে তওবা-ইস্তেগফার করা, জীবিত ও মৃতদের পাপরাশি ক্ষমা লাভের জন্য প্রার্থনার উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, কবর জিয়ারত ও পরদিন নফল রোজা রাখার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সক্ষম হয়।

কিন্তু প্রতি বছর দেখা যায়, শবেবরাত ঘিরে কিশোর-তরুণরা বিশেষ করে শহরাঞ্চলে আতশবাজি ফুটিয়ে শবেবরাতের পবিত্রতা ও ভাবগাম্ভীর্য বিনষ্ট করে। এসব কাজ শবে বরাতের ইবাদত-বন্দেগিতে বিঘ্ন ঘটায়। এ ব্যাপারে প্রশাসন যথাযথ নজর রাখবে বলে আমরা আশা করি।

এই রাতকে অপ্রয়োজনীয় উৎসব-আনুষ্ঠানিকতায় রূপ দেয়া কোনোভাবেই ইসলাম সমর্থন করে না। প্রকৃতপক্ষে শবে বরাতের মাহাত্ম্য অনুষ্ঠানের আড়ম্বরতার মধ্যে নয়, বরং ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে আল্লাহর করুণা লাভের প্রয়াসই এর মূল কথা।

আমাদের দেশে শবেবরাতে মিষ্টি-পায়েস তৈরি এবং তা পাড়া-প্রতিবেশীসহ গরিবদের মধ্যে বিতরণ করার রেওয়াজ চলে আসছে বহুদিন ধরে। কেউ কেউ দান-খয়রাত করেন। এসবের মধ্য দিয়ে ইসলামের ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য ও সাম্যের মহান বারতা ঘোষিত হয় বলে আমরা মনে করি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজপাট বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা