‘মরণফাঁদ’ সড়কটিতে প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা

প্রকাশ | ২৬ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:৩৩

সাগর হোসেন তামিম, মাদারীপুর প্রতিবেদক

যানবাহন বা হেঁটে চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে মাদারীপুরের ইটেরপুল-ঘোষেরহাট সড়ক। ১৪ কিলোমিটারের সড়কটির অধিকাংশ স্থানেই পিচ উঠে তৈরি হয়েছে খানা-খন্দের। বড় বড় গর্তে প্রায়ই যানবাহন বিকল হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি প্রতিদিনই ঘটছে অসংখ্য দুর্ঘটনা। দ্রুত সংস্কার করা না হলে সামনের বর্ষা মৌসুম ও ঈদে চরম দুর্ভোগে পড়ার আশঙ্কা করছেন সাধারণ মানুষ।

সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করেন মাদারীপুর সদর ও কালকিনি উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার মানুষ। শহর থেকে ঘোষেরহাট পর্যন্ত ৩০ মিনিটের পথ যেতে এখন সময় লাগছে দেড়-দুই ঘণ্টা।

ক্ষুব্ধ যাত্রী, চালক ও পথচারীসহ এলাকার লোকজনের অভিযোগ, গত দুই বছরে সড়কটির অস্থায়ী সংস্কারের নামে ব্যয় করা হয়েছে এক কোটি টাকা। তারা সে সময় নিন্মমানের কাজের অভিযোগ তুললেও বিষয়টি আমলে নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

সড়কটি দিয়ে যাতায়াতকারী আবু আলম মুন্সি বলেন, ‘প্রায়ই দেখি রাস্তা মেরামত করে। কাজ ঠিকমতো না হওয়ায় বেহালদশা বার বার ফিরে আসছে। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে আমাদের। এর প্রতিকার হওয়া দরকার।’

আল-আমিন বেপারী বলেন, ‘এই সড়ক দিয়ে অসুস্থ রোগী নিয়ে যেতে হলে ভয়াবহ বিপদের মুখে পড়তে হয়। জরুরি ভিত্তিতে টেকসই মেরামত দরকার।’

ইজিবাইক চালক নুর আলম বলেন, ‘সড়কটি এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। যাত্রী নিয়ে চলাচলে খুব সমস্যা হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে কাজ না করায় খানা-খন্দ লেগেই থাকে। দেখা যায়, মেরামত করছে, আবার সেই সড়কে একবার বৃষ্টির ছোঁয়া লাগলেই খানা-খন্দ। এর দায়ভার কাদের?’

স্থানীয় এক সাংবাদিক বলেন, ‘দেশপ্রেম ও দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকলে কোনো ঠিকাদার নিম্নমানের কাজ করতে পারেন না। তা নেই বলেই আজ আমাদের এই দুর্দশা। প্রতিটি প্রকল্পেই চাহিদা অনুসারে অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে সরকার। দুর্নীতির কারণে প্রকল্পগুলো মুখ থুবড়ে পড়ছে। যারা দেখ-ভাল করবেন, তাদেরও রয়েছে স্বচ্ছতার অভাব। ফলে জনগণের দুর্ভোগ বেড়েই যাচ্ছে।’

সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানান, ৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে পুরো সড়কটি নতুন করে সংস্কারে দরপত্র আহবান করা হয়েছে। মেরামতের কাজ শিগগিরই শুরু হবে। এতে কমবে যাত্রী, পথচারী ও চালকদের ভোগান্তি। গুণগত মান ঠিক রেখেই সংস্কার করা হবে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ সজাগ রয়েছে।

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম জানান, ‘নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজের অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। বিষয়টি কঠোরভাবে দেখবো। পরবর্তীতে কেউ যেন কাজে ফাঁকি দিতে না পারেন, সে বিষয়ে সড়ক বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

(ঢাকাটাইমস/২৬এপ্রিল/প্রতিবেদক/এআর)