এক মাসের মধ্যে নুসরাত হত্যার চার্জশিট

প্রকাশ | ০৪ মে ২০১৯, ১৭:২৭ | আপডেট: ০৪ মে ২০১৯, ১৮:৩০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) আগামী এক মাসের মধ্যেই দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।

শনিবার রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা জানান। তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি ও এটিএন বাংলার আয়োজনে নিপীড়নবিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অতিথি হিসেবে যোগ দেন পিবিআই প্রধান।

পিবিআই প্রধান বলেন, ‘ইতিমধ্যে তদন্তে নুসরাত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ১৬ জনকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে নয়জনের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। এছাড়া অভিযুক্ত সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিটিউরিটি অ্যাক্ট-এ মামলার পর তার মোবাইল দুটি জব্দ করা হয়েছে।’

গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৭ মার্চ সকাল ১০টার দিকে অধ্যক্ষ তার অফিসের পিয়ন নূরুল আমিনের মাধ্যমে ছাত্রীকে ডেকে নেন। পরীক্ষার আধাঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন অধ্যক্ষ। পরে পরিবারের করা মামলায় গ্রেপ্তার হন সিরাজ উদ দৌলা।

গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। সেখানে মাদ্রাসার এক ছাত্রী তাকে জানান, তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কে বা কারা মারধর করছে। এ কথা শুনে রাফি ওই ভবনের চারতলায় ছুটে যান। সেখানে মুখোশ পরা চার-পাঁচজন ছাত্রী তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। তিনি অস্বীকৃতি জানালে তারা গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে আগুনে ঝলসে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়।

অনুষ্ঠানে বনজ কুমার বলেন, ‘নুসরাত হত্যা তদন্তে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক রয়েছে। তদন্ত প্রক্রিয়া নারীবান্ধব করার লক্ষ্যে রিমা সুলতানা নামে একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তাকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

পিবিআই প্রধান জানান, তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে অনেক নারীকে প্রতারিত করা হয়। নির্যাতনের শিকার বেশিরভাগ নারী মামলা করতে চায় না। যাদের অর্থ ও সাহস আছে তারাই বিচার চায়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। ‘সাহসিকা নুসরাত, তুমিই যুক্তি তুমিই প্রতিবাদ’-এই শ্লোগানে অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতায় ইডেন মহিলা কলেজ ও ঢাকা কলেজ সমান নম্বর পাওয়ায় উভয় দলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। নারী নিপীড়নে তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার নিয়ে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

(ঢাকাটাইমস/০৪মে/জেবি)