চিটা কেটে ঘরে তুলছেন কৃষকরা

এনাম আহমেদ, বগুড়া, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ২৫ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:৩৪

চলতি বোরো মৌসুমে বগুড়ার বিআর-২৮ ধানের অনেক ক্ষেতে নেক ব্লাস্ট ছত্রাকের আক্রমণে দারুণ ক্ষতির মুখে পড়েছেন এ ধান রোপণকারী চাষিরা।

কম সময়ে বেশি ফলন পাওয়া এ ধান লাভজনক হওয়ায় এবার বোরো ধান আবাদ করা জেলার ১ লাখ ৮৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমির মধ্যে ৩৯ হাজার ৩৪৬ হেক্টর জমিতেই চাষ হয়েছে বিআর-২৮ ধান।

পূর্ব বগুড়ার চাষিদের দাবি, গাবতলী ও সোনাতলা উপজেলার অধিকাংশ জমির ধানই চিটায় পরিণত হয়েছে। চিটা জমিতে রেখে লাভ নেই। তাই ধানগাছ কেটে খড় করতে ঘরে তুলছেন তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দাবি, ১৩ হেক্টর জমির ধান নেক ব্লাস্ট ছত্রাকে আক্রান্ত হয়েছে। গত ২-৩ বছর ধরে বিআর-২৮ ধানে নেক এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় এই ধান চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। তারপরেও যারা তা করেছেন, তারাই ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

তবে মাঠ পর্যায়ে এর পরিমাণ আরও বেশি দাবি করে কৃষি অফিস থেকে কোন খোঁজ-খবর নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পূর্ব বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার পদ্মপাড়া, মিলনেরপাড়া, উত্তর করমজা, দড়িহাঁসরাজ, হুয়াকুয়া, মোনার পটল, সাতবেকী, হরিখালী, নামাজখালি, গজারিয়া ও শালিখা গ্রাম এবং গাবতলী ও বগুড়া সদর উপজেলার কিছু অংশে কৃষকের ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হয়েছে। চাল ভালো হওয়ায় এবং চারা রোপণের ১০০ দিনের মধ্যে ধান পেকে যাওয়ায় এই অঞ্চলের কৃষকরাই বিআর-২৮ ধানের চাষ বেশি করে থাকেন। তাই ক্ষতির পরিমাণটাও বেশি।

গাবতলী উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের কৃষক আব্দুস সাত্তার, জয়নাল, সোলায়মান আলী বলেন, ‘বিআর-২৮ আগাম জাতের ধান। অন্য যেকোনো ধানের চেয়ে এটি আগেই পেকে যায়, কাটার সময় বৃষ্টিও কম থাকে। ফলে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াই ফসল ঘরে তুলতে পারি। বেশি লাভের আশায় এই জাতের ধান চাষ করে আসছিলাম। কিন্তু নেক ব্লাস্ট রোগে এবার আমাদের মাঠের ধান চিটায় পরিণত হয়েছে।’

এই কৃষকরা জানান, আটাশ ধানের উ’পাদন বিঘাপ্রতি ১৮-২০ মণ পর্যন্ত হলেও এবার ২-৩ মণের বেশি হবে না। খড়ই তাদের শেষ সম্বল। ফলে শুধু তারাই নন, হতাশায় নিমজ্জিত এই অঞ্চলের আরও অসংখ্য চাষিও।

সোনাতলা উপজেলার নওদাবগা গ্রামের রাজিয়া বেগম জানান, এবার তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে বিআর-২৮ ধানের চাষ করেছেন। পুরো জমির ধান চিটায় পরিণত হওয়ায় তিনি আশাহত। গো-খাদ্যের জন্য জমি থেকে শুধু খড় কেটে ঘরে তুলছেন।

সোনাতলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ আহম্মেদ জানান, গত ২-৩ বছর ধরে বিআর-২৮ ধানে নেক ব্লাস্ট দেখা দেওয়ায় এবার কৃষকদের এই ধানচাষে নিরুসাহিত করা হয়েছিল।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের উপ-পরিচালক নিখিল চন্দ্র বিশ্বাস কৃষি কর্মকর্তাদের অবহেলার কথা অস্বীকার করে জানান, নেক ব্লাস্ট রোগ সম্পর্কে কৃষকদের বিভিন্নভাবে অবহিত করাসহ তাদের নিয়ে গ্রুপ বৈঠক ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৫এপ্রিল/প্রতিবেদক/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :