‘ফণী’র প্রভাবে ধান তুলতে না পারায় দুশ্চিন্তায় কৃষকরা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৪ মে ২০১৯, ২২:০০

ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে সুনামগঞ্জের ১১টি উপজেলায় গত দুই দিন ধরেই বাতাস সেই সাথে হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি আর ঠান্ডা বাতাসের কারণে জেলা ও উপজেলার সকল স্থরে স্ববিরতা নেমে এসেছে। কর্তব্যবিমুখ হয়ে পড়েছেন হাওরাঞ্চলের হাজার হাজার কৃষান কৃষাণিরা। বিপাকে পড়েছেন কষ্টের ফলানো সোনালী বোরো ধান শুকানো নিয়ে। এখনো পুরুপুরি কাটতে না পারলেও যে পাকা ধানগুলো কেটেছেন কৃষক সেগুলোরও এখন খলায় (ধান শুকানোর স্থানে) বাধ্য হয়ে ত্রিপাল দিয়ে ঢেকে রেখেছেন হাওর পারের খলায়, কীত্তা, আঙ্গিনায় ধানের স্তূপ করে। স্তূপে স্তূপে রাখা ধান তাপ সৃষ্টি হয়ে চারা গজানো শুরু করেছে অনেক স্থানেই। ঝড়ের পূর্বাবাস ও প্রতিকূল আবহাওয়ায় ব্যহত হচ্ছে ধান কাটা।

এদিকে বৃষ্টির পানিতে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্কে আছেন কৃষকরা। ফলে ঘূর্ণিঝড় ফণীর সতর্কতা থাকায় কৃষি জমির ফসল কর্তন করে তা ঘরে তুলতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অনেক কৃষক।

জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার ফতেহপুর গ্রামের কৃষক সাজিদুল ইসলাম জানান, ঘূনী ঝড় ফনীর প্রভাবে বজ্রপাতের ভয়ে ধান কাটতে যাচ্ছে না শ্রমিকরা। আর যে ধান কাটা হয়েছে সেই কাটা ধান মাড়াই ও শুকাতে পারছি না। মাড়াইকৃত ধান শুকাতে না পারাও ত্রিপাল দিয়ে হাওরের উঁচুস্থান,কীত্তা,আঙ্গিনায় মুড়িয়ে রাখা হয়েছে। এভাবে আরো দুয়েকদিন থাকলে মাড়াইকৃত ধানের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার শঙ্কা জানিয়েছেন একাধিক কৃষক।

জেলার তাহিরপুর উপজেলার শনি হাওর পারের সামায়ূন,সবুজ মিয় জানান,গত দু দিন ধরেই বৃষ্টি হচ্ছে। আর বজ্রপাতের কারণে ধান কাটতে যাচ্ছে না শ্রমিক আর ভয়ে নিজেও যাচ্ছি না। যা কেটেছি তাও শুকাতে পারছি না। হাওরে এখনও ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ পাকা ধান রয়ে গেছে।

এদিকে নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল শুক্রবার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে থেকে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হয়। দিনে একবারও দেখা মিলেনি সূর্যের। সূযের্র দেখা না পাওয়ায় মাড়াইকৃত ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন আমার মত জেলার কৃষকরা। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব এভাবে কয়েকদিন থাকলে আমরা শেষ হয়ে যাব।

সুনামগঞ্জ পাউবোর কর্মকর্তা আবুবক্কর সিদ্দিক ভূঁইয়া জানান, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৪.৪৬ মিটার। যা বিপদ সীমার দুই মিটার নিচে রয়েছে। এছাড়াও জেলার তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, বিশ্বম্ভরপুর, ছাতক, দোয়রা বাজার, দিরাই, শাল্লা, জগন্নাথপুরসহ ১১টি উপজেলার বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও জেলার সকল বাঁধ ভাল আছে। বাঁধ রক্ষায় সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকতাদের সর্তক দৃষ্টি থাকার জন্য বলা হয়েছে।

সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের উপ-পরিচালক বশির আহমদ সরকার বলেন, জেলার ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টিপাত হওয়ায় মাড়াইকৃত ধান শুকাতে পারছেন না কৃষকরা। টানা বৃষ্টিতে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা দ্রুত ধান কাটার জন্যে কৃষকদের নোটিশ দেয়া হয়েছে। জেলায় বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ২ লক্ষ ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে আবাদ জমির প্রায় ৯০ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। কয়েকটি উপজেলায় এখনও ধান কাটা বাকি রয়ে গেছে।

(ঢাকাটাইমস/৪মে/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :