মোবাইল ফোনের ইতিবৃত্ত

প্রকাশ | ২৩ এপ্রিল ২০১৯, ১৩:০১

আসাদুজ্জামান, ঢাকাটাইমস

মোবাইল ফোন ছাড়া এখন একটি মুহূর্ত ভাবা যায় না। কিন্তু ২০ বছর আগেও এর অস্তিত্ব ছিল না। গত দুই দশকে যেভাবে এর উত্থান ঘটেছে অন্য কোনো উদ্ভাবন এত বিকশিত হয়নি। 

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জেগেছে মোবাইল ফোন কবে, কখন আবিষ্কৃত হয়েছে? এর উত্তর খুঁজতে হলে ১৯০৮ সালে ফিরে যেতে হবে। ওই বছর যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকিতে ওয়্যারলেস টেলিফোনের জন্য একটি প্যাটেন্ট ইস্যু করা হয়। ভাবা হয়, তখনই সর্বপ্রথম মোবাইল ফোনের চিন্তা কারো মাথায় আসে। কিন্তু ওয়্যারলেস টেলিফোনের ওই প্যাটেন্ট আলোর মুখ দেখেনি। এরপর কেটেছে তিন যুগ। ১৯০৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টেলিকম কোম্পানি এটি অ্যান্ড টি মোবাইল ফোনের জন্য একটি বেজ স্টেশন তৈরি করতে সক্ষম হয়। 

শুরুর দিকে মোবাইল বলতে ছিল একটি টু ওয়ে রেডিও বা ওয়াকিটকি। যেটা দিয়ে কেবলমাত্র আপৎকালীন জরুরি কাজ যেমন দমকলকর্মী, পুলিশের শরণাপন্ন হওয়া কিংবা অ্যাম্বুলেন্স ডাকার কাজে ব্যবহৃত হতো। এভাবে কেটেছে কয়েক বছর। 

প্রথম বাণিজ্যিক ফোন
১৯৭৩ সালের ৩ এপ্রিল মটোরোলা সবার আগে বাণিজ্যিকভাবে মোবাইল ফোন উৎপাদন করতে সক্ষম হয়। সেটি ছিল দুনিয়ার ওয়ান জি মোবাইল ফোন বা জিরো জেনারেশন মোবাইল ফোন। বর্তমানে সারা বিশ্বে ফোর জি ও থ্রি জির নেটওয়ার্ক বিস্তৃত। চালু হয়েছে ফাইভ জি। 

বলা হয়ে থাকে, মটোরোলার হাত ধরেই পৃথিবীতে মোবাইল ফোনের উদ্ভব। এটি তৈরির কাজটিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন মটোরোলার মহাব্যবস্থাপক মার্টিন কুপার। 

প্রতিষ্ঠানটির উদ্ভাবিত প্রথম মোবাইল ফোনটির ওজন ছিল ১.১ কিলোগ্রাম। মোবাইল ফোনের প্রথম বাণিজ্যিক সংস্করণ বাজারে আসে ১৯৮৩ সালে, ফোনটির নাম ছিল মটোরোলা ডায়না টিএসি এইট জিরো জিরো জিরো এক্স।

এরপর ১৯৮২ সালে ইউরোপের ১১টি দেশের প্রকৌশলী এবং প্রশাসকরা সুইজারল্যান্ডের স্টকহোমে একত্রিত হন। তারা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করার ব্যাপারে সম্মত হন। এভাবেই মোবাইল ফোনের উত্থান ঘটতে থাকে, যা ছড়িয়ে পড়ে যুক্তরাজ্যেও।

দুই যুগ পরে আসে বাংলাদেশে
১৯৮৭ সালে গঠিত হয় জিএসএম। ১৯৯২ সালে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এসএমএস বা ক্ষুদে বার্তার প্রচলন শুরু হয়। ধীরে ধীরে মোবাইল ফোনে বিস্তার ঘটে এশিয়াতেও। ১৯৯৩ সালে বাণিজ্যিকভাবে পৃথিবীর অনেক দেশেই মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হয়। সে বছরের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশে মোবাইল ফোন প্রথম চালু হয়। হাচিসন বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (এইচবিটিএল) ঢাকা শহরে এএমপিএস মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইল ফোন সেবা শুরু করে।

বর্তমানে মোবাইল ফোন কেবলমাত্র যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যমই নয়, এটি এখন বিনোদন, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা এমনকি গবেষণার হাতিয়ারও। 

এর মাধ্যমে ইন্টারনেটের যে জাল সারা পৃথিবীতে বিস্তৃত হয়েছে তাতে সংযুক্ত আছে ৫০০ কোটিরও বেশি মানুষ।

(ঢাকাটাইমস/২৩এপ্রিল/এজেড)