সাত কলেজের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস ঢাবি কর্তৃপক্ষের

ঢাবি প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ১৮:১২ | প্রকাশিত : ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ১৭:৫৮

কিছু ‘জটিলতার’ কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমে ‘অসুবিধা’ সৃষ্টি হওয়ার কথা স্বীকার করে সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সাত বলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া নিয়ে তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।

পরীক্ষার ফলাফল পুনর্মূল্যায়নসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনরত এই শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় দিনের মতো বুধবার রাজধানীর নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেছে বিক্ষোভ দেখায়। ফলে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পয়েন্ট আজিমপুর হয়ে বিভিন্ন রুটে যান চলাচলে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। এতে করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাসহ কর্মজীবী মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হয়। পরে উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত হওয়ার পর বেলা দুইটার দিকে রাস্তা ছেড়ে সরে যায় আন্দোলনকারীরা।

নীলক্ষেত মোড়ে শিক্ষার্থীদের এই অবরোধ চলার মধ্যেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয় সংবাদমাধ্যমে। এতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে সকল শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত হয়েছে, তাদের কিছু জটিলতার কারণে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় সাময়িক অসুবিধা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে তাদের এসব সমস্যা সমাধান করার উদ্যোগ নিয়েছে।

সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে সকল বিষয়ের ফলাফল প্রকাশ করার বিষয়ে ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেসব বিষয়ে বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে, তাদের আবেদনের ভিত্তিতে পুনর্মূল্যায়নের ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সাত কলেজের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবনে স্বতন্ত্র সেল গঠন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে সাত কলেজের জন্য স্বতন্ত্র নতুন ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। অধিভুক্ত সাত কলেজের সেশনজট নিরসনকল্পে ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’ নেওয়ার বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের জন্য অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার তৈরির কাজও প্রক্রিয়াধীন।

উপাচার্য আগামী ২৮ এপ্রিল সাত কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে এসব বিষয়ে বৈঠক করবেন জানিয়ে শিক্ষার্থীদের সমস্যার সমাধানে করণীয় নির্ধারণ করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এছাড়া ‘জনভোগান্তি নিরসনে’ শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ ক্যাম্পাসে থাকার জন্য আহ্বান জানানো হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সময়মত পরীক্ষা না নেওয়া, রেজাল্ট প্রকাশে সাত থেকে আট মাস বিলম্ব, বিনা নোটিশে নতুন নিয়ম কার্যকর, একই বিষয়ে গণহারে ফেল, খাতার সঠিক মূল্যায়ন না হওয়া, সিলেবাস বহির্ভূত প্রশ্নপদ্ধতিসহ নানা সমস্যা রয়ে গেছে। এসব সমস্যা কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও সমাধান হয়নি।

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা। তাদের পেশ করা পাঁচ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত এ আন্দোলন চলতেই থাকবে। এদিকে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে এখন পর্যন্ত ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোনও বক্তব্য আসেনি।

শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-

১. পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ত্রুটি মুক্ত ফলাফল প্রকাশসহ একটি বর্ষের সকল বিভাগের ফলাফল একত্রে প্রকাশ করতে হবে। ২. ডিগ্রী, অনার্স, মাস্টার্স সকল বর্ষের ফলাফল গণহারে অকৃতকার্য হওয়ার কারণ প্রকাশসহ খাতার পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। ৩. সাত কলেজ পরিচালনার জন্য স্বতন্ত্র প্রশাসনিক ভবন। ৪. প্রতিমাসে প্রত্যেকটা বিভাগে প্রতি কলেজে দুইদিন করে মোট ১৪ দিন ঢাবির শিক্ষকদের ক্লাস নিতে হবে এবং ৫. সেশনজট নিরসনের লক্ষ্যে একাডেমিক ক্যালে-ার প্রকাশসহ ক্রাশ প্রোগ্রাম চালু করা।

ঢাকাটাইমস/২৪এপ্রিল/ডিএম

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :