নেতিবাচক গণমাধ্যম আতঙ্কে রাখছে মানুষকে

হাসান সাইদুল
 | প্রকাশিত : ০৬ মে ২০১৯, ২২:৩৭

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশারদ ও গণমাধ্যমের পর্যবেক্ষক ইমতিয়াজ আহমেদের মতে, আমাদের গণমাধ্যমের আধেয়গুলো বেশি নেতিবাচক। আর এতে নিজ দেশ সম্পর্কে জনগণের মধ্যে বিরূপ ধারণা জন্ম নিচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এই অধ্যাপক এবং সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক মনে করেন, বাংলাদেশ যে উন্নতির দিকে যাচ্ছে, সেটা মানুষের মননে নেই অতি নেতিবাচকতার কারণে।

সাপ্তাহিক এই সময়কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের সংস্কৃতি, বর্তমান প্রজন্ম ও বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের অগ্রগতির নানা বিষয়সহ সমকালীন বিভিন্ন প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হাসান সাইদুল

আমাদের সংস্কৃতিতে বাংলা নববর্ষ একটি উল্লেখযোগ্য দিন দিনের অনেক বিষয়ই এখন আমরা হারাতে বসেছি, বিশেষ করে বিদেশি সংস্কৃতির অনুকরণে বিষয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী?

আসলে বিদেশি আগ্রাসন কিছুদিন আগে কিছুটা ছিল। এখন মোটামুটি ভালোর দিকে যাচ্ছে। পয়লা বৈশাখের কথা যদি বলি। একটা সময় পান্তা আর মরিচ খাওয়ার একটা রীতি চালু ছিল। পরে ইলিশ যুক্ত হলো। এখন আবার ইলিশ-পান্তার সঙ্গে বিভিন্ন রকম ভর্তা যুক্ত হয়েছে। এটা কিন্তু আমাদের আদি সংস্কৃতির একটি অংশ বটে।

এখন দেখবেন ফাস্টফুড বা বিভিন্ন খাবার হোটেলে খাবারের শুরুতে ভর্তা কিংবা শাক সবজি আগে দেওয়ার চেষ্টা করে। পোশাকের ক্ষেত্রেও আগের চেয়ে আমরা অনেক সচেতন। সে অনুযায়ী বলব সংস্কৃতির বিষয়ে আমরা কিছুটা সচেতন হতে চলছি এবং এটি অব্যাহত থাকবে বলে আমার বিশ্বাস।

বর্তমান প্রজন্মের শৈশবের সঙ্গে আপনার শৈশবের কতটা পার্থক্য দেখতে পাচ্ছেন?

পার্থক্য তো আছেই। এ প্রজন্মকে তৃতীয় প্রজন্ম বলা হয়। এ প্রজন্মের মধ্যে প্রতিবাদের একটি আলো দেখতে পাচ্ছি। বিশেষ করে তারা ‘না’ কে ‘না’ এবং ‘হ্যাঁ’ কে ‘হ্যাঁ’ বলতে পারছে। এ বিষয়টি আমরা গত বছরের আগস্ট মাসেই দেখতে পেয়েছি সড়ক দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে আন্দোলনে তারা নেমেছিল তাতেই বোঝা যায় তারা তাদের উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত।

আমাদের সময় আমরাও প্রতিবাদী ছিলাম। সত্যকে সত্য বলার সাহস ছিল। তবে এ প্রজন্ম আমাদের থেকে অনেকটাই আপডেট বলে মনে করি।

তারপরও তো দেখা যায় প্রজন্ম বেকারত্বে ভোগছে নেশায় আসক্ত হচ্ছে বিষয়ে কি বলবেন?

আসলে এটা তো প্রজন্মের দোষ নয়। তারা তো তাদের মতো করে চেষ্টা করে যাচ্ছে। লেখাপড়া করছে, উত্তীর্ণ হচ্ছে কিন্তু চাকরির ক্ষেত্রটি তো তাদের হাতে নেই। সে জন্য সরকারকে আরও চিন্তা করতে হবে। তাছাড়া চাকরির আশায় বসে থাকলেও চলবে না। নিজেরাও কিছু করতে পারে। অনেকে করছেও।

আর বেকারত্ব ও নেশায় আসক্তির বিষয়টি নতুন কিছু নয়। সব দেশে এবং সব সরকারের আমলে এমন হয়ে থাকে এবং সামনেও তা হবে। সব কিছুকে মোকাবেলা করেই সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কতটা বিরাজ করছে বলে মনে করেন?

আমরা যে চেতনার কথা বলি, সেটা কিন্তু এখনও বড় আকারে মানুষের মনে রয়ে গেছে। এটা হলো, বাংলাদেশের ভালো চাওয়া। এখানে বিতর্কটা হলো, আমি কীভাবে বাংলাদেশের ভালো চাচ্ছি? মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে তো এমন হওয়া উচিত নয়Ñ ওই ব্যক্তিদেরই স্মরণ করতে হবে। ইতিমধ্যে তাদের অনেকেই হয়তো অন্য রাজনীতির মধ্যে চলে গেছেন বা বিচ্যুত হয়েছেন। আমি বাংলাদেশে বড় ধরনের উন্নয়ন চাচ্ছি, যেখানে জনগণের ক্ষমতায়ন হবেÑ এ চেতনা যদি তরুণ প্রজন্মের মন-মননে থাকে, তাহলে তারা এটাকে ধরে রাখতে পারবে।

বাংলাদেশে এখনও শতভাগ মানুষ শিক্ষিত নয়। আমাদের চেতনার মধ্যে বড় একটা বিষয় থাকা উচিত জনসংখ্যার শতভাগ শিক্ষিত করা। যদি শতভাগ শিক্ষিত করতে পারি, তাহলে একাত্তরের বড় একটা চেতনা পূরণ হবে। আর যদি তা না করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে রাজনীতিকরণের মধ্যে আবদ্ধ থাকি, তাহলে বেশিদূর অগ্রসর হওয়া যাবে না।

আমাদের দেশে যে উন্নয়ন হচ্ছে তা পরিবেশবান্ধব বলে মনে করছেন?

এটি নিতান্তই ভাবার বিষয়। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, পৃথিবীতে যে দেশগুলো উন্নত সে দেশগুলোই পরিবেশ দূষণের জন্য বেশিরভাগ দায়ী। আমাদের দেশে বিশেষ করে রাজধানী ঢাকাকে বাসের অযোগ্য বলা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোতে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে আরও ভয়াবহ অবস্থা। তবে আমি এটা বলব যে, আমাদের দেশে যে গঠন প্রণালিতে উন্নয়ন হচ্ছে সেটা পরিবর্তন করা দরকার। পুরোনো গঠন প্রণালিতে উন্নয়ন করলে বর্তমানের সঙ্গে খাপখাইয়ে চলা মুশকিল। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো থেকে আমাদের শিক্ষা নিয়ে আরও সচেতন হওয়ার দরকার। বিশেষ করে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে সার্বিক সচেতনতা দরকার। এ দিক থেকে আমরা অনেকটা পিছিয়ে আছি এবং এ পিছিয়ে থাকা যদি ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকে তবে এটা আমাদের জন্য ভয়াবহ বিপদ বলে আমি মনে করি।

আমরা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে কতটা সক্ষম?

আমরা সত্যিই অগ্রসর হচ্ছি। আমাদের দেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলা হতো। আমরা কখনো ভাবতে পারিনি আমরা স্বাধীন হবো। আমরা ভাবতেও পারিনি যে, আমাদের দেশ হবে পোশাকশিল্পে বিশ্বের অন্যতম। সার্বিকভাবে আমরা উন্নয়নের দিকে যাচ্ছি, তবে আমরা এ অগ্রসর হতে গিয়ে কিছু কিছু ক্ষেত্রে পিছিয়ে যাচ্ছি। বিশেষ করে আমরা এখনও একটি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ একটি শহর তৈরি করতে পারিনি। অতিরিক্ত নগরায়নে আমরা খেলার মাঠ পাচ্ছি না। সড়কে আমরা সুষ্ঠুভাবে চলাচল করতে পারছি না। তবে আমরা একটা ধারাবাহিকতায় আসছি। সামনে সুদিন রয়েছে।

আমাদের বেঁচে থাকার জন্য তো শিক্ষা, খাদ্য চিকিৎসা অন্যতম মৌলিক অধিকার সত্যিকার অর্থে আমরা অধিকার কতটা স্বচ্ছভাবে তা উপভোগ করতে পারছি?

