ইস্টার সানডেতে শ্রীলংকায় সিরিজ বোমায় নিহত দেড় শতাধিক
প্রকাশ | ২১ এপ্রিল ২০১৯, ১৩:২৫ | আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৯, ১৮:৫৩
শ্রীলঙ্কায় তিনটি গির্জায় ইস্টার সানডে উপলক্ষে প্রার্থনারত খ্রিষ্টানদের ওপর এবং তিনটি পাঁচ তারকা হোটেলে সিরিজ বোমা হামলায় দেড় শতাধিক নিহত এবং অর্ধ সহস্রাধিক আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অন্তত নয় জন বিদেশী রয়েছেন। দেশটির রাজধানী কলম্বোর এসব স্থাপনায় রবিবার স্থানীয় সময় সকালে এই ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে এএফপি।
শ্রীলঙ্কা পুলিশ জানিয়েছে, কলম্বোর কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন হোটেল এবং গির্জায় বোমা হামলা চালানো হয়েছে। হামলাকারীদের আরও দুটি গির্জায় হামলার টার্গেট ছিল। সকাল পৌনে নয়টার দিকে বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ এ হামলার দায় স্বীকার করেনি।
বিস্ফোরণের ঘটনার পর জরুরি বৈঠক ডেকেছে শ্রীলংকা সরকার। এছাড়া ঘটনাস্থলগুলোতে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা। এক টুইট বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন অর্থনৈতিক সংস্কার ও জনসচিব মন্ত্রী হারশা ডি সিলভা।
দেশটির প্রেসিডেন্ট মৈতিপালা সিরিসেনা আকস্মিক ও ঘটনায় বিস্মিত হয়েছেন এবং সকলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রথম বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে কলম্বোর সেন্ট অ্যান্থনি এবং নেগোম্বো শহরের কাটুয়াপিতিয়ার সেন্ট সেবাস্টিয়ান গির্জায়।
সেন্ট সেবাস্টিয়ান গির্জার ফেসবুক পেজে এক পোস্টে বলা হয়েছে, আমাদের গির্জায় বোমার হামলা হয়েছে। দয়া করে আসুন এবং সহযোগীতা করুন। আপনার পরিবারের কোনো সদস্য এখানে থাকতে পারে।
এছাড়া রাজধানীর শাংরি লা হোটেল, সিনামন গ্রান্ড ও কিংসবুরি পাঁচ তাঁরা হোটেলেও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সবগুলো বিস্ফোরণের ঘটনা প্রায় একই সময়ে ঘটেছে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনার পর শ্রীলংকার সকল সরকারি স্কুল ২২ ও ২৩শে এপ্রিল বন্ধ থাকবে বলে এক ঘোষণায় জানিয়েছেন দেশটির শিক্ষামন্ত্রী আকিলা ভিরাজ। নতুন বছর উদযাপন আর ইস্টার সানডের বন্ধের পর সোমবার থেকে সকল স্কুল খোলার কথা ছিল।
কলম্বোর আর্চ বিশপ জানিয়েছেন, ইস্টার সানডে উপলক্ষে সন্ধ্যার সময় যেসব জমায়েত অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল সেগুলো স্থগিত করা হয়েছে। দেশটির পুলিশ এবং সকল নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
গির্জা ও হোটেলে বিস্ফোরণের পর দেশজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করেছে শ্রীলংকা। এর অংশ হিসেবে দেশটির প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। রাষ্ট্রীয় ডেইলি নিউজ বলছে ব্যাপকভাবে মোতায়েন করা হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। এর মধ্যে বেশ কিছু ইমারজেন্সি টিমও রয়েছে।
শ্রীলঙ্কা মূলত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদেরই দেশ। দেশে খ্রিস্টধর্মে বিশ্বাসী ক্যাথলিকদের সংখ্যা ছয় শতাংশ মাত্র। ইস্টারের প্রার্থনার কারণে গির্জায় বেশ ভিড় ছিল, তাই এই নির্দিষ্ট সময়টাকেই জঙ্গিরা বেছে নিয়েছে বলে মত কলম্বো পুলিশের।
ঢাকা টাইমস/২১এপ্রিল/একে