আসছে কাঁঠালের দিন

তানিয়া আক্তার, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ১০:৪৯ | প্রকাশিত : ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ১০:৩৬

আর ক’দিন পরেই জ্যৈষ্ঠ মাস। আর এ মাসটিতে পাকবে নানা ফলফলাদি। এর মধ্যে অন্যতম কাঁঠাল। জাতীয় ফল কাঁঠাল পুষ্টিগুণেও অসামান্য। এরই মধ্যে বাজারে উঠতে শুরু করেছে ফলটি। বাংলাদেশের সর্বত্রই কমবেশি কাঁঠাল পাওয়া যায়। ফল হিসেবে ভক্ষণের পাশাপাশি সবজি হিসেবেও খাওয়ার উপযোগী কাঁঠাল। তবে সঠিক রোপণ এবং এর পরবর্তী পরিচর্যার অভাবে কমে যেতে পারে এর গুণাগুণ ও স্বাদ। জেনে নেওয়া যাক কাঁঠাল বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যার খুঁটিনাটি।

যতনে রোপণ করি

ভালো মানের বীজ থেকে একটি সবল চারা জন্ম নেয়। তাই বীজের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। সদ্য খাওয়া কাঁঠালের বীজ দ্রুত বীজতলা কিংবা পলিব্যাগেই স্থাপন করে নিতে হবে। তাহলে বীজের মান ভালো থাকবে। তা না হলে দীর্ঘদিন বীজ ঘরে রেখে দিলে শুকিয়ে অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। চারা গজানোর পর সবল চারাটি রেখে বাকিগুলো তুলে ফেলতে হবে। সেক্ষেত্রে সবল চারাটির প্রধান শেকড় ছিঁড়ে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এবার রোপণের পালা।

চারা রোপণের জন্য জৈষ্ঠ্য-শ্রাবণ মাস আদর্শ সময়। বর্গাকার কিংবা আয়তাকার পদ্ধতিতে মাটি খুঁড়ে রোপণ করতে হবে। তবে রোপণের পূর্বে দুই থেকে তিন দিন আগেই মাটি খুঁড়ে রাখতে হবে। পচা গোবর বা কম্পোস্ট মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে দিনের শেষের দিকে বাছাই করা সবল চারাটি রোপণ করতে হবে। রোপিত চারার গোড়ায় পানি জমলে শেকড় পচে চারাটি মারা যেতে পারে। তাই শেকড়ের মাটি ভালোভাবে চেপে খানিকটা উঁচু করে দিতে হবে।

প্রয়োজন প্রতিনিয়ত পরিচর্যা

রোপিত চারায় প্রথমেই পানি দিতে হবে। দিনের দুবার অর্থ্যাৎ সকাল-সন্ধ্যা পানি দিতে হবে। চারায় সার দেওয়ার পর পানি দিতে হবে। কাঁঠাল গাছে বছরে দুবার উপরি সার দেওয়া উচিত। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ অনুযায়ী সার দিতে হবে। কারণ চারার বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সারের মাত্রার তারতম্য হয়ে থাকে। এ ছাড়া প্রচণ্ড খরায় পানি সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। ঝড়-বৃষ্টিতে বাতাসের আঘাত থেকে রক্ষা করতে চারার পাশে খুঁটি লাগিয়ে দিতে হবে। গবাদি পশুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে চারপাশে বেতের খাঁচা বানিয়ে দিতে হবে। চারা বড় হতে শুরু করলে মূলকা- দ্রুত বেড়ে ওঠার সহায়তায় অপ্রয়োজনীয় শাখা-প্রশাখা ছেঁটে দিতে হবে। এ ছাড়া ফল সংগ্রহের পরেও ফলের বোঁটার অংশ কিংবা শুকনো ডাল কেটে অপসারণ করতে হবে।

রোগবালাই দমনে

কাঁঠাল গাছে কচি ফলে নানা রোগ বাসা বাঁধে। ফলে কখনো কখনো অচিরেই সদ্য ফল ঝরে পড়ে কিংবা ছত্রাকের আক্রমণে পরিপক্ব ফলে পচে খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে পরে। এ ছাড়া গামেসিস রোগে গাছের বাকল ফেটে অবারিত রস ঝরে। এর ফলে গাছে পচন ধরে। গাছের রোগ ছাড়াও বিভিন্ন পোকামাকড়ের আক্রমণ কিংবা বৃষ্টির পানি ঢুকে ফলসহ গাছই মরে যায়। এক্ষেত্রে গাছের নিচে ঝরে পড়া পুষ্প মঞ্জুরি সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেললে পচা রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এ ছাড়া কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী মুচি ধরার আগে ও পরে ১০ দিন পরপর কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। যেসব গাছের বাকল থেকে রস ঝরে সেই ক্ষতস্থানটি চেছে ফেলে দিয়ে সেখানে আলকাতরার প্রলেপ লাগিয়ে দিতে হবে।

এভাবে প্রথমবার দেওয়ার পরের দুই মাসে আরও দুবার প্রলেপ দিতে হবে। গাছ ছিদ্রকারী পোকামাকড় থেকে দীর্ঘস্থায়ী মুক্তি পেতে চিকন রড দিয়ে ছিদ্র পরিষ্কার করে এর ভেতর সিরিঞ্জের মাধ্যমে কেরোসিন, পেট্রোল দিয়ে কাদা কিংবা মোম দিয়ে ছিদ্রপথ বন্ধ করে দিলে ভেতরের ধোঁয়ায় পোকাগুলো মরে যাবে। এবার ফল ছিদ্রকারী পোকা থেকে রক্ষা পেতে বাগান পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরি। বাড়ন্ত ফল নিচের দিকে খোলা পলিথিনের ব্যাগ দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। আর ফুল আসার সময় দুই থেকে তিনবার কীটনাশক স্প্রে করলে সুফল পাওয়া যাবে। তবে ফুল কিংবা ফল রোগাক্রান্ত হলে সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলা উচিত।

(ঢাকাটাইমস/২৪এপ্রিল/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :