রানা প্লাজা ট্রাজেডি: বিচার কতদূর?

নিজস্ব প্রতিবেদক
 | প্রকাশিত : ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:২২

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে সাভারে আট তলা রানা প্লাজা ভেঙে পড়ে ১১শ’র বেশি পোশাক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনা ছিল শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্ব-ইতিহাসেরই অন্যতম ভয়াবহ শিল্প-দুর্ঘটনা। সেই ট্রাজেডির ছয় বছর পূর্ণ হল আজ। কিন্তু একে কেন্দ্র করে করা মামলাগুলোর একটি ছাড়া বাকি কোনোটারই আজও নিষ্পত্তি হয়নি।

রানা প্লাজা ধসের ঘটনার পর মামলা হয়েছে মোট ১৪টি। এর মধ্যে রয়েছে অবহেলা-জনিত মৃত্যুর অভিযোগে পুলিশের মামলা, রাজউকের করা ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘন এবং নিহত একজন পোশাক শ্রমিকের স্ত্রীর দায়ের করা খুনের মামলা।

ঘটনার পরেই সাভার থানা পুলিশ একটি মামলা করে। পরে একজন শ্রমিকের স্ত্রীও খুনের মামলা করলে তদন্তের পর দুটি মামলা একটিতে রূপ নেয়। অন্য আরেকটি মামলা হয়েছিল ভবন নির্মাণ সম্পর্কিত। বাকী এগারটি মামলা করেছিল কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।

এসব মামলার দিকে নজর রাখছিলেন বাংলাদেশের লিগাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট। সংস্থাটির আইন শাখার উপপরিচালক বরকত আলী বলেন, ‘এসব মামলার কোনোটিরই চূড়ান্ত ফল আসেনি। তবে দুদকের মামলায় সাজা হয়েছে, যদিও সেটি ছিল ভিন্ন মামলা।’

তিনি বলেন, ‘সব মামলার আসামিরা একই। অর্থাৎ একই ব্যক্তির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছিল ভিন্ন ভিন্ন অভিযোগে। এখন শ্রম আদালতে এগারটি মামলা বিচারাধীন আছে। বিচারিক আদালতে ফৌজদারি মামলা ও ক্ষতিপূরণের মামলাও বিচারাধীন।’

অথচ রানা প্লাজার বিপর্যয়ের পরপরই ‘অবহেলা জনিত’ মৃত্যুর অভিযোগে মামলা করেছিল সাভার থানা পুলিশ, যাতে রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা ও ওই ভবনে থাকা পোশাক কারখানার মালিকসহ ২১ জনকে আসামি করা হয়। আর ইমারত আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সোহেল রানা ও তার বাবাসহ মোট আসামির সংখ্যা ১৮ জন।

মামলাগুলোতে বিভিন্ন সময়ে সোহেল রানা ও তার পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও সাভারের জনপ্রতিনিধি, প্রকৌশলী, গার্মেন্টস মালিক ও কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের জেলে যেতে হলেও এখন তারা সবাই জামিনে আছেন।

পরে তদন্ত শেষে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ভবন মালিক, গার্মেন্ট মালিক, সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন স্তরের ৪১ জনের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগ এনে আদালতে অভিযোগ পত্র দেয়া হয়। কিন্তু বিচারের ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি নেই।

মোট ৪১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দেয়া হয়েছিল এবং এর মধ্যে দুইজন মারা গেছেন। সাত জন এখনো পলাতক। সোহেল রানা ছাড়া আর কেউ জেলে নেই। বাকী সবাই জামিনে আছেন। ২০১৬ সালে আদালতে যে ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছিল তাদের ৩৮ জনের বিরুদ্ধেই খুনের অভিযোগ আনা হয়েছিল।

রানা প্লাজা ধসের ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিল পোশাক খাতে কর্মরত ১১৩৬ জন শ্রমিক। এর মধ্যে ২৯১ জনকে ডিএনএ নমুনা দেখে দাফন করা হয়েছিলো জুরাইন কবরস্থানে। আহত হয়েছিল আরও অন্তত ১১৬৯ জন। জীবিত উদ্ধার হয়েছিল ২৪৩৮ জন।

ঢাকাটাইমস/২৪এপ্রিল/এএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :