পদ্মা যাবে চাঁপাই, বনলতায় উঠলেই খাবার-ওয়াইফাই

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ২৩ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:১৫

এখন ঢাকা-রাজশাহী রুটে চলাচল করে আন্তঃনগর পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেন। তবে ট্রেনটি এবার রাজশাহী ছাড়িয়ে যাবে আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত।

আগামী বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল বহুল প্রত্যাশিত রাজশাহী-ঢাকা বিরতিহীন ট্রেন বনলতা এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করতে রাজশাহীতে আসছেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। একই অনুষ্ঠানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-ঢাকা রুটে পদ্মা এক্সপ্রেস চলাচলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণাও দেবেন তিনি।

রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) খোন্দকার শহিদুল ইসলাম জানান, চাপাইনবাবগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের অবকাঠামোগত কিছু অসুবিধায় পদ্মার বাণিজ্যিক চলাচল শুরু হবে কিছুদিন পর।

জিএম বলেন, গন্তব্যে পৌঁছানোর পর ট্রেনের পরিচ্ছন্নতার প্রয়োজন পড়ে। ট্রেন পরিচালনায় নিয়োজিতদের বিশ্রামও জরুরি। চাঁপাইনবাবগঞ্জে এই দুটি বিষয় নিশ্চিত করতে কিছু অবকাঠামো নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে। নির্মাণকাজ শেষে হলে যত দ্রুত সম্ভব চাঁপাইনবাবগঞ্জ-ঢাকা রুটে পদ্মা এক্সপ্রেসের বাণিজ্যিক চলাচল শুরু হবে। আর যাত্রী টানতে প্রস্তুত করা হচ্ছে এ রুটের প্রথম ও একমাত্র বিরতিহীন বনলতা এক্সপ্রেসও।

তিনি জানান, বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনে ভ্রমণ করলেই যাত্রীদের দেওয়া হবে খাবার। এই খাবারের মূল্য হবে ১৮০ টাকা। এখন এই খাবার সৌজন্যমূলক বলা হলেও ট্রেনের ভাড়ার সঙ্গে সমপরিমাণ অর্থ যোগ করে টিকিটের মূল্য নির্ধারিত হবে। সরকারি একটি সংস্থার সহযোগী প্রতিষ্ঠান খাবারের প্যাকেট সরবরাহ করবে। যাত্রীদের যে খাবার পরিবেশন করা হবে তা রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকজন কর্মকতা খেয়ে দেখেছেন। দাম অনুসারে খাবারের মান ভালো।

এদিকে এই মুহূর্তে বনলতার উদ্বোধন ঘিরে ব্যস্ত রেলের বিভিন্ন বিভাগ। ইতোমধ্যে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা ১২টি ট্রেনের বগি বুঝে পেয়েছে ঈশ্বরদী ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন বিভাগ। বগিগুলোর পরীক্ষামূলক চলাচল, জ্বালানী, বিদ্যুৎ সংযোগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ করেছেন তারা। ট্রেনটি দিনের বেলায় চলাচল করবে। সে কারণে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বার্থের দরকার পড়ছে না আপাতত।

ওয়াগন বিভাগ সূত্র জানায়, ট্রেনটিতে সংযুক্ত রয়েছে উড়োজাহাজের মতো বায়োটয়লেট। এ কারণে মলমূত্র আর রেললাইনের ওপরে পড়বে না। ট্রেনটিতে থাকছে রিক্লেনার চেয়ার। আছে ওয়াইফাই সুবিধা। প্রতিটি বগিতে রয়েছে এলইডি ডিসপ্লে। যার মাধ্যমে স্টেশন ও ভ্রমণের তথ্য প্রদর্শন করা হবে। কিন্তু থাকছে না শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোনো ধরনের স্লিপিং বার্থ। রেল বিভাগের ভাষ্য, ট্রেনটি দিনে চলাচল করায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বার্থের দরকার পড়ছে না আপাতত।

ঈশ্বরদীর রেলের ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন বিভাগের ইনর্চাজ একেএম গোলাম হাক্কানি জানান, নতুন ট্রেনের ১২টি বগিতে আসন রয়েছে ৯৪৮টি। এর মধ্যে সাতটি শোভন চেয়ারের বগিতে ৬৬৪টি, দুটি এসি বগিতে ১৬০টি, একটি পাওয়ার কারে ১৬টি, দুটি গার্ডব্রেকে ১০৮টি আসন থাকছে। ট্রেনটিতে থাকছে একটি খাবারের বগিও।

রেলের ডিজেল ও লোকমোটিভ বিভাগে ঈশ্বরদীতে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইনচার্জ আবু উসমান জানান, বনলতা এক্সপ্রেসের বগি নতুন হলেও ইঞ্জিন পুরনো। ২০১৩ সালে ভারত থেকে আমদানি করা দুটি ভালো মানের ইঞ্জিন দিয়ে চলাচল করবে ট্রেনটি। সোমবার ইঞ্জিন দুটি সৈয়দপুর রেল কারখানা থেকে ঈশ্বরদী জংশনে পৌঁছেছে। ঘন্টায় ট্রেনটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ৯০ থেকে ৯৫ কিলোমিটার।

তবে ট্রেনের বগি ও ইঞ্জিনের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হলেও এ পর্যন্ত নির্ধারিত হয়নি টিকিটের মুল্য। রেল বিভাগের ধারণা, টিকিটের আগের দামের তুলনায় ১০ শতাংশ বাড়তে পারে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জিএম বলেন, টিকিটের দাম নির্ধারণের কোনো সিদ্ধান্ত অফিসিয়ালি তারা জানেন না। দু‘একদিনের মধ্যে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।

রাজশাহী-ঢাকা রুটে এখন আন্তঃনগর পদ্মা এক্সপ্রেস, ধূমকেতু ও সিল্কসিটি এক্সপ্রেস চলাচল করে। এর মধ্যে পদ্মা এক্সপ্রেস প্রতিদিন বিকেল চারটায় রাজশাহী থেকে ঢাকা অভিমুখে ছেড়ে যায়। রাত ৯টা ৪০ মিনিটে পৌঁছায় গন্তব্যে। এরপর রাত ১১টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসে রাজশাহীর উদ্দেশে। যাত্রাপথে বিলম্ব না হলে রাজশাহী স্টেশনে পৌঁছায় ভোর ৪টা ৪৫ মিনিটে। একই সময়েই চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে চলাচল শুরু করতে যাচ্ছে ট্রেনটি। আর ২৫ এপ্রিল এ রুটে বনলতা এক্সপ্রেসের উদ্বোধন হলে চলাচলকারী ট্রেনের সংখ্যা হবে চারটি।

(ঢাকাটাইমস/২৩এপ্রিল/ব্যুরো/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :