যশোরে থানার সামনে আত্মহত্যার চেষ্টা
যশোর কোতয়ালি থানার গেটে দাঁড়িয়ে শাহাজান মোড়ল লিটন নামে এক যুবক বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। গুরুতর অবস্থায় তাকে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পেশায় অটোরিকশাচালক লিটন শার্শার নাভারন বুরুজবাগান এলাকার জহির মোড়লের ছেলে। বসবাস করেন সদর উপজেলার ভাতুড়িয়া গ্রামের জনৈক রহমতের বাড়িতে। পারিবারিক কলহের কারণে সোমবার রাতে তিনি এই কাণ্ড ঘটান বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে।
লিটনের প্রথম স্ত্রী রেকসোনা খাতুন বলছেন, তাদের মধ্যে পারিবারিক সমস্যা রয়েছে। তিনি অসুস্থ। এই সুযোগে কিছুদিন আগে স্বামী লিটন মণিরামপুরের একটি মেয়েকে বিয়ে করেন। পরকীয়াও করেছেন বেশ কয়েকটি।
রেকসোনার ভাষ্য, কয়েকদিন হলো ওই মেয়ের সাথে তার (লিটনের) ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পারিবারিক এসব অশান্তি নিয়ে সোমবার লিটন আমাকে মারপিট করে। চলে যাওয়া দ্বিতীয় স্ত্রীকে এনে দেয়ার দাবিও জানায় সে। মারপিটের সময় আমার ভাই ও প্রতিবেশীরা লিটনকেও পাল্টা মার দেয়। লিটনের নামে নারী নির্যাতন মামলা দেয়া হবে বলেও তারা ভয় দেখায়।
ভয়ে সন্ধ্যায় লিটন বাড়ি ছেড়ে যশোর কোতয়ালি থানায় চলে আসে। নিজে বাঁচার জন্য থানায় উল্টো আমাদের নামে অভিযোগ দিতে চায়। পরে শুনেছি, থানার গেটে সে বিষ খেয়েছে। খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালে লিটনকে দেখতে এসেছি।চিকিৎসাধীন শাহাজান মোড়ল লিটন সকালে বলেন, আমি মানসিকভাবে খুবই ভেঙে পড়েছি। মাথায় কোনো কাজ করছে না। থানায় অভিযোগ দিতে গিয়েছিলাম। ডিউটি অফিসার এসআই হাবিব সব কথা শুনে আমাকে বলেছেন, আপনি অভিযোগ দিয়ে যান। খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেব। তখন আমি ভয় পেয়ে যাই। ভাবি, স্ত্রী আমার নামে নারী-শিশু মামলা দিয়ে জেলে পাঠাতে পারে। তখনই থানার গেটে চলে আসি। আগে থেকে পকেটে রাখা বিষের বোতল খুলে গলায় ঢেলে দিই। পুলিশ টের পেয়ে আমাকে গাড়িতে ওঠায়। এর পরে আমার আর কিছু মনে নেই। জ্ঞান ফিরলে দেখি আমি হাসপাতালে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার শফিউল্লাহ সবুজ বলেন, লিটনের পাকস্থলি থেকে বিষ বের করা সম্ভব হয়নি। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। ৭২ ঘণ্টা পার না হলে কিছু বলা যাবে না।
কোতয়ালি থানার ওসি অপূর্ব হাসান বলেন, প্রথম স্ত্রী মামলা দিয়ে জেলে পাঠাতে পারে- এই ভয়ে লিটন বিষপান করেছে। তারপরও পুলিশ বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখছে।
(ঢাকাটাইমস/৩০এপ্রিল/এলএ)