এটা সত্য কথা যে, আমাদের গণমাধ্যম বেশিরভাগই নেতিবাচক সংবাদ করে। এটা আসলে দোষের নয়। তবে এটা মানুষকে সচেতনের চেয়ে আতঙ্কে রাখে বেশি। নেতিবাচক সংবাদ প্রচারের প্রভাব রাষ্ট্রে কতটা বিস্তার করছে তা বলার অবকাশ রাখে না। একটা সময় এটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। শিক্ষা, খাদ্য ও চিকিৎসা আমাদের মৌলিক অধিকার বটে। চিকিৎসা ও খাদ্যের বিষয়ে কিছুদিন আগেও মানুষ অনেক আতঙ্কে ছিল। এখন কিছুটা কমেছে। শিক্ষাক্ষেত্রে এখনও সচেতনতার অভাব রয়েছে। তবে আমাদের দেশটা কিন্তু ছোট নয়। পৃথিবীর সপ্তম দেশ হিসেবে আমরা যে টিকে আছি এটাই আমার কাছে রহস্য মনে হয়।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে আনুপাতিক হারে আমরা কতটা ভালো আছি?

আসলে আমাদের দেশের নেতিবাচক বিষয়টি বেশি প্রকাশ হয়। একটা বিষয় লক্ষ্য করবেন, এক জরিপে দেখা গেছে বিশ্বের ৩০টি দূষিত শহরের মধ্যে আমাদের প্রতিবেশী ভারতেই ২২টির নাম রয়েছে। সে হিসেবে আমাদের অবস্থান কোথায়? অথচ এ বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমে অনেক মাতামাতি। আবার দেখবেন আমেরিকাতে প্রতি দেড় মাসে একটি স্কুলে সন্ত্রাসী হামলা হয়। আমাদের দেশে কিন্তু তা ভাবাও যাবে না। তবে সে হিসেবে আমরা অনেক ভালো আছি।

কিন্তু সন্ত্রাসবাদ তো ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে, ধর্ষণ এবং নেশা আসক্তির হার নিয়েও উদ্বেগ আছে

এটা সব সময় বাড়বে আবার কমবে। সামাজিক অস্থিরতা আগের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে তবে এটি শিথিলের দিকেই যাচ্ছে। সন্ত্রাসবাদের ক্ষেত্রে আমরা অন্যান্য দেশ থেকে অনেক ভালো আছি। সন্ত্রাসবাদের দিক থেকে ভারতের অবস্থান ৭ আর আমেরিকার অবস্থান ২০ নম্বরে আছে। সে অনুযায়ী আমাদের অবস্থান কিন্তু ২৫। তবে ক্রমশ আমরা আরও ভালো অবস্থানে যাব বলে আমার বিশ্বাস।

সম্প্রতি সময়ের বিভিন্ন কর্মকা- থেকে বুঝা যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা, নেপাল মালদ্বীপে ভারতের প্রভাব আগের তুলনায় কমেছে এর কারণ কী হতে পারে বলে মনে করেন?

ভারতের চিন্তায় প্রতিবেশী দুই দেশের ভিন্ন মডেল রয়েছে বলে মনে হয়। একটি পাকিস্তান ও অন্যটি ভুটান। প্রতিবেশী দেশগুলোকে তারা এভাবেই দেখতে চায়। ভারতকে এটা বুঝতে হবে যে, প্রতিবেশীদের এভাবে দেখা যায় না। বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। তবে ভারতের ভাবা উচিত বাংলাদেশ পাকিস্তান নয়। ভুটানের অনেক কিছু যেভাবে ভারত নিয়ন্ত্রণ করে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তা করা সম্ভব নয়। নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় এসব করতে গিয়ে ভারত তার অবস্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। সেসব দেশে ভারত-বিরোধিতা বেড়েছে। রাজনীতিতেও পরিবর্তন এসেছে। বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা বা নেপালের ক্ষেত্রে এখন দেখবেন যে, সেখানকার রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে একধরনের মতৈক্য হয়েছে। ভারত নিজে চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখবে কিন্তু প্রতিবেশী দেশগুলোকে তা করতে দেবে নাÑ এমন নীতি পরিপক্বতার লক্ষণ নয়।

চীনের সঙ্গে আমাদের দেশের সম্পর্ক শুধুই অর্থনৈতিক নয় সামরিক ক্ষেত্রেও দেশটির সঙ্গে আমাদের সহযোগিতার বিষয়টি দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসছে

বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। কোনো দেশ যখন অস্ত্র কেনে তখন স্বাভাবিকভাবেই সে নিকট প্রতিবেশী দেশের চেয়ে আলাদা ও ভিন্ন ধরনের অস্ত্র কিনতে চায়। এটা ভারতের না বোঝার কোনো কারণ নেই। বিশ্বের সব দেশ তা-ই করে। আপনি এর আগে চীন থেকে সাবমেরিন কেনার কথা বলেছেন। ভারতের বোঝা উচিত যে, এখন বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা নির্ধারিত হয়েছে। এই সমুদ্রসীমা পাহারার প্রয়োজন রয়েছে। জলদস্যুদের তৎপরতা ও অবৈধভাবে মাছ ধরা ঠেকানোর বিষয়টি খুবই জরুরি। এসব ঠেকাতে আমাদের নৌবাহিনীর জন্য জাহাজ কেনার চেয়ে সাবমেরিন কেনা অনেক সাশ্রয়ী উদ্যোগ। ভারত পারমাণবিক শক্তিধর একটি দেশ, শক্তিশালী নৌবাহিনী রয়েছে তাদের। এখন বাংলাদেশ চীন থেকে অস্ত্র কিনলে বা দুটি সাবমেরিন কিনলে ভারত যদি তা মেনে নিতে না পারে, তাহলে তো বিপদ।

আপনি সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন সম্পর্কে বলুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেহেতু ’৭১ সালে গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে, কর্তৃপক্ষ মনে করল এ নিয়ে গবেষণা ও চর্চা হওয়া দরকার। সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ এভাবেই গড়ে উঠেছে। এটা ফ্যাকাল্টি অব সোশ্যাল সায়েন্সের অধীনস্থ একটি ডিপ্লোমা কোর্স।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সাক্ষাৎকার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

সাক্ষাৎকার এর সর্বশেষ

প্রতি মুহূর্তেই মনে হচ্ছিল আর্মিরা ধরে নিয়ে যাবে: ফরিদা খানম সাকি

দাম বাড়ালে এতক্ষণে কার্যকর হয়ে যেত: ক্যাব সহ-সভাপতি নাজের হোসাইন

জন্ম থেকেই নারীদের যুদ্ধ শুরু হয়: নারী উদ্যোক্তা ফরিদা আশা

নারীরা এখন আর পিছিয়ে নেই

ভবন নির্মাণে সিটি করপোরেশনের ছাড়পত্র নেওয়ার নিয়ম করা উচিত: কাউন্সিলর আবুল বাশার

তদারকি সংস্থা এবং ভবন নির্মাতাদের দায়িত্বশীল হতে হবে: অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান

বেইলি রোডের আগুনে রাজউকের ঘাটতি রয়েছে: মো. আশরাফুল ইসলাম

নতুন করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে ভবন অনুমোদন দিতে হবে: ইকবাল হাবিব

বীমা খাতে আস্থা ফেরাতে কাজ করছি: আইডিআরএ চেয়ারম্যান জয়নুল বারী

ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে কিছু জঙ্গি সংগঠন মাথাচাড়া দিতে চায়

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :