হকির নির্বাচন জমিয়ে দিয়েছে রশিদ-সাঈদ প্যানেল

প্রকাশ | ২৫ এপ্রিল ২০১৯, ২১:৪৪

ক্রীড়া প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

১৩ বছর পর হকিতে নির্বাচন। কয়েকবার নানা অজুহাতে নির্বাচন স্থগিত, বাতিল বা বয়কটের পর স্বস্তির খবর, ২৯ এপ্রিল হকি ফেডারেশনের নির্বাচন। ৮৪ ভোটার ২০০৫ সালের পর এই প্রথম ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এদিকে নির্বাচন দারুণ জমিয়ে তুলেছে রশিদ- সাঈদের প্রানেল বাঁচাও হকি পরিষদ। আপাতত এই প্যানেলেরই সম্ভাবনা বেশি মনে হচ্ছে।

এক সময়ের দারুণ সম্ভাবনার হকি এখন প্রায় মৃত। এই মৃতপ্রায় হকিকে নির্বাচনের আগেই যেন ধাক্কা মেরে জাগিয়ে তুললেন রশিদ- সাঈদ প্যানেল। বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে জমকালো পরিবেশে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করলো  বাঁচাও হকি পরিষদ।

এক নম্বর সহ-সভাপতি পদে আব্দুর রশিদ শিকদার ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মমিনুল হক সাঈদ প্যানেলই মূলত এই বাঁচাও হকি পরিষদ। দুজনই বেশ সফল সংগঠক। ক্রীড়াঙ্গণে গ্রহনযোগ্য ও সুপরিচিত মুখ।

২৫ জনের প্যানেল দিয়েছে এই পরিষদ।  অন্য চার  সহ-সভাপতি প্রার্থী হলেন-  সৈয়দ  মোস্তাক আলী মুকুল, সাওয়ার হোসেন, মাহবুদ রিবন ও  নুরে আলম খোকন।  দুইজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হলেন-  কামরুল ইসলাম কিসমত ও

এক নম্বর সহ-সভাপতি প্রার্থী ঊষা ক্রীড়া চক্রের সাধারণ সম্পাদক ও এশিয়ান হকি ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুর রশিদ জানান, হকিতে নতুন দিগন্তের সূচনা করতেই নির্বাচনে লড়ছেন তারা। করেছেন দেশের প্রায় প্রত্যেকটি জেলায়। বলেন, ‘আমরা তৃণমূলে হকিকে বাঁচানোর আকুতি দেখেছি। সবার একটাই কথা এই খেলাটি বাঁচান। অথচ এখন হকি যারা চালাচ্ছেন তাদের মধ্যে এই ব্যাপারটি দেখি না। তারা কেউ ফেডারেশন অফিসেও আসে না!’

সবাইকে এক ছাতার নীচে নিয়ে এসে কাজ করতে চায় হকি বাঁচাও পরিষদ। আব্দুর রশিদ বলেন, ‘আমরা একবার সুযোগ চাই। হকির এই দুঃসময় কাটাতে প্রাণপণ লড়ে যাবো। আর এই নির্বাচন নিয়ে প্রভাব দেখা গেছে গতবার। একপক্ষ ঢাকার বাইরের কাউন্সিলরদের চাপ দিয়েছে। এবার কাউন্সিলররা ভোটাধিকারের সুযোগ পেলে আমরাই জিতবো।’

প্যানেলের পরিচিতি পর ইশতেহার ঘোষণা করেন সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী এ. কে. এম মমিনুল হক সাঈদ। তিনি জানান, তারা নির্বাচিত হলে ২০২৬ সালে বিশ্বকাপ হকি ও ২০২৫ সালে এশিয়ান হকির সেমিফাইনালে খেলার জন্য প্রস্তুত করবে বাংলাদেশ দলকে।

তিনি জানান, মাঠে ফিরবে হকি। বিভাগীয় হকি প্রতিযোগিতা, জেলা লিগ, স্কুল হকি, যুব হকি, নারী হকির সঙ্গে চলবে প্রতিভা অন্বেষণ কর্মসূচি। জাতীয় দল গঠনেও ভিন্নতা আনবেন তারা। হাই পারফরম্যান্স কমিশনের অধীনে চলবে জাতীয় দলের কার্যক্রম।

একইসঙ্গে আসছে বছর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্মদিনে হবে আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ হকি। প্রথম বিভাগ লিগ থেকে শুরু করে সব আসরই ফিরিয়ে আনবেন তারা।

মমিনুল হক সাঈদ বলেন,‘বর্তমানে মাঠ ও মাঠের বাইরে দেশের হকির অবস্থান নাজুক। স্বাভাবিকভাবেই তাতে হকি প্রেমিরা ভীষণভাবে হতাশাগ্রস্থ। এমন পরিস্থিতি থেকে হকিকে মুক্ত করতে আজ আমরা একতাবদ্ধ। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস সম্মানিত কাউন্সিলরদের ভোটে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের আসন্ন নির্বাচনে আমরা জয়ী হবো। নির্বাচনে জয়ী হলে বাস্তবভিত্তিক একটি পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে আমরা দেশের হকিকে নতুন রূপ দিতে বদ্ধপরিকর।’

প্রত্যেকবছর একটি ক্যালেন্ডার দেয়ার অঙ্গিকার করা হয়েছে। সব বিভাগের হকি লিগসহ শহীদ স্মৃতি হকি লিগের আয়োজনের কথা বলা হয়েছে এতে। বিশ্বমানের দলগুলো নিয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ড কাপ আয়োজনের বিষয়টি এসেছে এই ইশতেহারে। ফ্যাঞ্জাইজিভিত্তিক হকি লিগ বা ‘বিপিএল’ করার কথাও এসেছে ইশতেহারে।

নির্বাচনে জয়ী না হলে হকির উন্নয়নে থাকবেন কি না এমন প্রশ্নে সবসময় হকির পাশে থাকার অঙ্গিকার করেছেন মমিনুল হক সাঈদ।

এই প্যানেলকে সমর্থন দিতে প্যানেল পরিচিতি অনুষ্ঠানে সাবেক হকি খেলোয়াড় আর কর্মকর্তাদের মিলনমেলা বসেছিল। যেখানে ছিলেন হকি ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামসুল বারী, সাবেক তারকা খেলোয়াড় বশির আহমেদ, জামিল পারভেজ, প্রতাপ শঙ্কর হাজরা থেকে শুরু করে অনেকেই। সবাই বলছিলেন, দুঃসময় কাটিয়ে আবারো জেগে উঠুক দেশের হকি অঙ্গণ। এদিকে এখনও পর্যন্ত পূর্নাঙ্গ প্যানেল দিতে পারেনি সাদেক খানের নেতৃত্বে প্যানেলটি।

(ঢাকাটাইমস/২৫এপ্রিল/ডিএইচ)