জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে তবে শঙ্কা আছে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০১৯, ২০:১৯ | প্রকাশিত : ২৬ এপ্রিল ২০১৯, ১৮:১০

সরকার দেশীয় জঙ্গিবাদকে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে জঙ্গিবাদ নিয়ে এখনো আশঙ্কা পুরোপুরি দূর হয়ে যায়নি বলে জানান তিনি। তবে জঙ্গিবাদ শুধু প্রশাসন কিংবা গোয়েন্দাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়, এর জন্য সবাইকে আন্তরিক হতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

শুক্রবার বিকালে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ব্রুনাই সফর সম্পর্কে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কায় জঙ্গি হামলার পর বাংলাদেশ কোনো আশঙ্কায় আছে কি না-সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সম্পর্কে সব সময়ই উদ্বিগ্ন হওয়ার। নিউজিল্যান্ড একটি শান্তির দেশ হিসেবে আমরা জানি। কিন্তু সেখানেও এই ধরনের ঘটনা ঘটল।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আর বাংলাদেশে তো সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ লেগেই আছে। জাতির পিতাকে হত্যা, জেলখানায় জাতীয় নেতাদের হত্যা, সামরিক শাসকের আমলে হত্যা, ২০০১ সালের পর হত্যা, দিবালোকে গ্রেনেড হামলা করে হত্যাযজ্ঞ সবই সন্ত্রাস।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘জঙ্গিবাদ সম্পর্কে আমরা যথেষ্ট সজাগ আছি। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাজ করে যাচ্ছে। গতকাল রাতেও সবাইকে নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক করেছি। তবে সবাই মিলে কাজ করতে হবে। শুধু গোয়েন্দা জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘লুকোচাপার কিছু নেই। জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ করে রেখেছি, তারপরও আশঙ্কা আছে। আমরা বিভিন্ন সময় তথ্য পাই, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিই।’ এ সময় তিনি সবাইকে জঙ্গিবাদ সম্পর্কে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।

ধর্মের নামে আত্মঘাতী হামলাকারীদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি না আত্মঘাতী হামলা করে তারা কী পাচ্ছে। তারা নিজেরাই কী পাচ্ছে, ধর্মকে কী দিচ্ছে আর দেশকেই বা কী দিচ্ছে!’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডে কী হলো? একজন মাথায় ক্যামেরা লাগিয়ে গুলি করার মুহূর্ত সঙ্গে সঙ্গে ছড়িয়ে দিচ্ছে। কী বীভৎস! কী বীভৎস মানসিকতা! সে একজন খ্রিষ্টান। আর এখানে (শ্রীলঙ্কায়) যারা শনাক্ত হয়েছে, তারা মুসলমান।’

‘নুসরাত হত্যায় কাউকে ছাড় নয়’

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান শেখ হাসিনা। বলেন, ‘অপরাধী যেই হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি নিজেই এ বিষেয়ে উদ্যোগ নিয়েছি। কারণ আমি উদ্যোগ না নিলে তো মেয়েটিকে চরিত্রহীন বানিয়ে দেওয়া হতো। এছাড়া তাকে নিয়ে নানা ধরনের কথা বলা হত। এজন্য আমি নিজেই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি। এ হত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।’

যৌন হয়রানি বন্ধে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটি কমিটি গঠন করা হবে বলে তিনি জানান।

রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের প্রচণ্ড অনীহা’

এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে একটা চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু তাদের পাঠানো শুরু করার সময় তারা আর যেতে চাচ্ছে না। অন্যদিকে রোহিঙ্গা নেওয়ার ব্যাপারে মিয়ানমার সরকারের প্রচণ্ড অনীহা আছে। আমরা জাতিসংঘকে এসব বিষয়ে জানিয়েছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের একটা চুক্তিও হয়েছে। যে মুহূর্তে রোহিঙ্গা যাওয়ার কথা সেই মুহূর্তে তারা প্রতিবাদ শুরু করল যে তারা যাবে না। রোহিঙ্গারা ফেরত গেলে চীন, ভারত ও জাপান তাদের জন্য ঘরবাড়ি করে দিতেও তারা রাজি। প্রত্যেক দেশেই কিন্তু তাদের কিছু কিছু রিফিউজি আছে। এদের সঙ্গে আমি আলোচনা করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় ধন্যবাদ জানিয়ে তাদের প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় সমর্থন দিয়েছেন ব্রুনাইয়ের সুলতান।

(ঢাকাটাইমস/২৬এপ্রিল/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :