সরকার উৎসাহ-উচ্ছ্বাসহীন: সিপিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক
| আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:৫৬ | প্রকাশিত : ২৩ এপ্রিল ২০১৯, ১৫:১৭

টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম ১০০ দিনে কোনও উদ্যোগই দেখছে না বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি। সংস্থাটির মূল্যায়নে, এ সরকারের প্রথম ১০০ দিন উৎসাহ ও উচ্ছ্বাসহীন।

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বর্তমান সরকারের প্রথম ১০০ দিন পর্যালোচনা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সিপিডির সম্মানিত ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

দেবপ্রিয় বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম সরকারের প্রথম ১০০ দিনে বড় কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কিন্তু দেখলাম একটি গতানুগতিকতা। নতুনভাবে কোনো উদ্যাগ নিতে আমরা দেখতে পেলাম না। বরং এই ১০০ দিনে একটি মিশ্র ইঙ্গিত লক্ষ্য করা গেছে। সুদের হারে ছাড় দেওয়াসহ নানান ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এতে করে বিনিয়োগ বাড়বে না।’

গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের পর টানা মেয়াদে সরকার গঠন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচনে ২৯৮ আসনের মধ্যে ২৫৭টিতে জয় পায় আওয়ামী লীগ। আর জোটগতভাবে তারা বিজয়ী হয় ২৮৮ আসনে। অন্যদিকে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি ও তাদের জোটসঙ্গীরা সব মিলিয়ে মাত্র সাতটি আসনে জয় পায়।

সিপিডির এই ফেলোর মূল্যায়নে সাম্প্রতিক সময়ে যত নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশিত হয়েছে আওয়ামী লীগের গত নির্বাচনী ইশতেহার তার মধ্যে সব থেকে সুচিন্তিত, সুলিখিত এবং সুগঠিত।

তবে সরকারকে কোথাও যেন একটি প্রতীত গোষ্ঠি করায়ত্ব করে নীতি নির্ধারণ করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘নতুন সরকার যখন নতুনভাবে আসে, তখন সে বিগত সময়ের বিভিন্ন অভিজ্ঞতাকে ধারণ করে নতুন ধরনের উদ্যোগ নেয়। সেই উদ্যোগটা তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি।’

‘শাসক দল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে- কোনো রকম দুর্নীতি তারা সহ্য করবে না। কিন্তু আমরা দেখছি রাষ্ট্রযন্ত্রের ভেতরে, অন্যান্য সামাজিক সেবার ক্ষেত্রে সেই দুর্নীতি প্রকটভাবে রয়েছে। আমাদের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি পরিবর্তনের, দিন বদলের। আর ওই বদলকে আটকে রাখছে এমন একটি গোষ্ঠী যারা এই দুর্নীতি থেকে সুবিধা ভোগ করছে।’

রাষ্ট্রযন্ত্রের সঙ্গে থাকা এমন সুবিধাভোগী সম্প্রদায় রাজনৈতিক পরিবর্তনের শক্তিকে সামনে আসতে দিচ্ছে না মত দিয়ে দেবপ্রিয় বলেন, ‘এটাকে যদি সমাধান করা না যায়, তাহলে আওয়ামী লীগের সুচিন্তিত, সুলিখিত ও সুগঠিত ইশতেহার কাল্পনিক দলিল হিসেবেই ইতিহাসে স্থান পাবে।’

এ অর্থনীতিবিদের মতে, বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতার জন্য যে ধরনের কাঠামোগত সংস্কার দরকার ছিল, তার কিছুই হয়নি।

তিনি বলেন, ‘উন্নয়নের যে ধারণা তার সঙ্গে নীতি প্রণয়নের ধারণার অসঙ্গতি দেখা যাচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের যে ধরনের ভূমিকা সেটাও আমরা দেখতে পারছি না।’

‘এই সরকারের প্রথম ১০০ দিনে আমরা আশা করেছিলাম অসঙ্গতিগুলো দূর করা যাবে। কিন্তু আমরা সে ধরনের সচেতনতাও দেখিনি, পদক্ষেপও দেখিনি।’

জিডিপি প্রবৃদ্ধি গণনা পদ্ধতির সমালোচনা করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘আমরা সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে দেখছি প্রবৃদ্ধি-নির্ভর অর্থনৈতিক আলোচনা। অথচ অর্থনৈতিক তত্ত্বের সাম্প্রতিককালের চিন্তা দেখলে দেখা যাবে, সকলেই বলবে প্রবৃদ্ধি গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু যথেষ্ট না। এটা অর্থনীতি শাস্ত্রের দ্বৈতজ্ঞান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।’

‘সাম্প্রতিককালে অর্থনৈতিক যে প্রবৃদ্ধি তা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত উঁচু, প্রশংসনীয় এবং অনেকের কাছে ঈর্ষণীয়। তবে যেটুকু উন্নয়ন হয়েছে তাতে ব্যক্তিখাতের বাড়তি কোনো ভূমিকা আমরা দেখিনি। এই উন্নয়নের জন্য যে ধরনের কর আহরণ দরকার তাও আমরা দেখলাম না। ব্যক্তিখাতে যে ধরনের ঋণপ্রবাহ বাড়ার কথা তাও আমরা দেখলাম না।’

প্রবৃদ্ধির অনুমিতি সঠিক যেন হয় এবং সেটা থেকে যে ধরনের তাৎপর্য আসে তা যেন বাংলাদেশের নীতিকে সঠিকভাবে আগামীদিনে পরিচালিত করে সেটাই তাদের আকাঙ্ক্ষা বলে জানান দেবপ্রিয়।

ঢাকাটাইমস/২৩এপ্রিল/ডিএম

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

স্বস্তি নেই মাছ-মাংসে, ফের বাড়ছে আলু-পেঁয়াজের দাম 

ট্রেনে ঈদযাত্রা: ৮ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি শুরু

ঢাকায় কর দিয়ে ২৬৮০ বিয়ে 

সংরক্ষিত আসনের এমপিদের মধ্যেও সংখ্যায় এগিয়ে ব্যবসায়ীরা: সুজন

মানবাধিকার ও ভোক্তা অধিকার রক্ষায় গণমাধ্যমের ভূমিকা জরুরি: ড. কামাল উদ্দিন

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে রেলকে গড়ে তুলতে হবে: রেলমন্ত্রী

ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার

জিম্মি নাবিকদের মুক্তির আলোচনা অনেকদূর এগিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ডিএনসিসি কার্যালয় সরানোর মধ্য দিয়ে কারওয়ান বাজার স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু 

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :