ঠাকুরগাঁওয়ে সামাজিক বনায়নের গাছ কেটে উজাড়

বদরুল ইসলাম বিপ্লব, ঠাকুরগাঁও প্রতিবেদক
| আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০১৯, ০৯:১৪ | প্রকাশিত : ৩০ এপ্রিল ২০১৯, ০৯:০৮

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রাজাগাঁও ইউনিয়নের চাপাতি গ্রামে সামাজিক বনায়নে লাগানো গাছ টেন্ডার ছাড়াই অবাধে কেটে চলেছে একটি চক্র। গত দুই মাসে রাস্তার পাশের প্রায় এক হাজার গাছ কেটে ফেলায় উজাড় হয়ে যাচ্ছে সরকারি বনজসম্পদ।

চাপাতি গ্রামটি জেলা শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে এবং পাশের পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলা ঘেঁষে হওয়ায় অসাধু চক্রটি নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা করছে না অভিযোগ গ্রামের লোকজনের।

তারা জানান, স্থানীয় কিছু যুবক ইউনিয়ন পরিষদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে বেশ কিছু রাস্তায় বৃক্ষরোপণ করেন। ওইসব গাছ বিক্রির উপযুক্ত হওয়ায় সংশ্লিষ্টরা সরকারকে ফাঁকি দিতে শুক্র ও শনিবারসহ ছুটির দিনগুলোতে অবাধে গাছগুলো কাটছেন। গত শুক্রবার ২০টির মতো ইউক্যালিপটাস গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে, যার বাজারমূল্য এক লাখ টাকা। চাপাতি গ্রামের দুই ভাই নুর ইসলাম ও বুলু তাদের জমির পাশে গ্রাম্য রাস্তার গাছগুলো কেটে স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী জাভেদের কাছে বিক্রি করে দিলে ওইদিন সকালে গাছ কাটার মহোৎসব শুরু হয়।

খবর পেয়ে সংবাদকর্মীরা হাজির হলে বুলু ও নুরু কেটে ফেলা গাছগুলো নিজেদের লাগানো বলে দাবি করেন।

গ্রামের লোকজন বলছেন, নুর ইসলাম স্থানীয় রাজাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোশারুল ইসলাম সরকারের জামাতা হওয়ায় তারা সবকিছু জেনেও ভয়ে বাধা দিতে পারছেন না। মাস দুয়েক আগে গাছ কাটায় বাধা দেওয়ায় ওই চক্রটি রিপন নামে এক যুবককে পিটিয়ে জখম করেন। দীর্ঘদিন তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়। এ কারণে অনেকে দেখেও না দেখার ভান করছেন।

রাজাগাঁও ইউপির সচিব শফিকুল ইসলাম জানান, সামাজিক বনায়ন বা গ্রাম্য রাস্তার গাছ কাটতে হলে ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। ইউনিয়ন পরিষদ ওই গাছ কাটার উপযুক্ত মনে করলে রেজুলেশন করে। উপজেলা পরিষদে পাঠায়। তাদের সভায় অনুমোদন শেষে বন বিভাগ দাম নির্ধারণ করবেন। সবশেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টেন্ডার আহবান করবেন। এরপর ওই গাছ কাটা যাবে। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করেই অবাধে কেটে চলেছেন সরকারি গাছগুলো। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টের পাশাপাশি সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে।

ইউপি চেয়ারম্যান মোশারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘শুক্রবার চাপাতি গ্রামের বুলু রাস্তার পাশের গাছ কেটে নেন বলে সংবাদ পাই। খোঁজ নিয়ে জেনেছি, গাছগুলো ওই তার নিজেরই জমিতে লাগানো। কেউ অবৈধভাবে গাছ কাটলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘গ্রাম্য রাস্তার পাশে সামাজিক বনায়নে লাগানো কোনো গাছ টেন্ডার ছাড়া কাটার কোনো সুযোগ নেই। কেউ অবৈধভাবে গাছ কাটলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

(ঢাকাটাইমস/৩০এপ্রিল/প্রতিনিধি/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :