টিআইবির প্রতিবেদনের ব্যাখ্যা দিল বিজিএমইএ

প্রকাশ | ২৫ এপ্রিল ২০১৯, ১৯:৩৩ | আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৯, ২০:৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

‘পোশাক খাতের মজুরি বাড়েনি, বাস্তবে ২৬ শতাংশ কমেছে’ এক প্রতিবেদনে এমনটা দাবি করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। তবে এর সঙ্গে একমত নয় পোশাক মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ।

বুধবার টিআইবির প্রতিবেদনের ব্যাখ্যা দিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে পোশাক মালিকদের সংগঠনটি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে বলা হয়, টিআইবি রানা প্লাজা দুর্ঘটনার ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রাক্কালে গত ২৩ এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনে পোশাক শিল্প নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদনটির কয়েকটি ইস্যু বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এই বিষয়গুলোতে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা হলো:

প্রথমত, নতুন মজুরি কাঠামোতে মূল মজুরির ওপর বার্ষিক ৫% হারে ইনক্রিমেন্ট সমন্বয় করা হয়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, যার সাথে আমরা একমত নই। যেখানে ৫% হারে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট প্রদান করা হলে পাঁচ বছর শেষে সামগ্রিক ইনক্রিমেন্টের হার দাঁড়ায় ২৭.৬৩%, সেখানে মজুরি বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত মজুরি কাঠামোতে মূল মজুরি বৃদ্ধি করা হয়েছে ২৮.৭% থেকে শুরু করে ৩৬.৭% পর্যন্ত। আমাদের প্রত্যাশা, টিআইবি তাদের গবেষণা পদ্ধতি আমাদের সাথে শেয়ার করবে।

দ্বিতীয়ত, শ্রমিকের দক্ষতা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এটা মাসিক ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয় না। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে, আমরা একটি প্রতিযোগিতাময় বিশ্ব বাজারে কাজ করছি, যেখানে টিকে থাকার মূল মন্ত্রই হচ্ছে কারখানার আর্থিক সক্ষমতা।

প্রসঙ্গত, যেখানে চীন, ভিয়েতনাম ও তুরস্কের শ্রমিকদের দক্ষতার হার হচ্ছে যথাক্রমে ৬৫%, ৫৫% এবং ৭০%, সেখানে আমাদের শ্রমিকদের দক্ষতা মাত্র ৪০%-৪৫%। আমাদের জানামতে, নূন্যতম মজুরি বৃদ্ধি এবং দক্ষতার মধ্যে আন্তঃসম্পর্কের বিষয়টি মজুরি বোর্ড এর বিবেচনায় ছিল না।

যাই হোক, আমরা একান্তভাবে আশা করি, ভবিষ্যতে রেফারেন্স হিসেবে শিল্পের প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখার ক্ষেত্রে মজুরিকে সবসময় দক্ষতার সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে। আমরা মনে করি, মজুরি - দক্ষতা ম্যাট্রিক্স নির্ধারন করা হলে দক্ষতা অনুযায়ী শ্রমিকরা তাদের মজুরি পাবে।

তৃতীয়ত, উল্লিখিত প্রতিবেদনে উৎপাদন ঘণ্টা চলাকালে শ্রমিকরা টয়লেটে যেতে পর্যন্ত পারছে কি না তার কথা বলা হয়েছে, অতিরিক্ত মজুরি প্রদান না করে শ্রমিকদের দিয়ে অতিরিক্ত কাজ করিয়ে নেয়ার কথাও বলা হয়েছে। এই বিষয়গুলো টিআইবি প্রতিবেদনে পর্যাপ্ত তথ্য প্রমানসহ যথাযথভাবে উপস্থাপিত হয়নি। একইভাবে এই প্রতিবেদনে শ্রমিকদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান না করার কথা বলা হলেও এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উপাত্তের ঘাটতি রয়েছে।

আমরা মনে করি, এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশের পূর্বে যদি টিআইবি ও বিজিএমইএ একসাথে কাজ করতে পারে, তাহলে এ ধরনের তথ্য বিভ্রান্তি এড়ানো সম্ভব হবে। অধিকন্তু, রানা প্লাজা দুর্ঘটনা বার্ষিকীর ঠিক পূর্বে এমন একটি স্পর্শকাতর সময়ে এই প্রতিবেদন প্রকাশ মোটেই কাম্য নয়।

আমাদের এই পোশাক শিল্প এককভাবে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করছে। এই শিল্পটি বিগত বছরগুলোতে নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণ ও শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় অর্ভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধন করেছে। শুধুমাত্র ৮০টি কারখানাকে স্যাম্পল হিসেবে নিয়ে সমগ্র শিল্পকে নিয়ে ঢালাও প্রতিবেদন প্রকাশ করে শিল্পকে হেয় করা কোনোমতেই কাম্য নয়।

(ঢাকাটাইমস/২৫এপ্রিল/জেআর/জেবি)