বনলতাকে দেখতে ভিড়

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী
 | প্রকাশিত : ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ২২:১৪

কেউ দেখছেন, কেউ ছবি তুলছেন। বনলতাকে দেখতে ভিড় করছেন অনেক মানুষ। ঢাকা-রাজশাহী-ঢাকা রুটে চলাচলের জন্য একমাত্র বিরতিহীন ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে আসার পর থেকেই সাধারণ মানুষের মাঝে এমন উৎসাহ দেখা গেছে।

বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ট্রেনটির উদ্বোধন করবেন।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে ট্রেনটি রাজশাহী এসেছে। উদ্বোধনের জন্য ট্রেনটি বুধবার সন্ধ্যায় স্টেশনের তিন নম্বর প্লাটফরমে রাখা হয়। রঙিন কাপড় আর নানা ধরনের ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে ট্রেনটিকে।

সন্ধ্যায় স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, বনলতা এক্সপ্রেসের উদ্বোধন উপলক্ষে পুরো স্টেশনেই সাজসাজ রব। কয়েকদিন আগেই প্লাটফরমসহ পুরো স্টেশনের দেয়াল ও ছাদের সিলিং রঙ করা হয়েছে। স্টেশনের ভেতর ও বাইরে করা হয়েছে আলোকসজ্জা। আর স্টেশনের ভেতরেই টিকিট কাউন্টারের সামনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজনের প্যান্ডেল সাজানো হচ্ছে। বসানো হয়েছে একটি ডিজিটাল প্রজেক্টর।

এই প্রজেক্টরের মাধ্যমেই বৃহস্পতিবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সে ঢাকা থেকে রাজশাহীতে সরাসরি কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

উদ্বোধন করবেন রাজশাহীবাসীর বহুল প্রত্যাশিত এই ট্রেন।

রাজশাহীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন উপস্থিত থাকবেন। উদ্বোধনের পর বেলা ১১টা ১০ মিনিটে তিনি বনলতাতে চেপেই ঢাকার উদ্দেশে রাজশাহী ত্যাগ করবেন রেলমন্ত্রী।

রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা ও সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নির্বাচনি ইশতেহারে এই ট্রেন চালুর প্রতিশ্রুতি ছিল। সম্প্রতি ট্রেনটির অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরই দিনক্ষণ ঠিক করে ট্রেনটির উদ্বোধন করা হচ্ছে। এই ট্রেনের দাবিতে সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন দীর্ঘ দিন ধরেই আন্দোলন করে আসছিল। ট্রেনটি চালুর মধ্য দিয়ে রাজশাহীর মানুষের এই প্রাণের দাবি পূরণ হচ্ছে।

বনলতার অত্যাধুনিক বগিগুলো ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা। ১২টি বগি নিয়ে চলবে ট্রেনটি। ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানির পর ঈশ্বরদী ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন বিভাগে বগিগুলোর পরীক্ষামূলক চলাচল, জ্বালানি, বিদ্যুৎসংযোগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করা হয়।

ট্রেনটিতে সংযুক্ত রয়েছে উড়োজাহাজের মতো বায়োটয়লেট। এ কারণে মলমূত্র রেললাইনের ওপরে পড়বে না। ট্রেনটিতে থাকছে রিক্লেনার চেয়ার। আছে ওয়াইফাই সুবিধা। প্রতিটি বগিতে রয়েছে এলইডি ডিসপ্লে। যার মাধ্যমে স্টেশন ও ভ্রমণের তথ্য প্রদর্শন করা হবে। কিন্তু থাকছে না শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোনো ধরনের শ্লিপিং বার্থ। রেল বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, যেহেতু ট্রেনটি দিনের বেলা চলাচল করবে সে কারণে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বার্থের দরকার পড়ছে না আপাতত।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ট্রেনের ১২টি বগির মধ্যে শোভন চেয়ারের বগি ৭টি, যার আসন সংখ্যা ৬৬৪টি। এসি বগি ২টি, আসন সংখ্যা ১৬০টি। একটি পাওয়ার কারের আসন সংখ্যা ১৬টি। দুটি গার্ডব্রেকের আসন সংখ্যা ১০৮টি। এছাড়া ট্রেনটিতে রয়েছে একটি খাওয়ার বগি। মোট আসন সংখ্যা ৯৪৮টি। বনলতা এক্সপ্রেসের বগি নতুন হলেও ইঞ্জিনটি পুরাতন। ২০১৩ সালে ভারত থেকে আমদানি করা দুটি ভালো মানের ইঞ্জিন দিয়ে চলাচল করবে ট্রেনটি। ঘণ্টায় ট্রেনটির সর্ব্বোচ্চ গতিবেগ ৯০ থেকে ৯৫ কিলোমিটার। রাজশাহী-ঢাকা চলতে ট্রেনটির সময় লাগতে পারে চার থেকে সাড়ে চার ঘণ্টা। সপ্তাহের শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৭টায় ট্রেনটি রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে। আবার দুপুর দেড়টায় ট্রেনটি ঢাকা থেকে রাজশাহী ফিরে আসবে।

রাজশাহী-ঢাকা রুটে এতোদিন আন্তঃনগর পদ্মা এক্সপ্রেস, ধূমকেতু ও সিল্কসিটি এক্সপ্রেস চলাচল করত। বনলতা এক্সপ্রেস আসার পর ট্রেনের সংখ্যা হচ্ছে চারটি। বনলতা এক্সপ্রেসের ভাড়া ১০ শতাংশ বাড়তে পারে।

(ঢাকাটাইমস/২৪এপ্রিল/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :