হাওরে রোদের ঝিলিক, কৃষকের মুখে হাসি

প্রকাশ | ০৫ মে ২০১৯, ১৮:১৪

আমিনুল ইসলাম, তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ)

‘আউজগা অইল বৈশাইগ্যা রইদ এইলা রইদ আর দুই তিন দিন থাকলে ধানের খলা পরিষ্কার হইয়্যা যাইতো।’ কথাগুলো বলছিলেন, তাহিরপুর উপজেলার শনির হাওরপারের কৃষক রুহুল আমিন।

রুহুল আমিনের পাশের ধানের খলায় ধান শুকানোয় কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক মঈনুল হক। তিনিও আক্ষেপ করে বলেন, ‘বৈশাখ মাসে ধান ভাল করেই কাটছি কিন্তু রোদের লাইগ্যা ধান শুকাতে পারি নাই। আইজগ্যার রইদে পোলাপাইন লইয়্যা ধান শুকানোর কাজে লাগছি দেখি আল্লায় কি করেন।’
ফণীর প্রভাবে গত পাঁচ দিন বৈরী আবহাওয়া থাকায়  রবিবার প্রখর রোদ ওঠায় হাওরপারের কৃষকরা ধান শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এ বছর বৈশাখ মাসের শুরু থেকেই ভালো আবহাওয়া থাকায় কৃষকরা ধান কেটে মারাইকাজ শেষে দ্রুত গোলায় উঠিয়েছেন। কিন্তু গত পাঁচ দিন বৈরী আবহাওয়া ও বৃষ্টির কারণে কৃষক তাদের জমির কাটা ধান মারাই খলাতেই রেখেছিল। বৃষ্টির কারণে জমি থেকে ধান পরিবহন করার রাস্তাঘাট ছিল পরিবহনের অযোগ্য। অনেক কষ্ট স্বীকার করে জমি থেকে কাটা ধান তারা ধানের খলায় নিয়ে আসছেন। পাশাপাশি যেসব ধান মারাই করা হয়েছে, সেগুলো শুকানোর অভাবে খলাতেই রয়ে গেছে। সব মিলিয়ে আজ যেন তারা উৎসবে আনন্দে ধান শুকানোর কাজে ব্যস্ত।

উপজেলার উজান তাহিরপুর গ্রামের কৃষক তাহিরপুর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘আমি দুই হাল জমির পুরো ধানই মারাই করে খলায় নিয়ে গত পাঁচ দিন ধরে বসেছিলাম। আজকের রোদে আশা করি, পুরো ধানই গোলায় উঠে যাবে।’

মারালা গ্রামের কৃষক মিয়া হোসেন বলেন, ‘পাঁচ দিন পরে রুদ্র ওঠায় হাওরে কৃষকের মুখে হাসি ফুটছে এ যেন রোদ নয়- আল্লাহর নিয়ামত। কৃষকরা ভিন্ন আমেজে ধান শুকাচ্ছে আর আনন্দ করছে।’

তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুছ ছালাম বলেন, ‘বৈশাখ মাস প্রায় পুরোটাই ভালো আবহাওয়ায় কেটেছে। গত পাঁচ দিনের বৈরী আবহাওয়ায় হাওরের কৃষক অনেকটাই ঝিমিয়ে পরেছিল। এখন থেকে দু’চার দিন রোদ থাকলে কৃষকের ধান নিশ্চিন্তে গোলায় তুলতে পারবে।’

(ঢাকাটাইমস/৫মে/এলএ)